পাঁচ বছর ধরে সিজারিয়ান অপারেশান বন্ধ পত্নীতলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে

কাজী কামাল হোসেন, নওগাঁ:
প্রসুতি সেবায় তিনবার জাতীয় পুরষ্কারপ্রাপ্ত হলেও গত পাঁচ বছর ধরে সিজারিয়ান অপারেশন হয়না নওগাঁ জেলার পত্নীতলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের। অবকাঠামোগত সকল প্রকার সুযোগ সুবিধা থাকা স্বত্তেও হাসপাতালে সিজারিয়ান অপারেশন না হওয়ায় গরীব ও অসহায় রোগীর অভিভাবকরা পড়েছেন চরম বেকায়দায়। বাধ্য হয়ে তাঁরা ছুটছেন বিভিন্ন বেসরকারি ক্লিনিকে। নীতিমালা বহির্ভূতভাবে চলা এ সকল নামসর্বস্থ ক্লিনিকে গলা কাটা ফিতে সর্বশান্ত হচ্ছেন অনেক রোগী এবং তাদের পরিবার। এ নিয়ে যেন দেখার কেউই নেই।

সরজমিনে জানা গেছে, এলাকার মাতৃত্ব সেবার মান উন্নয়ন এবং অসহায় গরীব মানুষের কথা বিবেচনা করে পতœীতলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২০০০ সালে প্রসুতি সেবা চালু করা হয়। ২০১২ সাল পর্যন্ত সাফল্যের সাথে চলমান ছিল। নিরাপদ মাতৃত্ব সেবায় গুরুত্বপূর্ন অবদান রাখায় পত্মীতলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ২০০৫,২০০৮ ও ২০০৯ সালে তিনবার জাতীয় পুরুষ্কার লাভ করে। ২০০৪ সালে প্রসুতি সেবায় সারা বাংলাদেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠ পুরুষ্কার লাভ করে। জেলা, উপজেলার বাইরে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সুনাম ছড়িযে পড়ায় দুর দুরান্ত হতে গরীব রোগীরা এখানে আসতে শুরু করে। কিন্তু ২০১২ সালে তৎকালীন সার্জন ডা: ইজাহারুল ইসলাম (বাচ্চু) অবসরে যাওয়ায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্্ের সিজারিয়ান কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। এর পর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আর এই সেবা চালু করা সম্ভব হয়নি।
এদিকে অসহায় গরীব রোগীরা সরকারি হাসপাতালে সিজারিয়ান সেবা না পাওয়ায় শরনাপন্ন হচ্ছেন নামে- বেনামে গড়ে উঠা বিভিন্ন ক্লিনিকে। অনেক ক্ষেত্রেই তাঁরা প্রতারনার শিকার হচ্ছেন।

পতœীতলা উপজেলা নজিপুর পৌরসভা আল হেরা পাড়ার বাসিন্দা মোঃ আতাউর রহমান জানান, কয়েক মাস আগে আমার বোনের প্রসব ব্যাথ্যা উঠলে নিয়ে যাওয়া হয় পত্মীতলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্্ের। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক দ্রুত সিজার করার পরামর্শ দেন। কিন্তু হাসপাতালে সিজারিয়ান বন্ধ থাকায় বাধ্য হয়ে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে সিজার করাতে হয়েছে। এতে আমার প্রায় ২০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এর আগে পত্মীতলা উপজেলা হাসপাতালে সিজারিয়ান করাতে খরচ হতো ২হাজার টাকা থেকে ৩ হাজার। সেখানে এতো টাকা খরচ করতে আমাকে অন্যের নিকট ধার নিতে হয়েছে। এমন কথা জানালেন অনেকেই।

এ বিষয়ে পতœীতলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রধান পরিবার ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা শ্রী রঞ্জন চৌধুরী জানান, হাসপাতালে সিজার অপারেশন হয় স্বল্প খরচে। কিন্তু ক্লিনিকে খরচ অনেক বেশী। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্্ের পুনরায় প্রসুতি সেবা কার্যক্রম শুরু করার জন্য আমরা চেষ্ঠা চালিয়ে যাচ্ছি।

 

স/আ