পবায় মাদ্রাসার জমি বিক্রি যুবলীগ নেতার, উদ্ধারের ঘোষণা এমপি আয়েনের

নিজস্ব প্রতিবেদক:

রাজশাহীর পবা উপজেলার পারিলা ইউনিয়নের পুড়াপুকুর দাখিল মাদ্রাসা ও কবরস্থানের বিক্রি করে দেওয়া জমি উদ্ধারের ঘোষণা দিয়েছেন  রাজশাহী-০৩ (পবা-মোহনপুর) আসনের সংসদ সদস্য মো. আয়েন উদ্দিন। শুক্রবার (০৮ অক্টোবর) বিকালে মাদ্রাসার সামনে আয়োজিত এক প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য প্রদানকালে তিনি এই ঘোষণা দেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে- সম্প্রতি মাদ্রাসাটির দুই বিঘা জমি আমানা গ্রুপের কাছে বিক্রি করে দেন ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি আসলাম সরকার। তিনি ভূয়া কার্যবিবরণী তৈরি করে মাদ্রাসা কমিটির সভাপতি সেজে জমিটি বিক্রি করেন বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। রাজশাহী নগরীর উপকণ্ঠ খড়খড়ি এলাকায় অবস্থিত এই জমিটির মূল্য অন্তত দুই কোটি টাকা। তবে দলিলে মূল্য দেখানো হয় মাত্র ৫১ লাখ টাকা।

এই জমি বিক্রি করে দিয়ে আসলাম সরকার ও স্থানীয় কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতা আর্থিকভাবে নিজেরা লাভবান হন বলেও অভিযোগ এলাকাবাসীর। জমি বিক্রির এ খবর জানাজানি হলে গত ১ অক্টোবর এলাকাবাসী বিক্ষোভ সমাবেশ করেন। সেদিন তাঁরা বলেছিলেন, আসলাম সরকার আগে মাদ্রাসা কমিটির সভাপতি ছিলেন। এখন তিনি কেউ নন। তাও কমিটির সভাপতি সেজে তিনি জমি বিক্রি করে দিয়েছেন। তাঁরা আসলামের শাস্তি দাবি করেন।

বিষয়টি জানতে পেরে জমি উদ্ধারের সিদ্ধান্ত নেন রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনের এমপি আয়েন উদ্দিন। শুক্রবার বিকালে এলাকাবাসী আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি যোগ দেন। সাবেক জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা একরামুল হক প্রতিবাদ সভায় সভাপতিত্ব করেন।

পারিলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নবিবর রহমানের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সভায় উপস্থিত ছিলেন সভাপতি সোহরাব আলী, জেলা পরিষদের সদস্য ও পবা উপজেলা যুবলীগের সভাপতি এমদাদুল হকসহ এলাকার প্রায় দুই শতাধিক বাসিন্দা।

সভায় এমপি আয়েন উদ্দিন বলেন, আমানা গ্রুপের চেয়ারম্যান ড. ফজলুল করিমের সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে। তিনি জমি ফেরত দিতে চেয়েছেন। মাদ্রাসার একটি নতুন কমিটি করা হবে। সেই কমিটির কাছে জমি হস্তান্তর করা হবে। আর জমি বিক্রি চক্রের সঙ্গে যাঁরা জড়িত ছিলেন, তাঁদের সবাইকে শাস্তির মুখোমুখি করা হবে। তাঁদের কোনো ছাড় নেই।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি আসলাম সরকার বলেন, মাদ্রাসাটা পরিত্যক্ত। তাই পাশে দাঁড়াতে চেয়েছিলেন ফজলুল করিম। তিনি মাদ্রাসার সঙ্গে মসজিদ, কবরস্থানের জন্য জানাজা ঘর, এতিমখানা, হেফজখানা- সবই করে দিতে চেয়েছিলেন। সে জন্য সবকিছু তাঁকে বুঝিয়ে দেওয়ার প্রয়োজন হচ্ছিল। কিন্তু জমিটা দানের। আবু বকর সিদ্দিক নামের এক ব্যক্তি মাদ্রাসাকে জমিটা দান করেছিলেন। দানের জমি আরেকবার দান করা যায় না। সে কারণেই একটা মূল্য দেখিয়ে বিক্রি করা হচ্ছিলো।

আসলাম সরকার বলেন, ‘যে উদ্দেশ্যে জমি বিক্রি করা হচ্ছিল, তা এলাকাবাসীর পছন্দ না। তাই এই বিক্ষোভ-প্রতিবাদ সমাবেশ হচ্ছে। এখন এমপি সাহেব এসে জমি পুনরুদ্ধাদের কথা জানালেন। সেটিই হবে। তবে এই জমি বিক্রির জন্য অসৎ কোন উদ্দেশ্যে ছিলো না।’

এএইচ/এস