পূর্বধলায় সরকারি জমিতে ভূমিহীনদের জন্য গৃহ নির্মাণে বাধা

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

 

নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলায় সরকারি জমিতে ভূমিহীনদের জন্য গৃহ নির্মাণ প্রকল্পের কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই জমিতে মাটি ভরাট করতে গেলে স্থানীয় চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও হত্যাসহ একাধিক মামলার আসামি ভূমিদস্যু বুলবুল মীর ভূমি অফিসের লোকজনদের প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছেন বলে জানা যায়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগে উপজেলার হোগলা ইউনিয়নের ভূমি ও গৃহহীন ৯ পরিবারের জন্য হোগলা বাজারের পাশে ৮৯০৫নং দাগের সরকারি ৬৪ শতাংশ জমিতে গৃহ নির্মাণের উদ্যোগে নেওয়া হয়। ওই জমিতে ভূমি অফিসের উদ্যোগে মাটি ভরাট করতে গেলে হোগলা বাজারের বাসিন্দা সুরুজ আলী মীরের ছেলে বুলবুল মীর বাধা দেন। এ সময় ভূমি অফিসের লোকজনকে তিনি দেখে নেওয়ারও হুমকি দেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ওই জায়গাটি অবৈধভাবে দখল করে রেখেছেন।

হোগলা ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা আব্দুল মজিদ জানান, গৃহ নির্মাণ প্রকল্পের জন্য নির্ধারিত ৬৪ শতাংশ জমি ১নং খাস খতিয়ানের অন্তর্ভুক্ত। ১৯৫০ সালে সূর্যকান্ত আচার্য্য ও শশীকান্ত আচার্যের কাছ থেকে প্রজাস্বত্ব আইনমূলে জমিটির মালিকানা সরকারের কাছে আসে। পরবর্তীতে জমিটি ময়মনসিংহ কালেক্টরেট পূর্ব পাকিস্থানের নামে ও বিআরএস রেকর্ডে ১৭২২৫ দাগে ৩০ শতক ও ১৭২২৬ দাগে ৩৪ শতক সরকারের নামে রেকর্ডভুক্ত হয়।

এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বললে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকে জানান, বুলবুল মীর এলাকায় চিহ্নত সন্ত্রাসী। সে যুবলীগের নেতা পরিচয় দিয়ে এলাকায় নানান অপকর্ম ও স্থানীয়দের হয়রানি করলেও তার বিরুদ্ধে কেউ কথা বলতে সাহস পান না। তার বিরুদ্ধে হত্যাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।

তবে বুলবুল মীরের দাবি, জমিটির মালিকানা নিয়ে ১৮ বছর ধরে আদালতে মামলা চলছে।

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাসরিন বেগম সেতু বলেন, সরকার জমিটির মালিক হওয়া সত্ত্বেও স্থানীয় আদম মীর ও বাদল মীর নামে দুই ব্যক্তি ১৯৭৬ সালে আদালতে মামলা করেন। ১৯৯৮ সালের ৭ অক্টোবর সরকারের পক্ষে রায় আসে। পরবর্তীতে নেত্রকোনা জেলা যুগ্ম জজ আদালতে আপিল করলে আদালত সরকারের পক্ষে দেওয়া নিম্ন আদালতের রায় বহাল রাখেন।

পূর্বধলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে কুলসুম বলেন, জমিটির বৈধ মালিক সরকার। এটি অবৈধভাবে দখল করতে বুলবুল মীর নামের স্থানীয় এক দুস্কৃতিকারী অপকৌশল চালাচ্ছে। আমি আজ প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করেছি। শেখ হাসিনার বিশেষ উদ্যোগ মুজিববর্ষে কেউ গৃহহীন থাকবে না এই প্রতিশ্রুতি পূরণে আমরা বদ্ধ পরিকর। সরকারি কাজে কেউ বাধা দিলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পূর্বধলা থানার ওসি মোহাম্মদ তাওহীদুর রহমান বলেন, থানায় বুলবুল মীরের বিরুদ্ধে হত্যাসহ একাধিক মামলা রয়েছে। সরকারি কাজে বাধা দানের অভিযোগে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা বাদী হয়ে থানায় পৃথক দুইটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

 

সূত্র: কালেরকন্ঠ