১৮ বছর পর বড়াইগ্রামে আ’লীগ নেতা ডা. আয়নাল হত্যা মামলায় দু’জনের মৃত্যুদণ্ড

বড়াইগ্রাম প্রতিনিধিঃ

নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলা আওয়ামীলীগের তৎকালীন সভাপতি ও সাবেক মাঝগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা ডা. আয়নাল হক হত্যা মামলার রায়ে বিএনপি নেতা তোরাব আলী ও শামীম কায়সারকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে উভয়কে ১০ হাজার এক টাকা করে ২০ হাজার দুই টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত আসামী তোরাব আলী উপজেলার মহিষভাঙ্গা গ্রামের বাহার উদ্দিন মোল্লার ছেলে এবং শামীম কায়সার একই গ্রামের পলান মোল্লার ছেলে। তারা দুজনেই বনপাড়া পৌর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য।

একই সঙ্গে মামলায় ১১ জন আসামীকে বেকসুর খালাস প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া মামলার প্রধান অভিযুক্ত সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি অধ্যক্ষ একরামুল আলমসহ চারজন আসামী ইতিঃপূর্বেই মারা যাওয়ায় মামলা থেকে তাদেরকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।

সোমবার জনাকীর্ণ আদালতে নাটোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক সাইফুর রহমান সিদ্দিক আলোচিত এ হত্যা মামলার রায় দেন।

মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন তিনি নিজেই (অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম) আর আসামিপক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট মোজাম্মেল হক মন্টু।

মামলায় বাদীপক্ষের আইনজীবি নাটোর জজ কোর্টের পিপি সিরাজুল ইসলাম জানান, ২০০২ সালের ২৮ মার্চ রাত পৌনে নয়টার দিকে বিএনপি নেতাকর্মীরা বনপাড়া বাজারে ডা. আয়নাল হকের চেম্বারে হামলা করে। এ সময় তাকে টেনে হিঁচড়ে চেম্বার থেকে বের করে পিটিয়ে ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে তারা। একই সঙ্গে তারা মহিষভাঙ্গা গ্রামের আয়নাল হকের বাড়িসহ প্রায় ৫০টি বাড়িতে হামলা-ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। পরে আহত আয়নাল হকের স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরদিন তিনি মারা যান।

এ ঘটনায় ৩১ মার্চ নিহতের পুত্রবধূ বর্তমান পৌর মেয়র কেএম জাকির হোসেনের স্ত্রী নাজমা বেগম বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ ১৫ জনের নামে চার্জশিট দেয়। আদালত বিচারিক কার্যক্রম চলাকালে মোট ১০ জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্য নিয়ে অবশেষে দেড় যুগ পর সোমবার এই মামলার রায় ঘোষণা করেন।

এদিকে, মামলার রায়ে বাদী বিবাদী উভয় পক্ষই অসন্তোষ প্রকাশ করে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন বলে জানিয়েছেন।

স/অ