পুলিশের গুলিতে ‘টিকটক’ হৃদয় ও তার সহযোগী আহত

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

বাংলাদেশি এক তরুণীকে ভারতে নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল হওয়া পর অভিযুক্ত পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে বেঙ্গালুরু পুলিশ। তাদের মধ্যে অন্যতম বাংলাদেশি যুবক টিকটক হৃদয়। আজ শুক্রবার ভারতের পুলিশের গুলিতে আহত হয়েছেন তিনি। এ সময় তার সহযোগী সাগরও পুলিশের গুলিতে আহত হন।

ভারতের বেঙ্গালুরু পুলিশ দাবি করছে, সকালে গ্রেপ্তার ৫ আসামিকে নিয়ে ঘটনাস্থলে গেলে হৃদয় ও সাগর পালাতে চেষ্টা করেন। এ সময় পুলিশ গুলি চালায়। হৃদয় ও সাগরের পায়ে গুলি লেগেছে। তারা এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার গ্রেপ্তার হন হৃদয়-সাগরসহ পাঁচ যুবক। বিবস্ত্র করে বাংলাদেশি এক তরুণীকে নির্যাতনের অভিযোগ আছে রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। বেঙ্গালুরু পুলিশ এ ঘটনায় এক নারীকেও গ্রেপ্তার করেছে।

হৃদয়ের গ্রেপ্তারের বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মো. শহিদুল্লাহ জানান, ভারতে বাংলাদেশি এক তরুণীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন করা হয়। এ ঘটনার জড়িতদের মধ্যে অন্যতম হৃদয়। ঘটনাটি সামাজিক যোগযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। রাজধানীর হাতিরঝিল থানায় এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। মামলার ভিত্তিতে আসামিদের দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনা হবে।

পুলিশ জানায়, ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যায়- প্রায় ২০-২২ বছর বয়সী একটি মেয়েকে বিবস্ত্র করে ৩-৪ জন যুবক অমানবিক নির্যাতন করছে। সাইবার পেট্রোলিং এর অংশ হিসেবে ভিডিওটি নজরে আসে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও বিভাগের।

এ প্রসঙ্গে গতকাল বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মো. শহীদুল্লাহ বলেন, অনলাইন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যে ভিডিওটি ভাইরাল হয়েছে তা ভারতে সংঘটিত হয়েছে। তবে ভিকটিম বাংলাদেশি। আর যে ৩-৪ জন যুবক ভিকটিমকে নির্যাতন করেছে তার একজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তার নাম রিফাতুল ইসলাম হৃদয় যিনি স্থানীয়ভাবে ‘টিকটক হৃদয় বাবু’ নামে পরিচিত। নির্যাতনকারী হৃদয় হাতিরঝিলের মগবাজার এলাকায় বসবাস করতেন। হৃদয়ের মা ও মামার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা জানায় উচ্ছৃঙ্খল কর্মকাণ্ডের কারণে গত চার মাস আগে তারা তাকে বাসা থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, কৌশলে হৃদয়ের মামার হোয়াটস অ্যাপ নম্বর থেকে যোগাযোগ করা হলে হৃদয় জানায় সে তিন মাস আগে ভারতে চলে গেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি ১৫-১৬ দিন আগের এবং ভুক্তভোগী বাংলাদেশি। ভুক্তভোগীর বাসাও হাতিরঝিল এলাকায়। হৃদয়ের দেওয়া তথ্যমতে, আমরা নির্যাতিতার পরিবারের খোঁজ পাই। তার পরিবার নির্যাতিত মেয়েকে চিনতে পারে।

মো. শহীদুল্লাহ বলেন, হৃদয় বর্তমানে ভারতের পুনেতে অবস্থান করছে জানালেও তার প্রকৃত অবস্থান শনাক্তের পাশাপাশি সে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করেছে কিনা তা যাচাই-বাছাই করা হবে। তার সহযোগী হিসেবে নির্যাতনে যারা অংশগ্রহণ করেছে তাদের পরিচয়ও শনাক্ত হওয়ায় কাজ চলমান রয়েছে। প্রাথমিকভাবে এটিকে সংঘবদ্ধ মানব পাচারকারী চক্র হিসেবে মনে হচ্ছে। যারা প্রেমের ফাঁদে ফেলে অসহায় ও বিদেশ গমনে ইচ্ছুক নারীদের প্রলুব্ধ করে বিদেশে পাচার করে থাকে। তদন্তের প্রয়োজনে আমরা ভারতের পুলিশ ও ইন্টারপোলের সহায়তায় এই নৃশংস ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার করব।

সূত্র: আমাদের সময়