পুলিশ পরিচয়ে ছিনতাইয়ে পৌর কাউন্সিলর গ্রেফতার

সিল্কসিটি ‍নিউজ ডেস্ক:

ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ছিনতাইয়ের প্রস্তুতিকালে যশোরের চৌগাছা পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর গোলাম মোস্তফা ওরফে মোস্তফা বিশ্বাসসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। শুক্রবার সাতক্ষীরা জেলার পাটকেলঘাটা থানার বাইগুনি এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

র‌্যাব-৬ এর মুখপাত্র লে. কর্নেল মোশতাক আহমদ জানান, গ্রেফতার ব্যক্তিরা দীর্ঘদিন ডিবি পরিচয়ে গ্রামের সহজ সরল মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছেন। পুলিশ পরিচয়, পোশাক ও অস্ত্র দেখে ভয়ে লোকজন তাদের বিরুদ্ধে কিছু বলতে সাহস পেতেন না।

তিনি জানান, তাদের বিরুদ্ধে এরকম পরিচয়ে প্রতারণার অভিযোগ অনেক আগের। সঠিক তথ্য পেয়ে শুক্রবার রাতে সাতক্ষীরা জেলার পাটকেলঘাটার বাইগুনি গ্রামের হারুন আর রশিদ ডিগ্রি কলেজের দক্ষিণ পাশে অবস্থান নেয় র‌্যাব সদস্যরা। ছিনতাইকারীদের ব্যবহৃত প্রাইভেটকার ও মোটরসাইকেল দেখে র‌্যাব চ্যালেঞ্জ করে। এ সময় সন্তোষজনক উত্তর তারা র‌্যাবকে দিতে পারেনি।

লে. কর্নেল মোশতাক জানান, জিজ্ঞাসাবাদে ডিবি পুলিশের পোশাক ও খেলনা অস্ত্র দেখিয়ে ছিনতাইসহ নানা ধরনের অপরাধ করার কথা স্বীকার করেছেন গ্রেফতারকৃতরা।

র‌্যাব তাদের কাছ থেকে একটি প্রাইভেটকার, একটি মোটরসাইকেল, একটি খেলনা পিস্তল, দুটি পিস্তলের কভার, একটি ওয়াকিটকি, দুটি ডিবি পুলিশের পরিচয়পত্র ও পোশাক, দুটি হ্যান্ডকাপ, দুটি পুলিশ ফিল্ডক্যাপ, একটি পুলিশ বেল্ট, একটি ভুয়া পুলিশের আইডি কার্ড, চারটি মোবাইল ফোন, অস্ত্র রাখার একটি ব্যাগ ও পিস্তল বাধার চেইন উদ্ধার করেছে।

র‌্যাবের এই কর্মকর্তা আরও জানান, সাতক্ষীরায় তাদের একটি বিশাল চক্র রয়েছে। গ্রেফতারের ভয়ে অনেকেই আত্মগোপনে আছেন। এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

এদিকে এলাকাবাসী জানান, চৌগাছা পৌরসভার কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ার পর ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় একাংশের ছত্রছায়ায় নানা অপকর্মে জড়িয়ে পড়েন গোলাম মোস্তফা। চাঁদাবাজি, ছিনতাই, আপস-মীমাংসার নামে বাণিজ্যসহ নানা অভিযোগ রয়েছে তারা বিরুদ্ধে।

তিনি পুলিশ পরিচয়ে ছিনতাইকারী চক্র গড়ে তোলেন। তবে এ বিষয়টি জানাজানি হয়েছে গ্রেফতারের খবর প্রকাশের পর। এ নিয়ে নানা সমালোচনার ঝড় বইছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। যাদের ছত্রছায়ায় এতদিন ছিলেন গোলাম মোস্তফা, তাদের ছবিসহ কেউ কেউ ফেসবুকে প্রকাশ করেছেন।

এ বিষয়ে চৌগাছা থানার ওসি সাইফুল ইসলাম সবুজ বলেন, কাউন্সিলর গোলাম মোস্তফার নামে চৌগাছা থানায় একটি মামলা আছে। ২০১৭ সালে তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির এ মামলা হয়।

চৌগাছা পৌরসভার মেয়র নূর উদ্দীন আল মামুন হিমেল বলেন, ব্যক্তির দায় প্রতিষ্ঠান বহন করে না। গোলাম মোস্তফার অপরাধ ব্যক্তিগত। আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে।

তিনি আরও বলেন, বিধিমালা খতিয়ে দেখে কাউন্সিলর মোস্তফার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।

সূত্র: যুগান্তর