পাঁচ লাখ রুপি পুরস্কার পেলেন ওই হিজাবি শিক্ষার্থী

ভারতের দক্ষিণাঞ্চলের কর্ণাটক রাজ্যের ওই হিজাবি শিক্ষার্থীর জন্য ঘোষিত পুরস্কার তাঁর হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। হিজাব বিতর্কের মধ্যেই কলেজ প্রাঙ্গণে গেরুয়া পরা একদল তরুণের সামনে একাই প্রতিবাদ করে সাহসী ভূমিকা রাখায় শিক্ষার্থী মুসকান খানের হাতে পাঁচ লাখ রুপির চেক তুলে দেওয়া হয়। এক টুইট বার্তায় একথা জানিয়েছে সংগঠনটি।

গতকাল বুধবার (৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে কর্ণাটকের মান্দিয়া জেলায় শিক্ষার্থী মুসকান খান ও তাঁর বাবা হুসাইন খানের হাতে এ পুরস্কার তুলে দেয় ভারতের জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের একটি প্রতিনিধি দল।

সংগঠনটির সভাপতি মাওলানা মাহমুদ আসআদ মাদানির পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা জানিয়ে মুসকানকে পুরস্কার দেওয়া হয়। এ সময় তাঁকে ইসলামী অনুশাসন মেনে শিক্ষা সম্পন্ন করে দেশ, জাতি ও সমাজের কল্যাণে কাজ করার আহ্বান জানান।

এর আগে গত মঙ্গলবার পুরস্কারের ঘোষণা দিয়ে টুইট বার্তায় বলা হয়, ‘নিজের আইনি ও ধর্মীয় অধিকার রক্ষায় তীব্র বাধার মুখেও একাই পুরো দলের প্রতিবাদ করায় সাহসী শিক্ষার্থী মুসকান খান বিনতে মুহাম্মদ হুসাইন খানের প্রতি শুভেচ্ছা। জমিয়তের পক্ষ থেকে এই সাহসী তরুণীর জন্য পাঁচ লাখ রুপি পুরস্কার ঘোষণা দেওয়া হয়। ’

জানা যায়, হিজাব বিতর্কের মধ্যে অ্যাসাইনমেন্ট জমা দিতে নিজ ক্যাম্পাসে আসেন মান্দিয়ার পিইসি কলেজের শিক্ষার্থী মুসকান বিবি। এ সময় গেরুয়া ওড়না পরা একদল তরুণকে তাঁকে ঘিরে ‘জয় শ্রীরাম’ বলে স্লোগান দিতে দেখা যায় এবং তাঁর কাছে আসার চেষ্টা করে।

কিন্তু ওই হিজাবি ছাত্রী নির্ভয়ে কলেজ ভবনের দিকে এগিয়ে যান এবং হাত ওপরে তুলে ‘আল্লাহু আকবার’ স্লোগান দিতে থাকেন। পরে কলেজের শিক্ষকরা তাঁকে সরিয়ে নেন। একাই একদল তরুণের সামনে তাঁর প্রতিবাদের ভিডিও চিত্র ভাইরাল হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। পুরো বিশ্বে এখন প্রশংসায় ভাসছেন ওই ছাত্রী। কলেজ চত্বরে থেমে এক ব্যক্তিকে উদ্দেশ করে মুসকান বলেন, ‘আমি বোরকা পরলে সমস্যা কী?’

ঘটনার পর এনডিটিভিকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে মুসকান বলেন, ‘আমি মোটেও ভীত ছিলাম না। আমি কলেজে প্রবেশ করলে তারা আমাকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে। কারণ আমি বোরকা পরেছি। তারা ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান দেওয়া শুরু করে। আমিও ‘আল্লাহু আকবার’ বলে চিৎকার শুরু করি। কলেজের অধ্যক্ষ এবং প্রভাষকরা আমাকে রক্ষা করেন। ’

এদিকে প্রায় এক মাস আগে কর্ণাটকের উদুপুরের পিইউ গার্লস কলেজে প্রথম হিজাব নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। ওই কলেজের ছাত্রীরা হিজাব পরে শ্রেণিকক্ষে অংশ নেওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। কলেজটির একজন ছাত্রী হিজাব, হেডস্কার্ফ পরে শ্রেণিকক্ষে অংশ নিতে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন।