নারী সদস্যকে মেরে কান ছিঁড়লেন চেয়ারম্যান!

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

সিরাজগঞ্জের চৌহালীতে ভিজিডি কার্ডের ভাগবাটোয়ারা নিয়ে আলেয়া খাতুন নামে এক নারী ইউপি সদস্যকে মারধরের ঘটনা ঘটেছে। উমারপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবদুল মতিন মন্ডল ওই নারী সদস্যকে মারধর করে কানের লতি ছিঁড়েছেন এবং বাম হাত ভেঙে ফেলেন বলে অভিযোগ উঠেছে। আহত নারী ইউপি সদস্যকে বুধবার (২৭ মার্চ) রাতে টাঙ্গাইল জেলার নাগরপুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

জানা যায়, বুধবার দুপুরে চৌহালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে ভিজিডি কার্ডের ভাগবাটোয়ারা নিয়ে উমারপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল মতিন মন্ডলের সঙ্গে নারী সদস্য আলেয়া খাতুনের বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে চেয়ারম্যান ক্ষুব্ধ হয়ে নারী সদস্যকে মারধর করেন। এতে ওই নারী সদস্যের বাম হাত ভেঙে যায় এবং কানের লতি ছিঁড়ে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়। পরে স্থানীয়রা তাকে দ্রুত উদ্ধার করে চৌহালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। অবস্থার অবনতি হলে রাতে তাকে টাঙ্গাইলের নাগরপুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

নারী সদস্য আলেয়া খাতুন অভিযোগ করেন, ‘নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে চেয়ারম্যান আমার প্রতি অন্যায় আচরণ করছেন। চলতি অর্থবছরের কোনও কার্ড আমাকে দেওয়া হয়নি। সে আমার চরিত্র নিয়েও কথা বলে। আমার নির্বাচনি এলাকার ভিজিডি কার্ডের বরাদ্দ চাইলে চেয়ারম্যান আমাকে মারপিট করে বাম হাত ভেঙে দেয় এবং কান ছিঁড়ে ফেলে।’ এ ঘটনায় আরেক ইউপি সদস্য আরফান আলী চেয়ারম্যানকে সহযোগিতা করেন বলেও অভিযোগ করেন ওই নারী সদস্য।

তিনি আরও জানান, ভিজিডি কার্ডের অনিয়মের বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অভিযোগ করায় তার ওপর এ হামলার ঘটনা ঘটেছে।

আহত নারী সদস্যের ছেলে মিলন পাশা জানান, আমার মাকে মারপিট ও লাঞ্ছিত করার ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যান মতিন মন্ডল ও তার সহযোগী ইউপি সদস্য আরফান আলীর বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

তবে ইউপি চেয়ারম্যান মতিন মন্ডল অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ইউপি সদস্য আলেয়া খাতুন যে অভিযোগ করেছেন তা সত্য নয়। বরং ভিডিজি কার্ডের কথা বলে ওই নারী সদস্যই জনসম্মুখে আমাকে কিলঘুষি দিয়ে জামার কলার ছিঁড়ে দিয়েছে।

চৌহালী থানার ওসি জাহাঙ্গীর আলম জানান, বিষয়টি জানার পর ঘটনাস্থলে পৌঁছামাত্রই দু’পক্ষ দু’দিকে চলে গেছেন। থানায় লিখিত অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

চৌহালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহা. আবু তাহির বলেন, ‘দুপুরে আমি যখন অফিসে বসেছিলাম তখন নিচে শোরগোল শুনতে পেলাম। একজন আরেকজনকে গালিগালাজ করছেন। তাৎক্ষণিক আমি বিষয়টি ওসিকে বলি। পরে পুলিশ এসে উভয় পক্ষকে সরিয়ে দেয়। নারী সদস্য আলেয়া খাতুন ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’