নেপালের সরকার ফেলে দিতে দফায় দফায় বৈঠক চলছে দিল্লিতে

আমাকে সরাতে দফায় দফায় বৈঠক চলছে ভারতে। রবিবার একটি বৈঠকে এমনটাই বললেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি। তাঁর দাবি, নেপালের নতুন মানচিত্র নিয়ে ভারতে যে বিরোধিতা তৈরি হয়েছে, তার জেরেই তাঁকে পদ থেকে সরিয়ে ফেলার ষড়যন্ত্র চলছে ভারতে।

প্রয়াত কমিউনিস্টম লিডার মদন ভান্ডারীর স্মরণসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়েই এমনটা বলেন তিনি। তবে তাঁর দাবি, সব চেষ্টা ব্যর্থ হয়ে যাবে। ক্ষমতাব থাকবেন তিনিই।

তিনি এদিন বলেন, ‘দিল্লি থেকে এরকম খবর আসছে। নেপালের নতুন মানচিত্র প্রকাশের জেরেই ভারতে একের পর এক বৈঠক চলছে নেপালের বিরুদ্ধে। গত ১৩ জুন নেপালের পার্লামেন্টের লোয়ার হাউসে পাশ হয়ে যায় নতুন মানচিত্র সংক্রান্ত সেই বিল। সেই মানচিত্রে রয়েছে ভারতের লিম্পিয়াধুরা, কালাপানি ও লিপুলেখ, যা আসলে ভারতের উত্তরাখণ্ডের অংশ। গত ১৮ জুন সেই বিলে সম্মতি দিয়ে সই করেন নেপালের প্রেসিডেন্ট বিদ্যাদেবী ভাণ্ডারী।

নেপালের প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, নেপালের জাতীয়বাদ এতটা দুর্বল নয়। ভারতকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, নেপালের এই মানচিত্র বদলকে কেউ কেউ অপরাধের চোখে দেখছে। তাঁর মতে, আজ যদি তাঁর সরকার পড়ে যায়, তাহলে নেপালের হয়ে কেউ কথা বলবে না। তবে তাঁর দল এই ধরনের ফাঁদে পা দেবে না বলেই জানিয়েছেন তিনি।

তবে চিনের উস্কানিতে ওলি সরকার এই ধরনের কাজ করেছে বলে বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছে নেপাল সরকারকে। দলের অন্দরে চিনা-সখ্যতা নিয়ে শুরু থেকেই চাপা ক্ষোভ ছিল। তবে এবার সেই ক্ষোভ আরও বাড়তে শুরু করেছে। ইতিমধ্যেই জরুরি বৈঠকও সেরেছেন তিনি।

দীর্ঘদিনের বন্ধ ভারতের সঙ্গে চিনা উসকানিতেই সম্পর্ক খারাপ করে নেপাল। ভারতের তিনটি এলাকা নিজেদের মানচিত্রে এনে ফেলে নেপাল সরকার। যদিও ভারতের সঙ্গে নেপালের এই আচরণের ফল ভুগতে শুরু করেছেন নেপালের কমিউনিস্ট প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি। তাঁর দলেই এবার প্রবল বিক্ষোভ শুরু। এমনকী চাপের মুখে এখন প্রধানমন্ত্রীর কুর্সি হাতছাড়া হওয়ার উপক্রম।

বরাবর নেপালের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক মজবুত ছিল। তবে তাল কাটতে শুরু করে লাদাখে চিনা অনপ্রবেশের পর থেকে। নেপালের ওলি সরকারের অভিযোগ, ভারত নাকি নেপালের তিনটি জায়গায় জোর করে দখল করে রেখেছে। এরই কিছুদিন পরে বিহারে সীমান্ত এলাকায় নেপাল সেনাবাহিনীর গুলিতে ভারতীয় এক নাগরিকের মৃত্যু হয়।

যদিও এখনই নেপালের বিরুদ্ধে যুদ্ধংদেহী মনোভাবে রাজি নয় ভারত। বরং কিছুটা ধীরে চলো নীতি নিয়েছে দিল্লি। কূটনৈতিকস্তর থেকেই আলোচনার মাধ্যমে বন্ধু নেপালের দিকে আরও একবার হাত বাড়াতে তৈরি ভারত। যদিও নেপাল সরকারের যাবতীয় কার্যকলাপের ওপর সজাগ দৃষ্টি রাখছে ভারত। সূত্র: কলকাতা ২৪