দ্বিতীয় যমুনা-পদ্মা সেতুর দাবিতে এশিয়ার বৃহত্তম মানবনবন্ধন!

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

পাবনাকে যুক্ত করে আরিচা-দৌলতদিয়া দ্বিতীয় যমুনা-পদ্মা বহুমুখী সেতু বাস্তবায়নের দাবিতে পাবনায় ১৪০ কিলোমিটার দীর্ঘ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

ঢাকাস্থ পাবনা জেলা উন্নয়ন ফোরামের আয়োজনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

এ মানববন্ধন দেশের তথা গোটা এশিয়া মহাদেশের মধ্যে সবচেয়ে বড় মানববন্ধন বলে দাবি করেন আয়োজকরা।

সোমবার বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত বেড়া উপজেলার কাজিরহাট থেকে ঈশ্বরদী এবং সদর উপজেলার টেবুনিয়া থেকে ফরিদপুর উপজেলার ডেমরা পর্যন্ত মানববন্ধন হয়।

এ সময় রাস্তার দুই পাশে সরকারি চাকরিজীবী, জনপ্রতিনিধি, ব্যবসায়ী, আইনজীবী, সাংবাদিক, শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ জেলার সর্বস্তরের মানুষ হাতে হাত রেখে দাঁড়িয়ে থাকেন। এই কর্মসূচিতে পাবনা জেলার দল-মত নির্বিশেষে ২ লক্ষাধিক মানুষ অংশ নেন।

পাবনা শহরে মানববন্ধনে পাবনা জেলা উন্নয়ন ফোরামের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এসকে হাবিবুল্লাহ, মহাসচিব অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর হোসেন মিয়া, সাবেক এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা মকবুল হোসেন, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ মির্জা একে শহিদুল ইসলাম, জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক কামিল হোসেন, পাবনা সাংস্কৃতিক পরিষদের সভাপতি ও পাবনা প্রেস ক্লাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি আখতারুজ্জামান আখতার, সদর উপজেলা ভাইস-চেয়ারম্যান শামসুন্নাহার রেখা, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী তৌহিদুল ইসলাম রুপন, খন্দকার রিপন, শিক্ষক হাসিনা আখতার রোজী, সাংবাদিক আব্দুর রশিদ প্রমুখ অংশ নেন।

এ ছাড়া জেলার অন্যন্য স্থানে জনপ্রতিনিধিসহ সর্বস্তরের নারী-পুরুষ অংশ নেন।

কর্মসুচিকে সামনে রেখে বেলা ১১টা থেকে বেড়া উপজেলার কাজীরহাট, বাঁধেরহাট, আমিনপুর, কাশীনাথপুর, সুজানগর উপজেলার বিরাহিমপুর, দুলাই, চিনাখড়া, সাঁথিয়া উপজেলার বনগ্রাম, মাধপুর, আতাইকুলা, সদর উপজেলার গঙ্গারামপুর, পুষ্পপাড়া, ক্যাডেট কলেজ, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বাস টার্মিনাল, মুজাহিদ ক্লাব, ডিসি অফিস চত্বর, পাবনা প্রেস ক্লাব, সরকারি এডওয়ার্ড কলেজ, মালিগাছা, টেবুনিয়া, ঈশ্বরদী উপজেলার দাশুরিয়া, ঈশ্বরদী রেল স্টেশন পর্যন্ত এবং টেবুনিয়া থেকে আটঘরিয়া, চাটমোহর, ভাঙ্গুড়া হয়ে ফরিদপুর উপজেলার ডেমরা পর্যন্ত ১৪০ কিলোমিটার দীর্ঘ এলাকাজুড়ে পাবনাবাসী তাদের প্রাণের দাবিতে হাতে হাত রেখে এ মানববন্ধন পালন করেন।

পাবনা জেলা উন্নয়ন ফোরামের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এসকে হাবিবুল্লাহ, মহাসচিব অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর হোসেন মিয়া জানান, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন ছিল নগরবাড়ী-আরিচাকে সংযুক্ত করা। এখন তারা শুধু নগরবাড়ী (কাজীরহাট), আরিচা ও দৌলতদিয়া সংযোগকারী ওয়াই টাইপ সেতু করার দাবি জানাচ্ছেন। পাবনাবাসীর দীর্ঘদিনের এ দাবি বাস্তবায়ন হলে রাজধানীর সঙ্গে যাতায়াতে ১০০ কিলোমিটার দূরত্ব কমে যাবে। পাবনায় নতুন নতুন শিল্প-কলকারখানা গড়ে উঠবে।উত্তরবঙ্গের সঙ্গে দক্ষিণবঙ্গের যোগাযোগে নতুন দিগন্তের সূচনা হবে।

যমুনা সেতুর ওপর ক্রমাগত চাপ কমাতে এবং উত্তরবঙ্গ ও দক্ষিণবঙ্গের সঙ্গে রাজধানীর স্বল্প সময়ে যাতায়াত নিশ্চিত করতে ও সড়ক দুর্ঘটনা রোধে পাবনাকে সংযুক্ত করে দ্বিতীয় পদ্মা সেতু নির্মাণ এখন সময়ের দাবিতে পরিণত হয়েছে।

তারা বলেন, ১৯৬৪ সালে নগরবাড়ী-আরিচা রুটে ফেরি চলাচল শুরু হওয়ার পর থেকেই বাণিজ্যিকভাবে এ অঞ্চল গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। দেশের উত্তর অঞ্চলের প্রবেশদ্বার হয়ে ওঠে পাবনা। পরবর্তীকালে ১৯৯৭ সালে বঙ্গবন্ধু সেতু হওয়ার পর নগরবাড়ী টু পাটুয়িরা ফেরি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। অর্থনৈতিকভাবে ঐতিহ্য হারিয়ে ভেঙে পড়ে এ জেলা।