বৃহস্পতিবার , ২৪ মে ২০১৮ | ১৩ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরীর খবর
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

পুঠিয়ায় অজ্ঞাত ব্যক্তিকে সৎ চরিত্রের সনদ দিলেন ইউপি চেয়ারম্যান

Paris
মে ২৪, ২০১৮ ৯:৫৭ অপরাহ্ণ

পুঠিয়া প্রতিনিধিঃ

রাজশাহীর পুঠিয়ায় নাম পরিচয়হীন অজ্ঞাত ব্যক্তিকে সৎ চরিত্রের সনদ পত্র দিলেন ভালুকগছি ইউপি চেয়ারম্যান তাকবীর হাসান। পুঠিয়া উপজেলার ৪নং ভালুকগাছি ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় থেকে চেয়ারম্যান তাকবীর হাসান সাক্ষরিত নাম পরিচয়হীন অজ্ঞাত ব্যক্তিকে নাগরিকত্ব সনদপত্র দেয়া হয়।

ভালুকগাছি ইউনিয়ন পরিষদের সিল সম্বলিত তারিখ ও নাম পরিচয়হীন নাগরিকত্ব সনদপত্রটিতে সৎ চরিত্রবান ও রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকান্ডে জড়িত নেই বলে উল্লেখ্য করা হয়। অজ্ঞাত পরিচয়ের সনদটিতে চেয়ারম্যান তাকবীর হাসান উজ্জ্বল ভবিষ্যত কামনা করে সাক্ষর করেন।

সনদে উল্লেখ্য আছে, “এই মর্মে সনদপত্র প্রদান করিতেছি যে…..উপজেলা পুঠিয়া, জেলা রাজশাহী কে আমি চিনি” “তিনি অত্র ভালুকগাছি ইউনিয়নের (ওয়ার্ড নং বিহীন)..নং ওয়ার্ডের স্থায়ী বাসিন্দা এবং বাংলাদেশের নাগরিক এবং তিনি সৎ চরিত্রবান / চরিত্রবতী”।

“আমি যতদূর জানি সে রাষ্ট্র বিরোধী কোন কার্য্যে যোগদান করেন নাই আমি তাহার উজ্জ্বল ভবিষ্যত কামনা করি”। ইউপি চেয়ারম্যান তাকবীর হাসান সাক্ষরিত নাম, পরিচয়, গ্রাম, ডাকঘর বিহীন সেই অজ্ঞাত ব্যক্তির উজ্জ্বল ভবিষ্যত কামনা করা নাগরিকত্ব সনদপত্রটি এ প্রতিবেদকের কাছে সংরক্ষিত রয়েছে।

১১৪ নং ক্রমিক নাম্বারের সনদটিতে কোন ব্যক্তির নাম, পিতার ও মাতার নাম, গ্রামের নাম, ডাকঘর এমনকি ওয়ার্ডের সংখ্যাও উল্লেখ করা নেই। এ নিয়ে চেয়ারম্যান তাকবীর হাসানের বিরুদ্ধে প্রশ্ন উঠেছে নাম পরিচয়হীন কে সেই অজ্ঞাত ব্যক্তি? যার উজ্জ্বল ভবিষ্যত কামনা করে চেয়ারম্যান সাহেব তাকে নাগরিকত্ব সনদপত্র প্রদান করলেন ? নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানান, বর্তমানে নাগরিকত্ব সনদপত্র প্রতিটি কাজে ব্যবহিত হচ্ছে। স্কুল কলেজে ভর্তি থেকে শুরু করে সকল কাজেই নাগরিকত্ব সনদপত্রের গুরুত্ব অনেক বেড়েছে।

