সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:
ইনস্টাগ্রাম তাদের স্টোরিজ ফিচারটি ধার করেছিলো স্ন্যাপচ্যাটের কাছ থেকে। এ নিয়ে ব্যবহারকারীরাও ইনস্টাগ্রামকে নির্লজ্জ আখ্যা দিয়েছিল। তাতে ইনস্টাগ্রামের ক্ষতি কিছু হয়নি বরং স্টোরিজ ফিচারটি যোগ করার কারণেই ঝড়ের গতিতে বাড়ছে তাদের জনপ্রিয়তা।
কিভাবে ধার করা আইডিয়া দিয়েই ইনস্টাগ্রামের জনপ্রিয়তা বাড়ানো সম্ভব হলো তা নিয়ে সংবাদ মাধ্যম রিকোডের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করেছেন প্রতিষ্ঠানটির সিইও কেভিন সিস্ট্রোম।
তিনি জানান, ইনস্টাগ্রাম কখনওই খারাপ অবস্থানে ছিলো না। কিন্তু স্টোরিজ ফিচার যুক্ত হওয়ার পর প্রত্যাহিক জীবনের খণ্ড চিত্র শেয়ার করার পরিমাণ বেড়েছে। যে হারে নতুন প্ল্যাটফর্ম স্টোরিজের জনপ্রিয়তা বাড়ছে তাতে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি পোস্ট করার ধরনটাই পাল্টে গেছে।
আগে ইনস্টাগ্রামে শুধু ভালো মানের ছবিগুলোই পোস্ট করতেন ব্যবহারকারীরা। সাধারণ মানের বা কম রেজুলেশনের ছবি তারা দিতে চাইতেন না। সমুদ্র, পাহাড়, রেস্টুরেন্ট, দামী খাবার ও পার্টিতে তোলা গ্ল্যামারাস ছবির ভিড়ে পায়ের ওপরে পা তুলে চা পানের ছবি দিতে ব্যবহারকারীরা কুণ্ঠাবোধ করতেন।
তাই প্রতিদিন যে সব ছবি তোলা হতো সেগুলো ফোনের গ্যালারি থেকে ইনস্টাগ্রামে গিয়ে পৌঁছাতো না। কিন্তু স্টোরিজ ফিচারটির কল্যাণে দিনের ছবি দিনে আপলোড করেই তা মুছে ফেলা যাচ্ছে। বন্ধুদের সঙ্গে দাঁত বের করা সেলফি দিলেও আর সমস্যা নেই। হোম ফিডে তা আর ঘুরে বেড়াচ্ছে না। সারাদিন কিভাবে কাটলো তা দেখানোর জন্য ২৪ ঘণ্টাই যথেষ্ট। সারা দিনের এক ঝলক দেখাতে ডেইলি ভিডিও জার্নাল হিসেবেও ব্যবহার করা হচ্ছে ইনস্টাগ্রাম।
বর্তমানে প্রতিদিন ইনস্টাগ্রাম স্টোরিজ ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৪০ কোটি। স্ন্যাপচ্যাটের পুরো অ্যাপ ব্যবহারকারীর সংখ্যার চেয়ে যা দুই গুণ বেশি। ইনস্টাগ্রামের ৩১ শতাংশ ব্যবহারকারী প্রতি মাসেই স্টোরিজ পোস্ট করে থাকে। প্রতি সপ্তাহে স্টোরিজ দেখে থাকেন ৪৭ শতাংশ ব্যবহারকারী। অপরদিকে, দ্বিতীয় প্রান্তিকে ৩০ লাখ ব্যবহারকারী হারিয়েছে স্ন্যাপচ্যাট।
এর অন্যতম কারণ হলো স্ন্যাপচ্যাটের জটিল ইউজার ইন্টারফেইস। অনেক ফিচারই খুঁজে পাওয়া যায় না এমন অভিযোগে অ্যাপটি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন ব্যবহারকারীরা। অন্যদিকে, ইনস্টাগ্রাম ব্যবহার করা খুবই সহজ। এতে ছবির ওপরে লেখা, স্টিকার, ফেইস ফিল্টার যুক্ত করা যায়। সম্প্রতি ইনস্টাগ্রামে পোল ফিচারটিও যুক্ত করা হয়েছে।
শুধু তাই নয়, নিউজ ফিডে স্টোরিজ থাকে একদম উপরে। এতে করে ইনস্টাগ্রাম ওপেন করা মাত্র চোখে পড়ে ফিচারটি। তবে স্টোরিজের একটি বড় সীমাবদ্ধতা হলো রি-পোস্টিং ফিচারের অনুপস্থিতি। কোনো কিছু ভাইরাল করতে হলে রি-পোস্টিং ফিচারটির প্রয়োজন পড়ে। স্টোরিজে ফিচারটি না থাকলেও স্ক্রিনশট নিয়েই রি-পোস্টিং ফিচারের কাজ চালিয়ে নিচ্ছেন ব্যবহারকারীরা।
স্টোরিজ নিয়ে কেভিন সিস্ট্রোমের ভাষ্য, দুই বছর আগে যখন স্টোরিজ উন্মোচন করা হলো তখন সবাই এটার সঙ্গে স্ন্যাপচ্যাটের তুলনা শুরু করলো। কিন্তু এখন আমরা বলতেই পারি, এই অবস্থানে আমরা নিজেদের চেষ্টায় পৌঁছেছি। এখন সবাই ইনস্টাগ্রামের সঙ্গে অন্য অ্যাপের তুলনা করে।
রিকোড অবলম্বনে