পবার দারুশা কলেজ: সেই ‘অধ্যক্ষ’ ও সভাপতির দুর্নীতি তদন্তে দুদক

নিজস্ব প্রতিবেদক:

রাজশাহীর পবা উপজেলার দারুশা কলেজের সেই অধ্যক্ষ ও সভাপতির নানা অনিয়মের তদন্তে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন। এরই মধ্যে গত সোমবার কলেজের বরখাস্তকৃত অধ্যক্ষ আব্দুল মান্নান এবং সভাপতি সোহরাব হোসেনসহ কয়েকজনকে ডেকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদও করেছেন দুদক কর্মকর্তা।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদকের রাজশাহী অফিসের উপপরিচালক আব্দুল করিম। তিনি বলেন, দারুশা কলেজের অনিয়মের বিষয়টি আমরা অনুসন্ধানে নেমেছি। এরই মধ্যে কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। আরও অনুসন্ধান চলছে।’

এদিকে বরখাস্তকৃত অধ্যক্ষ আব্দুল মান্নান ও সভাপতি সোহরাব হোসেনের বাধার কারণে গত ডিসেম্বর মাসেরও বেতন উত্তোলন করতে পারেননি কলেজ শিক্ষক-কর্মচারীরা। প্রতিষ্ঠানটির এর আগে গত নভেম্বর মাসেরও বেতন উত্তোলন করতে পারেননি ৩৮ জন শিক্ষক-কর্মচারী। টানা দুই মাস বেতন উত্তোলন করতে না পেরে অনেকের সংসারে নেমে এসেছে টানা-কষা। বিশেষ করে কর্মচারীরা পড়েছেন ব্যাপক ভোগান্তিতে।

জানতে চাইলে কলেজের একজন অফিস সহকারী বলেন, বেতন বিলের কপিতে এখনো বরখাস্তকৃত অধ্যক্ষের নাম রয়েছে; কিন্তু তাঁকে সর্বোচ্চ আদালত থেকে অবৈধ বলে ঘোষণা করা হয়েছে। এর ফলে রেহেনা বেগম নামের এক শিক্ষককে ভারপ্রাপত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তবে অবৈধভাবে আব্দুল মান্নানেক পরবর্তিতে আবারো অধ্যক্ষ হিসেবে পুন:বহাল করা হয়। এ নিয়ে জটিলতার কারণেই শিক্ষক-কর্মচারীরা ব্যাংক থেকে টানা দুই মাসের বেতন উত্তোলন করতে পারেননি। ফলে অনেকে সংসার চালাতেই হিমশিম খাচ্ছেন।

এর আগে গত ৪ জানুয়ারি বেতনের দাবিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে আবেদন করায় দুই শিক্ষকে কলেজের কক্ষে আটকে রেখে মানসিকভাবে নির্যাতন করেন।

প্রসঙ্গত, নানা অনিয়ম, স্বজনপ্রীতি, কলেজের অর্থ আত্মসাত, জালিয়াতির মাধ্যমে নিজ স্ত্রীকে চাকরি দানসহ বিভিন্ন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দারুশা কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল মান্নানকে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে কলেজ পরিচালনা পরিষদ ২০১০ সালের ৭ জুলাই বরখাস্ত করে। এ বরখাস্তের বিরুদ্ধে অধ্যক্ষ আব্দুল মান্নান উচ্চ আদালতে ২০১২ সালে রিট পিটিশন দায়ের করেন। সর্বশেষ গত বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার নেতৃত্বে গঠিত চার সদস্যের বেঞ্চ বরখাস্তকৃত অধ্যক্ষ আব্দুল মান্নানের আপিল আবেদনটিও খারিজ করে দেন। সেই হিসেবে আবব্দুল মান্নানের বরখাস্তের আদেশটি বহাল থাকে। কিন্তু তার পরে আবারও অধ্যক্ষ আব্দুল মান্নানকে অবৈধভাবে পুন:বহাল করেন কলেজ সভাপতি ও তাঁর খালাতো ভাই দারুশা উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সোহরাব হোসেন।