নগরীতে দোকানঘরে তালা দেয়ার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন

নিজস্ব প্রতিবেদক:

রাজশাহী নগরীর কাজলায় দোকানঘর লুটপাট করে তালা দেয়ার প্রতিবাদে ও তালা খুলে দেয়ার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ সোমবার বাংলাদেশ ফটোজার্নালিষ্ট এ্যাসোশিয়েশন রাজশাহী শাখার অফিসে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

সংবাদ সম্মেলনে জেলা প্রশাসক, পুলিশ প্রশাসনসহ যথাযর্থ কর্তৃপক্ষের নিকট দোকানের তালা খুলে দোকান বুঝিয়ে দেয়ার আকুল আবেদন জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে পাঠ করেন আব্দুস সোবহানের পুত্র সাইমুর সজিব।

সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, আব্দুস সোবহান (কাচু) ও নাজিম উদ্দিন (নাজু) মতিহার থানাধীন কাজালা বাজারে দুটি দোকান আছে। তাদের বাবা মৃত: সুলতান আলী জীবিত অবস্থায় আড়াই কাঠা জায়গা ( খতিয়ান নম্বর ১৫০১, আরএস ৭০১) তার পাঁচ সন্তানদের মধ্যে সমান ভাবে রেজিষ্ট্রী করে দেন। যে যার নামে জমি খারিজ করে নেয়। পরবর্তীতে তাঁরা ৫ সন্তান মিলে একটি মার্কেট নির্মান করে প্রত্যেকে দুটি করে দোকান ভাগে পান এবং নিজ নিজ ভাবে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিলেন।

পরে ২০০৫ সালে রাস্তা উন্নয়নের কাজে মার্কেটের কিছু অংশ সরকার একোয়ার করেন এবং তাদের ৪ জনের দোকান ঘর বাবদ নিজ নিজ টাকা পরিশোধ করে দেন। কাদের আলী, আবু তালেব, নজিম উদ্দিন, আব্দুস সোবহান নিজ নিজ নামীয় টাকা বুঝে পায়। পরবর্তীতে তাদের মধ্যে মো: আব্দুল কাদেরের পুরা অংশ সরকার একোয়ার করে নেয়। আবু তালেবের দুই ফিটের মতো জায়গা থেকে যায়, নাজিম উদ্দিন ও আব্দুস সোবহানের কিছু অংশ থেকে যায়। তারা ২০০৬ সালের মার্চ মাসে পুনরায় তাদের নিজ অবশিষ্ট অংশে দোকান নির্মাণ করেন এবং ব্যবসা করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিলেন। মৃত: সুলতান আলীর মেজো সন্তান মৃত আবু তালেব ২০১৮ সালে মৃত্যু বরণের আগে জীবিত থাকতে তিন মেয়ে ও তার একটি পালিত ছেলেকে তার অংশ রেজিষ্ট্রি করে দেন। মৃত আবু তালেব মৃত্যুর আগে তার ছোট মেয়ের জামাই মো: রুমুনকেও কিছু অংশ ব্যবসার জন্য দিয়ে যান।

লিখিত বক্তব্যে আরো বলা হয়, বর্তমানে মৃত আবু তালেবের বড় মেয়ের জামাই সাহাদৎ হোসেন রুমনের দোকান তার নিজের বলে দাবি করছেন এবং গত ৬ মাস যাবৎ বিভিন্নভাবে অত্যাচার করে আসছেন। এমতবস্থায় বাজার কমিটি শালিস ডাকেন সমাধানের জন্য। সমাধানে ডেকে তারা সমাধান করার নাম করে ফাঁকা স্ট্যাম্পে নাজিম উদ্দিন, আব্দুস সোবহান এবং তাদের বাকি অংশিদারদের স্বাক্ষর করে নেন। এই স্বাক্ষরের বলে তারা আগের বন্টন বাতিল করে নতুন বন্টন দাবি করেন। স্বার্থ পূরণ না হওয়ায় মৃত: আবু তালেবের বড় জামাই সাহাদৎ হোসেন, মেজ মেয়ে শাপলা, আব্দুল কাদের একত্রিত হয়ে গত ১২ সেম্পম্বর ২০ তারিখে পাশের দোকান নাজিম উদ্দিন স্টোর, রুমন স্টোর, আবিদ স্টোরে লুটপাট করে দোকান ঘরগুলোতে তাদের নিজেদের তালা মেরে দেন।

সংবাদ সম্মেলনে আরো বলা হয় পরে নাজিম উদ্দিন ও আব্দুস সোবহান ২৮ নং ওয়ার্ড কাউন্সীলরের কাছে বিচার চাইতে যান। তার কাছে বিচার না পেয়ে তারা মতিহার থানায় যান এবং মতিহার থানায় গেলে পুলিশ সাধারণ অভিযোগ নেন। পুলিশ জমি সংক্রান্ত বিষয়ে সমাধানের জন্য আমাদেরকে কোর্টের আশ্রয় নিতে বলেন। আমরা কোর্টের আশ্রয় নিই। লুটপাট ও দোকানে তালা মারার অপরাধে কোর্টে একটি মামলা দায়ের করি। দোকানে তালা মারার ফলে কাঁচামালগুলো নষ্ট হতে থাকে এবং অনেক টাকার লোকসান হয়। দোকানটি আমাদের আয়ের একমাত্র উৎস ছিলো। দোকানটি বন্ধ থাকায় আমরা আমাদের পরিবার নিয়ে এই মহামারির মধ্যে অনেক কষ্টের দিন যাপন করছি। জমি নিয়ে যে মামলা আদালতে বিচারাধীন সে মামলার যে রায় হবে তা আমরা মেনে নিবো। কিন্তু আদালতে বিচারাধীন যে বিষয় সেটা রায় না হওয়ার আগেই দোকান লুটপাট ও তালা মারা অমানবিক ও আইনত অপরাধ।

সাংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জেলা প্রশাসক, পুলিশ প্রশাসনসহ যথাযর্থ কর্তৃপক্ষের নিকট আমাদের আকুল আবেদন বিষয়টি বিবেচনা করে দোকানের তালা খুলে আমাদের দোকান বুঝিয়ে দিলে আমরা পরিবার পরিজন নিয়ে খেয়ে পরে বেঁচে থাকতে পারবো।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মো: আব্দুস সোবহান (কাচু), মো: নাজিম উদ্দিন (নাজু) ও তার স্ত্রী ফরিদা বেগম, ছেলে রুমন, সোবহানের ছেলে সাজ্জাদুর রহমান (সুজন) প্রমুখ।