বগুড়ায় করোনাভাইরাসে এক মাসে ৫৪ জনের মৃত্যু, মোট আক্রান্ত ৬২৬২

বগুড়ায় করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯ এ) সংক্রমিত হয়ে এক মাসে ৫৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এখন পর্যন্ত বগুড়া জেলায় কোভিডে মৃত মানুষের সংখ্যা ১৪৫। আর করোনা শনাক্ত হওয়া ব্যক্তির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ২৬২। জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।

জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ জানায়, গত এক মাসে জেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ৮১২ জন। এ সময়ের মধ্যে করোনায় মৃত্যু হয়েছে ৫৪ জনের। গত শুক্রবার এক দিনেই করোনায় আক্রান্ত হয়ে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। গত আট দিনে করোনার উপসর্গে মারা গেছেন ১০ জন। জেলার তিন হাসপাতালে বাড়ছে করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাও। গতকাল রোববার জেলার তিন হাসপাতালে ২১৮ জন করোনা রোগী চিকিৎসাধীন ছিলেন। জুলাই মাসের শেষ দিকে এই সংখ্যা ছিল ১০০ জনের কিছু ওপরে।

সিভিল সার্জন কার্যালয় জানায়, জেলায় প্রথম কোভিড রোগী শনাক্ত হয় ১ এপ্রিল। কোভিডে আক্রান্ত হয়ে জেলায় প্রথম ২২ মে মারা যান সরকারি দলের সাবেক সাংসদ কামরুন নাহার পুতুল। এরপর ক্রমের বাড়তে থাকে করোনা রোগী ও মৃত্যুর সংখ্যা। জুন ও জুলাই মাসে করোনায় মারা গেছেন ১০৪ জন। আগস্ট মাসের ২২ দিনে করোনায় মারা যাওয়া রোগীর সংখ্যা ৪৫। আর করোনা উপসর্গ নিয়ে জেলায় মারা গেছেন এখন পর্যন্ত শতাধিক রোগী। কোভিডে মারা যাওয়া রোগীদের মধ্যে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৬০, টিএমএসএস মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৪৭, মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে ৩৪ ও অন্যান্য হাসপাতালে আরও চারজনের মৃত্যু হয়েছে।

শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মুখপাত্র জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ৫০০ শয্যার এই হাসপাতালে ৫০ শয্যাবিশিষ্ট করোনা ইউনিটে বর্তমানে রোগী আছেন ৭২ জন। আগস্টের প্রথম দিকে করোনা ইউনিটে রোগী ভর্তি ছিল ৩০ জন। অন্যদিকে ২২ মে থেকে এ পর্যন্ত করোনায় মোট ৬০ জনের মৃত্যু হয়েছে।

টিএমএসএস মেডিকেল কলেজ ও রফাতুল্লাহ কমিউনিটি হাসপাতালের মুখপাত্র এবং হাসপাতালের সহকারী নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুর রহিম বলেন, তাঁদের ১৫০ শয্যাবিশিষ্ট করোনা ইউনিটে এ পর্যন্ত কোভিড পজিটিভ শনাক্ত ৪৭ জন মারা গেছেন। বর্তমানে ভর্তি রয়েছেন ৯৫ জন। জুলাইয়ের শেষের দিকে হাসপাতালে রোগী ভর্তি ছিলেন ৮৭ জন।

এদিকে করোনা রোগীদের জন্য বিশেষায়িত মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) শফিক আমিন বলেন, ১২৮ শয্যাবিশিষ্ট করোনা ইউনিটে গতকাল পর্যন্ত রোগী ভর্তি রয়েছেন ৫১ জন। জুলাই মাসের শেষ সপ্তাহে এই সংখ্যা ছিল ৩২। এপ্রিল থেকে এ পর্যন্ত এই হাসপাতালে কোভিড-১৯–এ আক্রান্ত সাত শতাধিক রোগীকে ভর্তি করা হয়েছে। এর মধ্যে ৩৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।

বগুড়ার ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, জেলায় করোনার সংক্রমণ প্রায় নিয়ন্ত্রণে এসেছিল। তবে ঈদের কারণে সংক্রমণ সামান্য বেড়েছে। তিনি আরও বলেন, অক্সিজেন সরবরাহসহ কোভিড চিকিৎসার সুবিধা বাড়ার কারণে হাসপাতালে রোগী বেড়েছে। আশপাশের বিভিন্ন জেলা থেকে করোনায় আক্রান্ত মুমূর্ষু রোগীদের বগুড়ায় বেশি করে রেফার্ড করা হচ্ছে। ফলে মৃত মানুষের সংখ্যাও বেড়েছে। করোনায় মারা যাওয়া অধিকাংশই বয়স্ক রোগী।

প্রথম আলো