ধামইরহাটে ইটভাটার তাপে ১৫০ এক জমির ধান পুড়িয়ে দেয়ার অভিযোগে মানববন্ধন


ধামইরহাট (নওগাঁ) প্রতিনিধি:

নওগাঁর ধামইরহাটে ইটভাটার তাপে কৃষকের ১৫০ একর বোরো ধান নষ্টের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ধান ঘরে ওঠার শেষ মুর্হুতে এ ধরণের ক্ষতি হওয়ায় কৃষকদের মাঝে হতাশা নেমে এসেছে। দোষী ব্যক্তির শাস্তি ও ক্ষতি পুরণের দাবিতে রবিবার (১৭ এপ্রিল) বেলা ১১টায় উপজেলা পরিষদের সামনে কৃষকরা মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে। এছাড়া সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে দিয়েছেন অভিযোগও।

৫৪ জন কৃষকের স্বাক্ষরিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ধামইরহাট পৌরসভা ও উমার ইউনিয়নের তালঝারী ও বিহারীনগর গ্রামের কৃষকরা বোরো ধান রোপন করে তালঝারী ও বেড়াডাঙ্গা মাঠে। অধিকাংশ ধানের শীষ বের হয়েছে। কিছু দিনের মধ্যে ধান পাকতে শুরু করবে। গত শনিবার বিকেলে তালঝারী মাঠ সংলগ্ন এফএসবি ইটভাটা বন্ধ করে তার তাপ ছেড়ে দেয়। এতে ভাটার উত্তর দিকে প্রায় ১৫০ একর বোরো ধানের গাছগাছ ঝলসে যায়। গাছগুলো শুকিয়ে মরতে শুরু করেছে। এতে কৃষকরা মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছে। অধিকাংশ গরীব ও বর্গাচাষী। শেষ মুর্হুতে ধানগাছ মরতে শুরু করায় কৃষকরা হতাশ হয়ে পড়েছেন।

ভুক্তভোগি বিহারীনগর গ্রামের কৃষক মো.শফি উদ্দিন বলেন,তালঝারী মাঠে তিনি দুই একর জমিতে জিরাশাইল ধান রোপন করেছেন। শনিবার বিকেলেও তিনি মাঠে গিয়ে ধান দেখে গেছেন। কিন্তু শনিবার বিকেলে কোন এক সময়ে ইটভাটা থেকে তাপ ছেড়ে দেয়ায় তাদের ধানগাছগুলো ঝলসে গেছে। রবিবার সকালে জমিতে গিয়ে দেখেন মাঠের ৬০ থেকে ৭০ জন কৃষকের ধানগাছগুলো তাপের কারণে পুড়ে যেতে বসেছে।

রোববার বেলা ১১টার দিকে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা দোষী ব্যক্তিদের শাস্তি ও ক্ষতি পুরণের দাবীতে উপজেলা পরিষদের সামনে মানববন্ধন করে। মানবন্ধন শেষ উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ বিভিন্ন দপ্তরের ঘটনার সুষ্টু সমাধানের জন্য ৫৪ জন কৃষকের স্বাক্ষর সম্বলিত একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো.তৌফিল আল জুবায়ের বলেন,তার কার্যালয়ে কৃষকরা একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। তাপের কারণে ধানগাছগুলো ঝলসে গেছে। বাকী ধান গাছগুলোতে বেশি করে পানি স্প্রে করার জন্য কৃষকদের পরামর্শ দেয়া করা হয়েছে।

এব্যাপারে এফএসবি ইটভাটার স্বত্বাধিকারী আলমপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো.ফজলুর রহমান বলেন,গত শনিবার এ মওসুমে ভাটার ইট পোড়ানো শেষ হলে বিকেলে আগুন দেয়া বন্ধ করা হয়। আগুন বন্ধ করার পরও দুই/এক ঘন্টা ফ্যান চালানো উচিত ছিল। কিন্তু ভুলক্রমে ফ্যান চালু না রাখায় হটাৎ করে তাপ বের হতে থাকে। এতে ফসলের ক্ষতি হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে উমার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো.ওবায়দুল হক সরকারসহ কৃষকদের নিয়ে বৈঠকে বসা হয়েছিল। ক্ষতিপূরণ বিষয়ে আগামী মঙ্গলবার আবারও কৃষকদের নিয়ে বৈঠকে বসা হবে। আলোচনার মাধ্যমে কৃষকদের ক্ষতি বিষয়ে সমাধান হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।

ধামইরহাট থানার অফিসার ইনচার্জ মো.মোজাম্মেল হক কাজী বলেন,কৃষকের পক্ষে বিভিন্ন জায়গার অভিযোগ দায়ের করেছে। তার একটি অনুলিপি আমাকে দিয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দপ্তর তদন্ত করে প্রকৃত ঘটনা বের করবে। তারপর কৃষকরা আইনগত সহায়তা চাইলে আবশ্যই সহযোগিতা করা হবে।

এএইচ/এস