নওগাঁয় ভুল চিকিৎসায় গর্ভবতী মায়ের মরনাপন্ন অবস্থা

নিজস্ব প্রতিবেদক, নওগাঁ:
নওগাঁয় ভুল চিকিৎসার কারনে একজন গর্ভবতী মায়ের অবস্থা আশঙ্কাজনক। একই বিষয়ে পৃথক তিনটি পরীক্ষার রিপোর্ট ভিন্ন পাওয়া যায়। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতে চিকিৎসকের ভুল চিকিৎসা প্রদানের কারনে সেই মায়ের অবস্থা এখন মরনাপন্ন।
গর্ভে মৃত সন্তান নিয়ে চরম আশংকার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন সেই মা। এই দায় কে নেবে চিকিৎসক নাকি সেই পরীক্ষাগারগুলো। এ নিয়ে নওগাঁয় ব্যপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে মহাদেবপুর থানাধীন খোর্দ্দনারায়ন পুর গ্রামের এনামুল হক রতনের স্ত্রী খাদিজা বেগম বিয়ের পর প্রথম সন্তান সম্ভবা হন। গর্ভবর্তী হওয়ার ১২/১৩ সপ্তাহের মাথায় গত ২৮ আগষ্ট শহরের সেবাশ্রম সড়কে অবস্থিত রহমানিয়া ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে গাইনী চিকিৎসক ডাঃ আফরীন জাহান লাকী’র পরামর্শ নেন।
চিকিৎসক তার অলট্রাসনোগ্রাফী করতে বললে প্রথমে রহমানিয়া ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে টেস্ট করা হয়। রিপোর্ট নিয়ে সন্দেহ প্রকাশিত হলে ইউনিটেক প্যাথলজীতে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। এ দু’টি পরীক্ষার রিপোর্টে গর্ভের সন্তান মৃত বলে উল্লেখ করা হয়।
রিপোর্টের ভিত্তিতে ডাঃ লাকী মৃত সন্তানটি যাতে স্বাভাবিকভাবেই এ্যাবোরশন হয় তারই চিকিৎসাপত্র প্রদান করেন। সেই চিকিৎসা নেয়ার দুই সপ্তাহ পার হয়ে গেলেও বাচ্চা এ্যাবরোশন বা কোন উন্নতি হয় না। বাধ্য হয়ে দুই সপ্তাহ পর খাদিজা বেগমকে তার স্বামী ইসলামিক কমিউনিটি হাসপাতালে গাইনী বিশেষজ্ঞ ডা্ ঃকামরুন নাহার ফাতেমাকে দেখান। তিনি নতুন করে কোন পরীক্ষা নিরীক্ষা না করেই পূর্বের দুই রিপোর্টের ভিত্তিতে আবারো তাঁর মত করে মৃত সন্তান স্বাভাবিকভাবে যাতে এ্যাবরোশন তারই চিকিৎসা প্রদান করেন।
কিন্ত তারও প্রায় দুই সপ্তাহ পার হয়ে গেলেও কোন এ্যাবরোশন হয় না। পুনরায় ইসলামী হাসপাতালে ডাঃ ফাতেমা কামরুন নাহারের নিকট নিয়ে গেলে ইসলামী হাসাপাতালের নিজস্ব প্যাথোলজীতে আলট্রাসনোগ্রাফী করলে দেখা যায় গর্ভের সন্তান বেঁচে আছে। তখন ডাঃ ফাতেমা কামরুন নাহার আর কোন চিকিৎসা প্রদান করেন নি।
পরবর্তীতে গত ১৭ সেপ্টেম্বর সোমবার রোগীর অবস্থার অবনতি হলে আবারো ইসলামী হাসপাতালে ডাঃ ফাতেমা কামরুন নাহারের নিকট নিয়ে আসে। পুনরায় ইসলামী হাসাপাতালের নিজস্ব প্যাথলজীতে আলট্রাসনোগ্রাফী করা হয়। তখন দেখা যায় সন্তানটি মৃত। ভুল রিপোর্ট আর ভুল চিকিৎসার কারনে রোগীর অবস্থা সংকটাপন্ন হয়ে পড়ে।
ডাঃ ফাতেমা কামরুন নাহার এক পর্যায়ে বলেছেন পূর্বের দু’টি রিপোর্ট অর্থাৎ রহমানিয়া এবং ইউনিটেক প্যাথোলজীর রিপোর্ট সঠিক ছিল। ইসলামী হাসপাতালের রিপোর্ট ভুল হতে পারে। এরকম ভুল চিকিৎসার ক্ষেত্রে নতুন নয়।
এই সংবাদ পেয়ে স্থানীয় কিছু সমাজসেবী যুবক ইসলামী হাসপাতালে বিষয়টি নিয়ে জানতে চান। এক পর্যায়ে এ নিয়ে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। অবস্থা নিয়ন্ত্রনে পুলিশ সেখানে এসে হস্তক্ষেপ করে।
স্থানীয় সামাজিক নেতৃতৃ¦দানকারী যুবকরা দাবী করেছেন ইসলামী হাসপাতালে ডাঃ ফাতেমা কামরুন নাহার এর আগেও অনেকবার এরকম ভুল চিকিৎসার ঘটনা ঘটিয়েছেন। তাদের একমাত্র দাবী ডাঃ কামরুন নাহার ফাতেমাকে ইসলামী হাসপাতালে আর বসতে দেয়া যাবে না। তাহলেই তারা তদের আন্দোলন থেকে সরে আসবেন। না হলে ইসলামী হ্সাপাতালের বিরুদ্ধে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।