অভিযোগ রয়েছে, মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে নাম, পরিচয় ও তারিখ বিহীন নাগরিকত্ব সনদপত্র বিক্রি করা হয় ভালুকগাছি ইউনিয়ন পরিষদে। এমনকি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাক্ষরিত যে কোন সনদপত্র নিলেই টাকা লাগে। এদিকে এটাকে ব্যবহার করে অনেকেই বড় ধরনের অপরাধ করেও কৌশলে শাস্তি না পেয়ে বেড়িয়ে আসছে। এমনকি এমন কর্মকান্ড চলতে থাকলে ভবিষ্যতে বড় ধরনের অপরাধ সংগঠনের সম্ভাবনা রয়েছে। চলতি বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি পুঠিয়ার শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী ও হত্যাচেষ্টা, চোরাচালান এবং নাশকতাসহ সর্বমোট ১১ টি মামলার আসামী লিয়াকত শিকদার পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়। পরে গত ৮ ফেব্রুয়ারী স্থানীয় যুবলীগের কয়েকজন নেতার সুপারিশে উপজেলা যুবলীগের একটি প্যাডে লিয়াকত আলীকে ২ নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি বানিয়ে সৎ চরিত্রের অধিকারী হিসেবে প্রত্যয়ন পত্র প্রদান করে উপজেলা যুবলীগ। সেই প্রত্যয়ন পত্র দেখিয়ে আদালতে লিয়াকতের আইনজীবি জামিন আবেদন করলে আদালত শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী লিয়াকত সিকদারকে জামিন দেন। এমন ঘটনা প্রায়ই ঘটছে যে কারনে মাদক ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে বড় বড় অপরাধীরা গ্রেফতার হলেও জামিনে ছাড়া পেয়ে যাচ্ছে।

ভালুকগাছি ইউনিয়ন পরিষদের তথ্য সেবা কেন্দ্রের উদ্দ্যোক্তা জাহিদুল ইসলাম বলেন, গতকাল চেয়ারম্যান তাকবীর হাসান সাক্ষরিত ১১৪ নং ক্রমিক নাম্বারের সনদটি নেন ৪ নং ভালুকগাছি ইউনিয়নের ফয়সাল নামের এক ব্যক্তি সনদপত্রের রিসিপ কপিতে তার নামও লেখা আছে। তবে এর বাস্তব চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন। ১১৪ নং সনদটিতে ৩ নং ওয়ার্ডের মনজুর রহমানের নাম লেখা রয়েছে।

এব্যপারে অতিরিক্ত অর্থ নেয়া ও অর্থের বিনিময়ে নাম পরিচয়হীন অজ্ঞাত ব্যক্তির কাছে নাগরিকত্ব সনদপত্র বিক্রির অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলা যুবলীগের সদস্য ও ভালুকগাছি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তাকবীর হাসান বলেন, সকল বিধিমালা মেনেই পরিষদ নির্ধারিত ১০ টাকা মুল্যে ইউনিয়নের সকলের জন্য নাগরিকত্ব সনদপত্র বিক্রি করা হচ্ছে এবং সনদপত্র বিক্রির টাকাগুলো ইউনিয়নের উন্নয়নমূলক কাজেই ব্যয় করা হবে। এক প্রশ্নের জবাবে তাকবীর হাসান বলেন, নাম পরিচয় ঠিকানাহীন কাউকে সনদপত্র দেয়ার বিষয়টি আমার জানা নেই। যদি কাউকে দেয়া হয়েও থাকে তবে পরবর্তিতে আর এমন ভুল করা হবে না। একজন অচেনা অজানা ব্যক্তিকে সৎ চরিত্র বলে সনদ দেয়ায় তিনি অনুতপ্ত বলেও স্বীকার করেন তিনি। তিন আরও বলেন, আগে থেকে কিছু সনদপত্রে স্বাক্ষর করা থাকে তাই এধরনের কাজ হয়েছে।

এব্যপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বলেন, নাগরিকত্ব সনদপত্রটির ব্যপারে আমি শুনেছি আমি বিষয়টি নিয়ে চেয়ারম্যান সাহেবের সঙ্গে কথা বলেছি তিনি তার ভুল বুঝতে পেরেছেন বলেও জানান তিনি। তবে সনদের ব্যপারে কেও অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

স/শা

সর্বশেষ - রাজশাহীর খবর