পপুলার লাইফের সাবেক চেয়ারম্যান : স্ত্রী বলছেন মৃত্যু, ভাইয়ের দাবি হত্যা

পপুলার লাইফ ইনস্যুরেন্স কম্পানি লিমিডেটের সাবেক চেয়ারম্যন হাসান আহমেদের (৫৭) মৃত্যুকে ঘিরে রহস্য দেখা দিয়েছে। সোমবার বারডেম হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে তাঁকে দাফন করতে বাধা দেয় স্বজনরা।

মৃতের ভাই ঢাকা মহানগর আদালতে অভিযোগ করেন, ‘হাসানকে স্ত্রী ও তার আত্মীয়স্বজনরা মিলে হত্যা করেছে।

‘ এরপর পল্টন থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে মঙ্গলবার পুলিশ হাসানের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ মর্গে পাঠায়।

আজ মঙ্গলবার হাসপাতালে নিহতের স্ত্রী দাবি করেন, হাসান অসুস্থ হয়ে মারা গেছেন। সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জেরে হয়রানি করতে মিথ্যা অভিযোগ দেওয়া হচ্ছে।

মৃত হাসান আহামেদ চাঁদপুর জেলার মতলব উত্তর উপজেলার গাজিপুর গ্রামের মৃত গিয়াস উদ্দিন আহামেদের ছেলে। দুই মেয়ে এক ছেলের জনক তিনি। পরিবারের সঙ্গে পুরানা পল্টনের রূপয়াণ তাজ নামের ভবনে থাকতেন হাসান।

পপুলার লাইফ ইনস্যুরেন্সের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক আলমগীর ফিরোজ রানা কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘তিনি (হাসান আহমেদ) ২০২০ সাল পর্যন্ত কম্পানির চেয়ারম্যান ছিলেন। তাঁর মৃত্যুর খবর আমরা পেয়েছি। তাঁর ভাইদের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে বলে শুনেছি। ‘

পল্টন থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সেন্টু মিয়া বলেন, সোমবার হাসান আহমেদকে অসুস্থ অবস্থায় তাঁর স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস প্রথমে ইসলামী ব্যাংক সেন্ট্রাল হাসপাতাল নিয়ে যান। সেখান থেকে বারডেম হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সন্ধ্যা ৬টার দিকে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। হাসান আহমেদের ছোট ভাই কবির আহামেদসহ স্বজনদের অভিযোগের ভিত্তিতে মঙ্গলবার বিকেলে পুরানা পল্টন তাঁদের বাসার সামনে থেকে লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, ‘মৃতের ভাই কবির হোসেন থানায় জিডি করেছেন। এর আগে আদালতে অভিযোগ দায়ের করেছেন। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে বিস্তারিত জানা যাবে। ’

মৃতের স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস মঙ্গলবার মর্গে গিয়ে স্বামীর লাশ গ্রহণ করেন। এ  সময় তিনি বলেন, ‘আমার স্বামীর নামে অনেক সম্পত্তি রয়েছে। এসব সম্পত্তি আত্মসাৎ করার জন্য তাঁর বিরুদ্ধে মামলাও করেছিলেন। অন্যায়ভাবে তাঁর পদ থেকে দুই বছর আগে তাঁকে সরানো হয়েছে এবং ভাইস চেয়ারম্যান পদে কবির হোসেন বসেছেন। চেয়ারম্যান পদে বসিয়েছেন মোতাহার হোসেন নামের একজনকে। ’

তিনি আরো বলেন, ‘কবির হোসেন মৃতের আপন ছোট ভাই, তিনি আমার ও আমার ভাই-বোনের বিরুদ্ধে আদালতে হত্যা মামলা করেছেন। তাঁরা দাফনও করতে দেননি। তাঁরা মামলা করে পুলিশ পাঠিয়েছেন। পরে পুলিশ  মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে নিয়ে যায়। অত্যন্ত দুঃখের বিষয়, তাঁরা কেউ একবারের জন্য দেখতেও আসেননি। আমি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করছি। ‘

স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস জানান, হাসান দুই বছর আগে হৃদরোগে আক্রান্ত হন। তখন থেকে তিনি দাঁড়াতেও পারতেন না। হুইলচেয়ারে করে চলাফেরা করতেন।

 

সূত্রঃ কালের কণ্ঠ