নাচোলে পশু হাটে অতিরিক্ত টোল আদায়, নেই কোন নজরদারি

নিজস্ব প্রতিবেদক, চাঁপাইনবাবগঞ্জ
চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলের রেলস্টেশন পশু হাটে ক্রেতাদের কাছে অতিরিক্ত টোল আদায়ের মহা উৎসব। অতিরিক্ত টোল আদায়ের ব্যাপারে উপজেলা প্রশাসনের  নেই কোন নজর দারি। যার ফলে পশু ক্রয় করতে অতিরিক্ত টোল দিয়ে প্রতিনিয়ত হিমশিম খেতে হচ্ছে সাধারণ ক্রেতাদের।
পৌর এলাকার রেলস্টেশন পশু হাটে সরজমিনে গিয়ে জানা যায়, উপজেলার বেড়াচকি গ্রামের সাবুরুদ্দিনের ছেলে হালিম পশুহাট থেকে ১টি লাল রঙের ছাগল ৩ হাজার ৩৫০টাকায় ক্রয় করলে ইজারাদার বিপ্লব রহমান হালিমের কাছে থেকে ছাড়পত্রের জন্য ৪০০ টাকা আদায় করে। কিন্তু সাধারন ক্রেতাদের নজর ফাঁকি দিয়ে ইজারাদার পশু ছাড়পত্রের নিয়ম নীতির কোন তোয়াক্কা না করে নিয়ম  বর্হিভুতভাবে ৪০০ টাকা আদায় করলেও ১৩৬৬ নং পশু ছাড় পত্রে  টোল আদায়ের ঘরে টাকার কোন পরিমান উল্লেখ নেই।
অন্যদিকে নিয়ামত পুর উপজেলার দামপুরা গ্রামের জোহর আলীর ছেলে আঃ অহাব ৫হাজার ৫০০ টাকায় একটি ছাগি এবং দশ দিনের ছোট ২ টি ছাগল ক্রয় করেন। কিন্তু ইজারাদার অহাবের কাছে থেকে জোরর্পূর্বক ভাবে ৮০০ টাকা টোল আদায় করেন।
একই ভাবে উপজেলার খেসবা গ্রামের লুৎফল হকের ছেলে মিন্টু ১টি ছাগল ক্রয় করলে ইজারাদার ২৩৯ নং ছাড়পত্রে টোল আদায়ের ঘরে টাকার পরিমান উল্লেখ না করেই ৩০০ টাকা টোল আদায় করে।
অন্যদিকে গত ২১শে জুলাই গোমস্তাপুর উপজেলার পাইকার এজাবুলের নিকট থেকে নাচোল উপজেলার শিয়ালা গ্রামের আইনুল ৮ (আট) হাজার টাকা দিয়ে একটি খাসি খুরবানির জন্য ক্রয় করলে ক্রেতার কাছে থেকে ৬০০টাকা টোল আদায় করেন ইজারাদার।
পশু হাটে অবস্থানরত ক্রেতারা সাংবাদিকদের জানান, ইজারাদারা নিয়ম নীতির কোন তোয়াক্কা না করেই সাধারন ক্রেতাদের কাছে অতিরিক্ত টোল আদায় করছে। যা সাধারন ব্যবসায়ীদের কাছে ছাগল ক্রয় ক্ষমতা নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে । সরকারি টোল আদায়ের নিয়ম প্রতি ছাগল প্রতি ১৫০টাকা নেওয়ার কথা থাকলেও ইজারাদাররা সরকারি নিয়ম নীতির কোন তোয়াক্কা করছে না।
অন্যদিকে গত রোববার বিকালে নাচোল পৌরসভাধীন পশু হাটে সরোজমিনে গিয়ে জানা গেছে ইসলাম নামের জনৈক ব্যক্তি ৪৮ হাজার টাকা দিয়ে কুরবানির জন্য একটি গরু কিনলে সেখানে ক্রেতার কাছে টোল বাবদ ৬০০টাকা আদায় করেছে ইজারাদার। কিন্তু সেখানে ও রয়েছে অনিয়ম। টোল আদায়ের ঘরে কোন টাকার পরিমান না উল্লেখ করেই ইচ্ছামত টোল আদায় করছে সাধারন গরু ক্রেতাদের কাছে।সাধারন ক্রেতাদের দাবি উপজেলা প্রশাসন যদি নিয়মিত ভাবে এসব পশু হাটে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে ইজারাদারকে অতিরিক্ত টোল আদায়ে কারনে জেল জরিমানা বা অর্থদন্ড প্রদান করত তাহলে অনেক অংশেই অতিরিক্ত টোল আদায় কমে যেত।
এ বিষয়ে ছাগল ক্রেতা মিন্টু ও অহাব জানান, আমাদের কাছে থেকে নিয়ম বর্হিভূত ভাবে ইজারাদার ১টি ছাগলের ছাড়পত্রের জন্য ৪০০টাকা আদায় করেন। টাকা আদায় করলেও হাট কর্তপক্ষ টোল আদায়ের ঘরে টাকার কোন পরিমান উল্লেখ করেনী ।তাই উপজেলার সচেতন মহলের দাবি পবিত্র ঈদ উল আযহা কে সামনে রেখে পশু হাট ব্যবসায়ীরা অতিরিক্ত টোল আদায়ে সক্রিয়। তাই উর্দ্ধতন কর্তপক্ষের কাছে পশু হাট গুলোতে উপজেলা প্রশাসনের নজর দারি বাড়ানোর জন্য অনুরোধ করেন।
এ বিষয়ে রেলস্টেশন হাট ইজারাদার বিল্পব রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, বিভিন্ন দপ্তরে আমাদের অতিরিক্ত টাকা দিতে হয়, যার কারনে আমাদের অতিরিক্ত টাকা আদায় করতে হয়। ছাড়পত্রে টোল আদায়ের ঘরে টাকার পরিমান লেখা হয়না এটা সত্য। সংবাদটি প্রতিবেদক কে না ছাপানোর জন্য বিশেষ ভাবে অনুরোধ করেন তিনি।
এ বিষয়ে পৌর মেয়র আব্দুর রশিদ খাঁন ঝালুর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিষয়টি খুব দ্রুত তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবেন বলে প্রতিবেদক কে জানান।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কমকর্তা মুহাম্মদ নাজমুল হকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, বিষয়টি পৌর মেয়র কে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে বলে তিনি জানান।
স/অ