বগুড়ায় স্বর্ণের দোকানে ডাকাতি: গুলি করে স্বর্ণালংকার লুট

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

বগুড়ায় একটি স্বর্ণের দোকানে দুর্ধর্ষ ডাকাতি হয়েছে। এ সময় মুখোশধারী ডাকাতরা দোকান মালিককে গুলি করে ৬০০ ভরি স্বর্ণালংকার নিয়ে পালিয়ে যায়।

আর যাবার সময় তারা মুহুমুহু বোমা ফাটিয়ে পুরো এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করে। আজ শনিবার সন্ধ্যায় শহরের ব্যস্ততম নিউমার্কেট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এদিকে ডাকাতির সময় পুলিশ কিংবা আশেপাশের মানুষ কেউই সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেনি।

 

হামলা হওয়া আল-হাসান জুয়েলার্স শহরের মেরিনা রোডে এম এ খান লেনে গোল্ডেন মার্কেটে অবস্থিত। নীচতলার এই দোকানটি মার্কেটের সম্মুখ ভাগের বেশির ভাগ অংশ জুড়ে রয়েছে। এই দোকানের একপাশে নিউমার্কেট, পেছনে সদর থানা আর সামনে একই দূরত্বে সদর পুলিশ ফাঁড়ির অবস্থান। প্রাণকেন্দ্রে সাতমাথার দূরত্বও এই দোকান থেকে মাত্র ৩০০ গজ দূরে।

 

এ বিষয়ে আল-হাসান জুয়েলার্সের ম্যানেজার শফিকুল ইসলাম জানান, সন্ধ্যার পর বেচা-কেনা কম থাকায় তারা স্বর্ণালংকারগুলো গোছগাছ করছিলেন। ঘটনার মাত্র ১৫ মিনিট আগে এক যুবক তাদের দোকানে আসে আংটি কেনার জন্য। শার্ট প্যান্ট পরিহিত এই যুবকের বয়স ২২/২৩ বছরের মধ্যে। সম্ভবত এই যুবকটিই আশেপাশের পরিবেশ ও দোকানের পরিস্থিতি চেক করে যায়। সে চলে যাবার পর মাত্র ১৫ মিনিটের মধ্যেই আগ্নেয়াস্ত্র হাতে একই বয়সের আরো ৬/৭ জন যুবক দোকানে প্রবেশ করে। তারা ঢুকেই মুখোশ পড়ে নেয়। এরপর দোকান মালিক গুলজার রহমানের পায়ে গুলি করে। এ সময় দোকানের অন্য তিনজন কর্মচারিকে বাহিরে বের করে দেওয়া হয়। সেখানে তাদের অন্য একটি গ্রুপ তাদের পাহারা দিয়ে রাখে।

 

গুলিবদ্ধি দোকান মালিক গুলজার রহমান জানান, তার পায়ে গুলি করার পর ডাকাতরা সিন্দুক খুলে দিতে নির্দেশ দেয়। এ সময় তারা দোকানের গ্লাস ভাঙচুর করে শোকেসে সাজিয়ে রাখা মালামাল একটি বস্তায় ভরতে থাকে। তিনি সিন্দুক খুলে দিলে ৬০০ ভরি স্বর্ণালংকার একই বস্তায় ভরে ফেলা হয়। মাত্র ১৫ মিনিটের মধ্যে তারা স্বর্ণালংকার নেয়ার পর দোকানে রক্ষিত সিসি টিভির ফুটেজের হার্ডডিস্ক খুলে নিয়ে যায়।

এদিকে ডাকাতি চলাকালে তাদের আরো দুইটি দল দুই ভাবে বিভক্ত হয়ে গালাপট্টি রোডে ও টেম্পল রোডে অবস্থান নেয়। গালাপাট্টি রোডের অবস্থানকারীরা একের পর এক হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। বিকট শব্দে পুরো সাতমাথা এলাকা প্রকম্পিত হতে থাকে। মুহুর্তেই বন্ধ হয়ে যায় দোকানপাট। সাধারণ মানুষ ভয়ে দৌড়াদৌড়ি শুরু করে দেয়। মাত্র ৫ মিনিটের মধ্যে শহর ফাঁকা হয়ে যায়। বোমার স্পিন্টারের আঘাতে আহত হয় জাকির হোসেন ও আনোয়ার আলী নামের আরো দুই পথচারি।

 

অপরদিকে ডাকাতদের অন্য গ্রুপ আগে থেকেই টেম্পল রোডে একটি হাইচ মাইক্রোবাস নিয়ে তৈরি ছিলো। বস্তায় ভরা স্বর্ণালংকার নিয়ে তারা গাড়িতে উঠলে মুহুর্তেই সেটি ধরা ছোঁয়ার বাইরে চলে যায়।

 

এ ব্যাপারে বগুড়া সদর থানার ওসি এমদাদ হোসেন দাবি করেন, ঘটনার পরপরই বগুড়া শাজাহানপুর এলাকার নয়মাইল বাজার থেকে ডাকাতি করে পালানোর সময় মাইক্রোবাসটি আটক করা হয়। শাজাহানপুর থানা পুলিশ মহাসড়কে বেরিকেট দিয়ে সেটি আটক করলেও মাত্র একজন ছাড়া বাকিদের ধরা যায়নি।

 

তিনি দাবি করেন, ডাকাতি হওয়া মালামাল উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। তবে এ ব্যাপারে বিস্তারিত আর কোন তথ্য তিনি জানাতে পারেননি।

সূথ্র: কালের কণ্ঠ