পদত্যাগ করবেন না থাই প্রধানমন্ত্রী, বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা

জরুরি অবস্থা ভেঙ্গে থাইল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন হাজার হাজার বিক্ষোভকারী। এই অবস্থার মধ্যেও পদত্যাগ করবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রী প্রায়ুথ চান-ওচা। পাশাপাশি তিনি বিক্ষোভকারীদের আইন লঙ্ঘন না করতে সতর্ক করে দেন।

থাইল্যান্ডে রাজার ক্ষমতা খর্ব ও প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে প্রায় তিন মাস ধরে বিক্ষোভ চলে আসছে। তাদের এই বিক্ষোভ দমাতে বৃহস্পতিবার সরকার জরুরি ডিক্রি জারি করে চারজনের বেশি মানুষের জমায়েত নিষিদ্ধ করে।

সরকারের জারি করা জরুরি অবস্থা ভঙ্গ করে বিক্ষোভকারীরা ব্যাংককে বিশাল বিক্ষোভ-সমাবেশ করেছে। এই বিক্ষোভের মুখেও শুক্রবার মন্ত্রিসভায় একটি জরুরি বৈঠকের পর ওচা সাংবাদিকদের বলেছেন, ‌‌আমি পদত্যাগ করছি না।

তিনি বলেন, সরকারকে জরুরি ডিক্রি কাজে লাগাতে হবে। আমাদেরকে এপথে এগুতে হবে, কারণ পরিস্থিতি সহিংস হয়ে উঠেছে…এই জরুরি ডিক্রি ৩০ দিনের জন্য বহাল রাখা হচ্ছে, বা তার চেয়ে কম দিনও থাকতে পারে যদি পরিস্থিতি শান্ত হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা জনগণকে এই জরুরি অবস্থার বিধিনিষেধ লঙ্ঘন না করার ব্যাপারে সতর্ক করে দিচ্ছি। আমরা বলছি, অপেক্ষা করুন, দেখুন কি হয়… আপনারা ভুল কিছু করলে আমরা আইনের আশ্রয় নেব।

আগস্টে থাইল্যান্ডের রাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে জনসমক্ষে প্রথমবার সমালোচনা করে এবং প্রথাগত ধারার সংস্কারের দাবি তুলে আলোচনায় আসেন অ্যানন। ওই মাসের শেষদিকে রাজতন্ত্রের নিয়ম সংস্কারের ১০ দফা দাবি পেশ করেন পানুসায়া সিথিজিরাওয়াত্তানকুল।

জারি করা জরুরি ডিক্রিতে চার জনের বেশি মানুষের জমায়েত নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এছাড়া ‘ভীতিকর’ এবং ‘জাতীয় নিরাপত্তায় হুমকি’ তৈরি করতে পারে- এমন সংবাদ প্রকাশও নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

জরুরি অবস্থা জারির ফলে যে কোনো সুনির্দিষ্ট এলাকায় মানুষের প্রবেশ আটকাতে পারবে কর্তৃপক্ষ।

দেশটির সরকার বলছে, রাজকীয় মোটর শোভাযাত্রায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি, অস্থিতিশীলতা, অর্থনৈতিক ক্ষতি এবং করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে এই জরুরি ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর জারি করা জরুরি ডিক্রি থাই পুলিশের পক্ষ থেকে টেলিভিশনে প্রচারিত হয়। এতে বলা হয়েছে, দ্রুত এবং কার্যকরভাবে এই পরিস্থিতির (বিক্ষোভ) অবসান ঘটিয়ে শান্তিশৃঙ্খলা ফিরয়ে আনতে জরুরি পদক্ষেপ নেয়া খুবই প্রয়োজন ছিল।

বিদেশভ্রমণ শেষে থাইল্যান্ডের রাজা মাহা ভাজিরালংকর্নের দেশের মাটিতে পদার্পণে ফের বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে ব্যাংকক। বুধবার হাজারও গণতন্ত্রপন্থী বিক্ষোভকারী রাজার গাড়িবহরের সামনে বিক্ষোভ করে।

আন্দোলন-বিক্ষোভের প্রতীক হয়ে ওঠা ‘তিন আঙুল স্যালুট’ প্রদর্শন করে তারা। মূলত প্রধানমন্ত্রী প্রায়ুথ চান-ওচার পদত্যাগের দাবিতে বুধবার ১০ হাজারের বেশি বিক্ষোভকারী রাজধানীতে জড়ো হয়। একই সঙ্গে রাজার ক্ষমতা খর্ব করার দাবিও জানাচ্ছে তারা।

২০১৪ সালে সেনা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করেন প্রায়ুথ। পরে বিতর্কিত নির্বাচনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী হন তিনি।

গণতন্ত্রের সমর্থনে শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে চলতে থাকা আন্দোলন থাইল্যান্ডের ক্ষমতাসীনদের জন্য সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দাঁড়িয়েছে।

 

সূত্রঃ যুগান্তর