পাবনায় দুজনের মৃত্যুর দিনে ২৬ করোনা পজিটিভ শনাক্ত, মোট ৪৭৪

নিজস্ব প্রতিবেদক:

পাবনায় করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমিত হয়ে ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে নতুন করে আরও দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় করোনা সংক্রমিত হয়ে মারা গেলেন মোট ৯ জন। আজ রোববার নতুন করে জেলার ঈশ্বরদীতে ২৬ জনের করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ৪৭৪।

জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে জানা গেছে, জেলায় কোনো পিসিআর ল্যাব না থাকায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পিসিআর ল্যাবে জেলার নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। ল্যাবে নমুনার চাপ বেশি থাকায় পরীক্ষার ফলাফল পেতে কিছুটা বিলম্ব হয়। এ পর্যন্ত ৬ হাজার ১৩৮টি নমুনা দিয়ে ৪ হাজার ৭৬৬টি নমুনা পরীক্ষার ফলাফল পাওয়া গেছে। এ থেকে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৭৪।

সর্বশেষ আজ রোববার বিকেলে প্রাপ্ত ফলাফলে জেলার ঈশ্বরদীতে নতুন করে করোনা ‘পজিটিভ’ শনাক্ত হয়েছেন ২৬ জন। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত জেলা সদরে ২৬৪ জন, ঈশ্বরদীতে ৫৬ জন, সুজানগরে ৬২ জন, আটঘরিয়ায় ২০ জন, চাটমোহরে ১১ জন, ভাঙ্গুড়ায় ১৭ জন, ফরিদপুরে ৭ জন, সাঁথিয়ায় ২১ জন ও বেড়ায় ৮ জন করোনা রোগী শনাক্ত হলেন।

এ প্রসঙ্গে সিভিল সার্জন মেহেদী ইকবাল বলেন, জেলায় করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। মোট শনাক্ত বিবেচনায় জেলা সদর ও সুজানগর উপজেলাকে ‘রেড জোন’ ঘোষণা করে প্রতিরোধমূলক বিভিন্ন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। শনাক্ত ব্যক্তিদের মধ্যে এ পর্যন্ত ১৪৯ জন সুস্থ হয়েছেন। বর্তমানে পাবনা জেনারেল হাসপাতাল করোনা ইউনিটে ১২ জনকে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। অন্যদের শরীরে তেমন কোনো উপসর্গ না থাকায় বাড়িতেই আইসোলেশনে রেখে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

এদিকে, নতুন মৃত দুজন হলেন জেলা সদরের শালগাড়িয়া মহল্লার আইয়ুব আলী (৫৫) ও শিবরামপুর মহল্লার মো. সালাউদ্দিন (৫৬)। তাঁরা দুজন ব্যবসায়ী ও ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন। তাঁদের মধ্যে আইয়ুব আলী রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল শনিবার বিকেলে ও মো. সালাউদ্দিন ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ রোববার দুপুরে মারা গেছেন।

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জয়নাল আবেদীন এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে মৃত ব্যক্তিদের দাফনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মো. সালাউদ্দিন বেশ কিছুদিন ধরে শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। অসুস্থ হয়ে পড়লে গত ১৬ জুন তাঁকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে করোনা ‘পজিটিভ’ শনাক্ত হন। পরে তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়া হয়। সেখানে আজ রোববার দুপুরে তিনি মারা যান। অন্যদিকে আইয়ুব আলী জ্বর, সর্দি ও শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হলে ২৬ জুন তাঁকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল শনিবার বিকেলে তিনি মারা যান।

আইয়ুব আলীর শ্যালক ফয়সাল ইসলাম জানান, তাঁরা দুজন ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন। তাঁরা দুজনই ব্যবসা করতেন। তবে বেশ কিছুদিন তাঁদের দেখা হয়নি। দুজন পৃথকভাবেই করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন।

জেলায় প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হন গত ১৬ এপ্রিল। এরপর মে মাসের শেষ দিন পর্যন্ত দেড় মাসে ৩৬ জন শনাক্ত হন। জুন ও জুলাইয়ের এসে এই সংখ্যা ৪৭৪ জনে পৌঁছাল।