নাটোর-১ আসনে সমন্বয়হীনতা ঐক্যফ্রন্টে, ব্যাপক প্রচারনায় আ’লীগ-জাপা

বাগাতিপাড়া প্রতিনিধি:
নাটোর-১ (লালপুর-বাগাতিপাড়া) আসনে আওয়ামীলীগ প্রার্থী শহিদুল ইসলাম বকুল নৌকা ও জাতীয়পার্টির প্রার্থী আবু তালহা লাঙল প্রতীকের পক্ষে ব্যাপক প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু নির্বাচনের আর মাত্র ১৩ দিন বাঁকি থাকলেও ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী মনজুরুল ইসলাম বিমলের সাথে বনিবনা হয়নি স্থানীয় বিএনপি’র। ফলে বিএনপি’র সাথে সমন্বয়হীনতার কারনে ধানের শীষের প্রার্থী বিমলের পক্ষে নির্বাচনী মাঠে তেমন প্রচারনা লক্ষ করা যাচ্ছে না।

এ কারনে বিএনপির ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত এ আসনে নতুন কিছু ঘটার আভাস দেখছেন সূধীজনেরা। বিএনপির উপদেষ্টা ও সাবেক ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মরহুম ফজলুর রহমান পটল টানা তিনবার এ আসন থেকে বিএনপিকে বিজয়ী করেছিলেন। এরপর তিনিই প্রথম নাটোর জেলা থেকে মন্ত্রীত্ব লাভ করেন। তবে আওয়ামীলীগ এ আসন থেকে বার বার পরাজিত হওয়ায় ২০০৮ সালে জোটকে এ আসন ছেড়ে দিলে জাতীয় পার্টির আবু তালহা তৎকালীন বিএনপির হেভিওয়েট নেতা ও প্রতিমন্ত্রী ফজলুর রহমান পটলকে বিপুল ভোটে পরাজিত করে আসনে গেড়ে বসেন।

পরবর্তীতে ২০১৪ সালে বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহন না করায় বিনাভোটে আওয়ামীলীগ থেকে এমপি
হন অ্যাডভোকেট আবুল কালাম । এবার এ আসনে জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বকুলকে নৌকা প্রতীক দেওয়া হয়েছে। প্রতীক পাওয়ার পর থেকেই আওয়ামীলীগের প্রার্থী শহিদুল ইসলাম বকুল তার কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে সমান তালে নির্বাচনী প্রচারনায় মাঠ ঝাঁপিয়ে বেড়াচ্ছেন । দিন রাত চালিয়ে যাচ্ছেন গনসংযোগ।

অপরদিকে জাতীয় পার্টি এককভাবে মনোনয়ন দিয়েছেন সাবেক এমপি আবু তালহাকে। তিনিও ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা ও গনসংযোগ করছেন।

এদিকে শেষ মুহুর্তে বিএনপি’র চুড়ান্ত মনোনয়ন পাওয়া সাবেক প্রতিমন্ত্রী প্রয়াত ফজলুর রহমান পটলের স্ত্রী অধ্যক্ষ কামরুন্নাহার শিরিনকে পরিবর্তন করে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের মনজুরুল ইসলাম বিমলকে চুড়ান্ত প্রার্থী করা হয়।

প্রতীক বরাদ্দ পাওয়ার পর থেকে তিনি গনসংযোগ করলেও মাঠে নেই বিএনপি ও অঙ্গসংঠন। তার নিজ এলাকা লালপুর উপজেলার গোপালপুর পৌর শহরে পোস্টার লাগানো ও গনসংযোগ করতে দেখা গেলেও বাগাতিপাড়া উপজেলায় তার তেমন কোন প্রচারণা চোখে পড়ছেনা। তবে এর কারন হিসেবে স্থানীয় বিএনপির সাথে সমন্বয়হীনতাকে দায়ী করছেন বিএনপি নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা।

বাগাতিপাড়া উপজেলা বিএনপি’র সাধারন সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান বলেন, ধানের শীষ প্রতীক বরাদ্দ পাওয়ার পর এখন পর্যন্ত ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী মুনজুরুল ইসলাম বিমল উপজেলা বিএনপি’র সাথে কোনরূপ যোগাযোগ করেননি। তিনি নিজে নিজেই প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছেন।

এদিকে বিএনপি’র দলীয় কর্মীদের মধ্যে মামলা-হামলা ও গ্রেফতার আতংক বিরাজ করায় তারা মাঠে নামতে পারছেন না বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি। তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন স্থানে ধানের শীষের পোস্টার টাঙানো হলেও তা থাকছেনা ।

এ ব্যাপারে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সহ-সভাপতি তারিকুল ইসলাম টিটু বলেন, এ আসনে বিএনপিকে না দিয়ে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীকে মনোনয়ন দিয়ে দল ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবুও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনার স্বার্থে ধানের শীষ প্রতিকের পক্ষেই মাঠে নামতে প্রস্তুত আছেন নেতা-কর্মীরা।

ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী বিমলের সাথে দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে সমন্বয়হীনতা রয়েছে স্বীকার করে তিনি বলেন এ বিষয়ে দ্রুত হাই কমান্ডের উদ্যোগ নেওয়া উচিৎ।

সমন্বয়হীনতার বিষয়ে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী মনজুরুল ইসলাম বিমল মুঠোফোনে বলেন, বিএনপি’র সাথে কথা হচ্ছে। দুই-এক দিনের মধ্যে সব সমস্যা কেটে যাবে। বিএনপির নেতা-কমীরা তার পক্ষে এক যোগে নির্বাচনি প্রচারনায় মাঠে কাজ করবে এবং ধানের শীষের শতভাগ বিজয় সুনিশ্চিত করবে।

স/অ