পুঠিয়ায় অন্তঃজেলা ট্রাক ছিনতাইকারি চক্রের বিরুদ্ধে এলাকাবাসির গণপিটিশন

পুঠিয়া প্রতিনিধি :
রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলায় ট্রাক ছিনতাইকারি চক্রের বিরুদ্ধে এবার এলাকাবাসির পক্ষ থেকে গণপিটিশন দাখিল করা হয়েছে।

রোববার (৭ মে) উপজেলার পোস্ট অফিসের (ডাক যোগাযোগ) মাধ্যমে ১২ জনের নাম উল্লেখ করে জেলা-উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ ও গণপিটিশন দিয়েছেন স্থানীয়রা।

এ পিটিশনে যাদের না উল্লেখ রয়েছে তারা হলেন, পুঠিয়া থানার বারইপাড়া পিরগাছা গ্রামের মৃত তছির উদ্দিনের ছেলে ও আস্তঃজেলা ট্রাক ছিনতাইকারি চক্রের প্রধান আশারাফুল ইসলাম (৩৫)। একই এলাকার আশরাফুলের ছেলে সিজান, রবিউলের ছেলে রবিন, পুঠিয়া থানার গন্ডোগোয়ালি এলাকার আবু বক্করের ছেলে সালমান হোসেন সোহান, ধোপাপাড়া এলাকার মিজানুর রহমান, বারইপাড়া হেজাতিপাড়া এলাকার শহিদুলের ছেলে সাগর ও চারঘাট থানার ঝিকরা গ্রামের শাকিল, একই গ্রামের সুরুজ, আলিফ, থানাপাড়া গ্রামের সুমন, একই গ্রামের ফারুক। এছাড়া নাটোর কাপুরিয়া ইউনিয়নের গাওপাড়া গ্রামের রুহুল।

স্থানীয়দের স্বাক্ষর করা গণপিটিশনে উল্লেখ রয়েছে, আশরাফুল ইসলাম একজন কুখ্যত আন্তঃজেলা ট্রাক ছিনতাইকারি ও চোর চক্রের প্রাধন। জেলা-উপজেলার বিভিন্ন জায়গা থেকে উল্লেখিত সদস্যদের সংগ্র করে এবং রাত হলেই একটি পিকআপ ও তিন চারটি মোরসাইকেল সঙ্গে নিয়ে এলাকার গরু, ছাগল, পুকুরের মাছ, বাগানের কলা ও আম চুরি করে।
এছাড়া তারা মহাসড়কে চলন্ত ট্রাক থেকে মালামাল চুরি করে তাদের নিজস্ব পিকআপে লোড করে। এবাদেও পাওয়ার টিলার, ট্রলি, কাকড়া সহ আরও আনান্য মূল্যবান জিনিস চুরি করে নিয়ে যাওয়া তাদের নিত্যদিনের ব্যাপার হয়ে দাড়িয়েছে। এলাকায় সকল ধরনের অপরাধের সাথে জড়িত তারা। এছাড়া তারা ইয়াবা, ফেনসিডিল গাঁজাসহ বিভিন্ন নেশা দ্রব্য সেবন করে।

এদের অত্যাচার এলকাবাসিদের জনজীবন সর্বশান্ত করে তুলেছে। পিটিশনে আরও উল্লেখ রয়েছে, ছিনতাইকারি ও চুরি সিন্ডিকেট চক্রকে চির নির্মূল এর জন্য আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনী ও প্রশাসনিক দপ্তরের কাছে আমরা গণস্বাক্ষরিত একটি গণপিটিশনের মাধ্যমে এদের বিচারের দাবী জানাচ্ছি।

এ বিষয়ে গনপিটিশনে স্বাক্ষরকারী স্থানীয় সাব্বির হোসেন বলেন, চক্রের প্রধান আশরাফুল ইসলাম এর নেতৃত্বে প্রতিদিন এই মহাসড়কে, ট্রাকের মালামাল ছিনতাই ও গ্রামের অধিকাংশ রাস্তায় দিনে-দুপুরে মোবাইল মানিব্যাগ ছিনতাইয়ের পাশাপাশি গাছের ফল-ফলাদিসহ মোটরসাইকেলও ছিনিয়ে নিয়ে যায় তারা।

স্বাক্ষরকারি আলামিন বলেন, গত ২৮ মার্চ মিজানুর রহমান (২২) নামে একজনকে গ্রেফতার করে পুঠিয়া থানা পুলিশ। তার দেওয়া তথ্য মতে ৩ এপ্রিল তার বাসা থেকে চুরি করা মালামাল জব্দ করেন তারা। এই বিষয়ে থানায় একটি মামলাও হয়। এই মামলায় আশরাফুল ইসলামকে আসামি করা হলেও তাকে গ্রেপ্তার করেছেনা পুলিশ। তিনি বলেন, এ চক্রের স্থানীয় ও বহিরাগত কিছু যুবক রয়েছে। পুঠিয়া থানা পুলিশের কাছে তাদের একটি ডাটাবেজও রয়েছে। তবুও তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে পুলিশের ভুমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেন তিনি। আলামিন বলেন পুলিশ এ ব্যাপারে উদাসীন। কারণ চক্রের অন্যান্য সদস্যরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও তাদের গ্রেপ্তার করা হয়না। এই ব্যপারে পুলিশ ও প্রশাসন কোন পদক্ষেপ না নেওয়ায় স্বাক্ষরকারিগণ সরকারের আইন ও প্রশাসনের উদ্ধর্তন কর্মকর্তাদেরকে অতি দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান তারা।

গণস্বাক্ষরিত অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে পুঠিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নুরুল হাই মোহাম্মদ আনাছ্ পিএএ বলেন, এ বিষয়ে তদারকি বাড়াতে থানা পুলিশকে অবহিত করা হবে। সেই সাথে তিনি অভিযুক্তদের গ্রেফতারে এলাকার লোকজনের সহযোগিতা কামনা করেন।

এ ব্যাপারে পুঠিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফারুক হোসেন বলেন, গণস্বাক্ষরিত অভিযোগের বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে ইতিমধ্যে সড়কে চুরি চক্রের কয়েকজন সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের ধরতে পুলিশ বিভিন্ন স্থানে অভিযান অব্যহত রেখেছেন।