বগুড়ার ধুনটে নদীতে বেড়া দিয়ে মাছ নিধনের অভিযোগ

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

বগুড়ার ধুনট উপজেলায় বাঙালি নদীতে আড়াআড়িভাবে বাঁশ ও জালের বেড়া দিয়ে অবাধে মাছ শিকার করার অভিযোগ উঠেছে। এতে মা-মাছ ও পোনাসহ সব ধরনের মাছ ধরা পড়ছে। এভাবে মাছ ধরায় বিপাকে পড়েছেন সাধারণ জেলেরা।

সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী, নদীজুড়ে এভাবে বেড়া দিয়ে মাছ শিকার অবৈধ। তারপরও প্রায় এক সপ্তাহ ধরে এভাবে মাছ ধরা হলেও প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। নদীতে ছোট ফাঁসের জাল ব্যবহার করায় দেশি মাছের পোনাও ধ্বংস হচ্ছে।

১৯৫০ সালের মৎস্য রক্ষা ও সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী, নদী বা প্রবাহমান স্রোত ধারায় বেড়া বা বাঁধ দিয়ে মাছ শিকার করা দণ্ডনীয় অপরাধ। কিন্তু এই আইন লঙ্ঘন করে প্রতিবছরের ন্যায় এবারও বাঙালি নদীতে অবৈধভাবে বেড়া দিয়ে অবাধে মাছ নিধন করা হচ্ছে। এতে ডিমওয়ালা দেশি জাতের মাছ যেমন নিধন হচ্ছে, তেমনি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে নৌ চলাচল ও পানির প্রবাহ।

আজ রবিবার সরেজমিনে দেখা গেছে, পানি কমে যাওয়ায় বাঙালি নদীর প্রস্থ ছোট হয়ে গেছে। সরু আকারের নদীর বথুয়াবাড়ি সেতুর উত্তর পাশে মাছ শিকারের জন্য নদীর এপাড় থেকে ওপাড় অবধি বাঁশ ও জাল দিয়ে আড়াআড়িভাবে দুটি বেড়া দেওয়া হয়েছে। একটি থেকে অপরটির দূরত্ব প্রায় ৪০০ ফুট। বেড়ার সঙ্গে ছোট ফাঁসওয়ালা জাল পানির ওপর থেকে শুরু করে মাটি পর্যন্ত ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে।

এ ছাড়াও নদীর বুকে বেড়ার মাঝখানে তিনটি ডিঙ্গি নৌকা দিয়ে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ শিকার করছে উপজেলার পেঁচিবাড়ি গ্রামের নিখিল চন্দ্র হাওয়ালদারের নেতৃত্বে ১৮ জন জেলে। এদিকে নদীতে বেড়া দিলেও নৌযান চলাচলের জন্য কোনো জায়গা খোলা রাখা হয়নি। এর ফলে নদীপথে নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে।

এ বিষয়ে উপজেলার পেঁচিবাড়ি গ্রামের নিখিল চন্দ্র হাওয়ালদার বলেন, প্রায় ৪০ বছর ধরে এভাবেই নদী থেকে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করি। কিন্ত এভাবে মাছ ধরা সরকারিভাবে নিষিদ্ধের বিষয়টি জানা নেই। এ কারণে প্রশাসনের নিকট থেকে অনুমতি নেওয়া হয়নি।

এ প্রসঙ্গে ধুনট উপজেলা সহকারি মৎস্য কর্মকর্তা তহিদুল ইসলাম বলেন, বাঙালি নদীতে বেড়া দিয়ে এভাবে মাছ ধরতে জেলেদের নিষেধ করা হয়েছে। বেড়া অপসারণ না করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ ব্যাপারে ধুনট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাজিয়া সুলতানা বলেন, বাঙালি নদীতে অবৈধভাবে বাঁশ ও জালের বেড়া দিয়ে মাছ ধরার ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।