পুলিশের কড়া নজরদারীতে নাচোল থানায় তদবিরকারীরা

কামাল হোসেন:
চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল থানায় তদবিরকারীরা বেকায়দায় পড়েছে। বর্তমানে পুলিশের কড়া নজরদারীতে আছে তদবিরকারীরা। থানায় মামলা করতে হলে দালাল ধরতে হবে, আপোষ করলেও দালালের মাধ্যমে করতে হবে, এটিই ছিল নাচোলের দীর্ঘদিনের রেওয়াজ।

কিন্তু নাচোল থানার বর্তমান অফিসার ইনচার্জ চৌধুরী জোবায়ের আহাম্মদ এমন রেওয়াজ ভেঙে ফেলার চেষ্টা করছেন। “জনবান্ধব পুলিশ প্রশাসন” এ বাক্যটিকে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করে চলেছেন। জনসাধারণের জন্য থানা উন্মুক্ত, কেউ অভিযোগ করতে চাইলে ওসি অথবা দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসারের নিকট অভিযোগের বিষয় বর্ণনা করে প্রয়োজনীয় আইনি পরামর্শ পেতে পারেন। কিন্তু দীর্ঘদিনের দালালী প্রথা ভেঙে কেউ সরাসরি পুলিশের নিকট গিয়ে নিজের অভিযোগের কথা বলতে পারেন না। বর্তমান অফিসার ইনচার্জ এটি মানতে নারাজ।

এদিকে চিহ্নিত দালালরাও ওৎ পেতে থাকে কখন থানায় মামলা দায়ের হচ্ছে। থানায় অভিযোগের পর দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসার তদন্ত সাপেক্ষে মামলা দায়ের অথবা বাদি-বিবাদির মধ্যে সৃষ্ট বিরোধের আপোষ-নিস্পত্তি (মিমাংশা) করে নেয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। এরই ধারনাবাহিকতায় গত ৮জুলাই পুলিশ খেসবা গ্রামের মৃত আব্দুল মালেকের ছেলে জামিল(১৮) তার সহপাঠি প্রেমিকাকে নিয়ে পালানোর সময় গত ৭ জুলাই গভীর রাতে চৌপুকুরিয়ার স্থানীয়দের হাতে আটক হয়। স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ পলাতক প্রেমিক যুগলকে থানায় নিয়ে আসে। পরদিন ৮জুলাই রবিবার উভয় পক্ষের অভিভাবক ও স্থানীয় দতবিরকারকরা দিনভর পেমিকযুগলকে ছাড়ানোর তদবির করেন। এক পর্যায়ে তদবিরকারীরা আটক প্রেমিকাকে কার জিম্মায় দেয়া হবে এটির কোন শুরাহা না করেই নিজেরাই এটির মিমাংশা করবে বলে পুলিশকে আটককৃতদের ছেড়ে দেয়ার প্রস্তাব করে।

থানাপুলিশ এ সিদ্ধান্ত না মানলে তদবিরকারীরা এসময় উত্তেজিত হয়ে হট্টগোল করতে থাকে। প্রেক্ষিতে, পুলিশ উপস্থিত তদবিরকারক, মেয়ের স্বজন সাবেক নাচোল পৌর কমিশনার গোলাম রাব্বানী, ছেলের চাচা আনারুল ইসলাম, ব্যবসায়ী সাদিকুল ইসলামসহ ১০/১২জনকে থানায় আটক করে। বিষয়টি জানতে পেরে নাচোল পৌর মেয়র আব্দুর রশিদ খান ঝালু থানায় উপস্থিত হন। ঘটনার প্রাসঙ্গিকতা জেনে আটককৃতদের সতর্ক করে মুচলেকা দিয়ে পুলিশ তাদের ছেড়ে দেয়। এঘটনার পর থেকে নাচোলে তদবিরকারকদের আতঙ্ক বিরাজ করছে।

এদিকে নাচোল থানায় তদবিরকারক (দালাল)দের থানায় আটকের বিষয়টি সর্বত্রই আলোচনার প্রধান বিষয়ে পরিণত হয়েছে। নাচোলের জনসাধারণ থানাপুলিশের এর এমন পদক্ষেপের প্রশংসা করেছেন। তবে ওইদিন নিরীহ ব্যক্তিদের আটকের বিষয়টির সমালোচনাও করেছেন।

এব্যাপারে নাচোল থানার অফিসার ইনচার্জ চৌধুরী জোবায়ের আহাম্মদ জানান, দালালদের ২ঘন্টা আটক করে রাখা হয় পরে মেয়রের উপস্থিতিতে তাদেরকে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়। এখানে নিরীহ কোন লোকদের হয়রানী করা হয়নি।

স/অ