বগুড়ায় যৌতুক না দিতে পারায় গৃহবধূকে বিষ খাইয়ে হত্যা, ননদ আটক

বগুড়ার সদর উপজেলার গোকুল পলাশবাড়ী গ্রামে যৌতুক না পেয়ে আনজিলা আক্তার (১৯) নামের এক গৃহবধূকে স্বামী ও তার পরিবার নির্যাতন করে বিষাক্ত পদার্থ খাইয়ে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় নিহতের বাবা হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ ওই ঘটনায় গৃহবধূর ননদকে আটক করেছে।

এলাকাবাসীরা জানান, শিবগঞ্জ উপজেলার রায়নগর ইউনিয়নের গড়-মহাস্থান পূর্বপাড়া গ্রামের আজমল হোসেনের মেয়ের সঙ্গে এক বছর পূর্বে বগুড়া সদরের গোকুল ইউনিয়নের পলাশবাড়ী মোন্নাপাড়া গ্রামের মজিবুর রহমানের ছেলে জিন্নাহ’র সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়েতে যৌতুক দেওয়ার কথা না থাকলেও বিয়ের পর থেকেই জিন্নাহ ও তার পরিবারের লোকজন আনজিলকে বাবার বাড়ি থেকে যৌতুক এনে দিতে চাপ দিতে থাকে। মেয়ের সুখ শান্তির কথা চিন্তা করে মহাস্থানহাটে ভ্রাম্যমাণ পানের দোকানি আজমল হোসেন বেশ কিছু টাকা যৌতুক দেন।

সম্প্রতি আবারও মটরসাইকেল কেনার জন্য ৫০ হাজার টাকা যৌতুক দাবি করে আনজিলার ওপর অমানুষিক নির্যাতন করে জিন্নাহ ও তার পরিবার। যৌতুকের টাকা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় আনজিলাকে গত ১০দিন পূর্বে অমানুষিক নির্যাতন করে বিষাক্ত পদার্থ খাওয়ানো হয়।

অসুস্থ্য হয়ে পড়লে জিন্নাহর পরিবার গভীর রাতে আনজিলার বাবাকে ফোনে বলে, আপনার মেয়ে অসুস্থ্য দেখতে হলে চলে আসেন। তখন আজমল হোসেন মনে করেন বরাবারের মতোই যৌতুকের জন্য ডাকছেন। রাতে বিষয়টি তিনি আমলে না নিয়ে সকালে যাবেন বলে মোবাইল ফোনে জানান। পরের দিন সকালে আজমল হোসেন, তার পরিবারের লোকজন নিয়ে সেখানে গেলে মেয়ের জামাই জিন্নাহসহ তার পরিবারের লোকজন মেয়েকে বন সই দিয়ে নিয়ে যেতে বলেন।

একপর্যায়ে আনজিলার অবস্থা গুরুতর দেখে জিন্নাহর পরিবার মৃত্যুর দায়ভার এড়াতে দ্রুত সেখান থেকে বিদায় করে দেয়। পরে আজমল হোসেন অসুস্থ্য মেয়েকে বাড়িতে নিয়ে এসে তার কাছে ঘটনার বিস্তারিত শুনে দ্রুত বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে দেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার রাতে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় তার বাবা বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার মামলা দায়ের করেন। মামলার পর জিন্নাহর বোন মর্জিনা বেগমকে (৩৫) পুলিশ আটক করেছে।

বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ূন কবির জানান, এ ঘটনায় তার বাবা বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন। আগে একটা জিডিও করা হয়। অভিযুক্ত এক জনকে আটক করা হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।