বগুড়ায় বালু উত্তোলনে বাধা দেয়ায় প্রাণ গেল রিকশাচালকের

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

বগুড়ার পল্লীতে নদী থেকে বালু উত্তোলনে বাধা দেয়ায় ‘বালু দস্যুদের’ লাঠি ও রডের আঘাতে মোখলেসুর রহমান (৬৫) নামে এক রিকশাচালকের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় আহত হয়েছে অন্তত ১০ জন।

বৃহস্পতিবার সকালে সদর উপজেলার তেলিহারা উত্তরপাড়ায় দুদফা হামলায় আহত কয়েকজনকে শহরতলির ঠেঙ্গামারা এলাকায় রফাতউল্লাহ কমিউনিটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

আহতদের কয়েকজন হলেন বগুড়া সদরের তেলিহারা উত্তরপাড়ার মোগলার ছেলে আবদুর রহমান, জাহিদুলের ছেলে সাবলু মিয়া, ধলুর ছেলে শাহাদত, মোসলেমের ছেলে পরাণ, হাসানের ছেলে নিখিল, নিহত মোখলেসের ছেলে খোকন, মৃত হাফিজারের ছেলে জাকের ও মঞ্জুর ছেলে শামীম। এদের মধ্যে আবদুর রহমান, সাবলু ও শাহাদতকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।

বগুড়া সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কামরুজ্জামান মিয়া ও অন্যরা জানান, সম্প্রতি শেখেরকোলা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে তেলিহারা উত্তরপাড়া গ্রামে করতোয়া নদীতে একটি সেতু নির্মাণের প্রকল্প নেয়া হয়। পরিষদের ৫নং ওয়ার্ডের সদস্য ও ঠিকাদার এমদাদুল সরকার সেতু নির্মাণের জন্য নদী থেকে বালু উত্তোলন করছিলেন। পরবর্তীতে তিনি বালু ট্রাকে তুলে অন্যত্র বিক্রি শুরু করেন। অবাধে ট্রাক চলাচল করায় গ্রামের রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিল।

তেলিহারা উত্তরপাড়ার মৃত লাল শাহের ছেলে মোখলেসুর রহমান ও অনেকে বিরোধিতা এর করেন। একপর্যায়ে তারা ট্রাক চলাচল বন্ধের জন্য রাস্তার মধ্যে বাঁশের খুঁটি পুঁতে রাখেন। এতে ইউপি সদস্য ও ঠিকাদার এমদাদুল সরকার ক্ষিপ্ত হয়ে রাস্তায় খুঁটি দেওয়ার সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করেন।

বৃহস্পতিবার সকাল ৭টার দিকে এমদাদুল তার বাহিনী নিয়ে তেলিহারা উত্তরপাড়া গ্রামে গিয়ে মারপিট শুরু করেন। এতে ৩-৪ জন আহত হন। স্বজনরা তাদের শহরতলির ঠেঙ্গামারা এলাকায় রফাতউল্লাহ কমিউনিটি হাসপাতালে ভর্তি করেন।

এদিকে সকাল ৯টার দিকে মোখলেসুর রহমান ও তার লোকজন হাসপাতালে ভর্তিদের চিকিৎসার খরচ দিতে যাচ্ছিলেন। তারা এমদাদুলের বাড়ির কাছে পৌঁছলে তাদের ওপর আবারও হামলা চালানো হয়। রড ও লাঠির আঘাতে মোখলেসুরসহ ৬-৭ জন আহত হন। এদের একই হাসপাতালে ভর্তি করলে বেলা ১১টার দিকে মোখলেসুর মারা যান।

ওই পুলিশ কর্মকর্তা আরও জানান, নিহতের লাশ বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

অভিযুক্ত ইউপি সদস্য এমদাদুল সরকার বাড়িতে তালা দিয়ে স্বজনদের নিয়ে পালিয়ে যাওয়ায় ও ফোন বন্ধ রাখায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

শেখেরকোলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যানে প্রভাষক কামরুল হাসান ডালিম জানান, এমদাদুল সেতু নির্মাণের জন্য নদী থেকে বালু উত্তোলন করছিল। কিন্তু গ্রামের লোকজন ভুল বুঝে রাস্তায় খুঁটি দেন। আর এ নিয়ে বিরোধেই এ হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।