পৌরবাসীর টানে দেড়মাস ঘর ছাড়া সিংড়ার মেয়র ফেরদৌস

সিংড়া প্রতিনিধি:
চোখের জলে নিরাপদ দূরত্বে থেকে সন্তান কে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানালেন সিংড়ার মেয়র। মঙ্গলবার (১৯ মে) সিংড়া পৌরসভার মেয়র মো. জান্নাতুল ফেরদৗস এর ৬ বছরের ছেলে অরিন ফেরদৌস এর ছিল জন্মদিন। অরিন ফেরদৌস তার মায়ের কাছে জন্মদিনে একটিই উপহার চেয়েছিলেন বাবাকে এনে দাও। কিন্তু বৈশ্বিক করোনাভাইরাস কারণে দেড় মাস ধরে পৌরসভার একটি কক্ষে অবস্থান নিয়ে অসহায় ও কর্মহীন মানুষের সেবা করে যাচ্ছেন মেয়র ফেরদৌস।

মঙ্গলবার ইফতারের পূর্ব মূহুর্তে বাড়ির নিচ থেকেই চোখের জলে শিশু সন্তানকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানান। পরে রাতে ফেইসবুকে শুভেচ্ছা জানানো সেই ছবি ভাইরাল হয়। ফেইসবুকে সিংড়ার মেয়র ফেরদৌসকে একজন মানবিক ও যোগ্য নগর পিতা বলে আখ্যায়িত করেন তার শুভাকাঙ্খিরা।

সিংড়া পৌরসভা সূত্রে জানা যায়, পৌরবাসির খাদ্য ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এর নির্দেশনা ও সহযোগিতায় করোনা যুদ্ধে পৌরবাসীর টানে দীর্ঘ দেড় মাস ধরে বাড়ির বাহিরে অবস্থান করছেন সিংড়ার মেয়র। পৌরবাসীকে ঘরে থাকার জন্য অনুরোধ জানিয়ে পরিবেশবান্ধব ই-রিকশা “চলো” পরিবহন ও দুইটি অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস মাধ্যমে বাড়ি বাড়ি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সামগ্রী ও ঔষধ পৌছে দিচ্ছেন। নিজ কণ্ঠে মাইকিং এর মাধ্যমে জনসচেতনতা সৃষ্টির পাশাপাশি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পৌরসভার অসহায় ও কর্মহীন পরিবারে খাদ্য সামগ্রী পৌছে দিচ্ছেন। রাতে গোপনে মধ্যবিত্তদের দরজায়ও কড়া নাড়ছেন। আর এই দুর্যোগে তার সঙ্গী হয়েছেন স্থানীয় আ’লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগের প্রায় শতাধিক নেতাকর্মী।

মেয়র ফেরদৌস এর সহধর্মিনী আসমাউল হুসনা নিপা মুঠোফোনে এই প্রতিবেদককে বলেন, ছেলে অরিন তার কাছে জন্মদিনে একটাই উপহার চেয়ে ছিলেন। মা একটু বাবাকে এনে দাও। অনেকদিন বাবা’র কোলে উঠি না।

মেয়র জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে একটাই ঔষধ ঘরে থাকা। এই দুর্যোগে পৌর শহরের মানুষকে সচেতন ও মুখে তিন বেলা খাবার তুলে দেয়াই তার মূল লক্ষ। আর এর জন্য তিনি বাড়ি ছেড়ে পৌরসভার একটি কক্ষে অবসস্থান করে অসহায়দের ঘরে ঘরে খাবার পৌছে দিচ্ছেন।