দেশীয় কতিপয় ‘নায়িকা’র যত আবদার

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

 

নায়িকাদের আবদারে বরাবরই বিরক্ত হন সিনেমার পরিচালকেরা। একটা পরিকল্পনাকে নষ্ট করে দেন মাঝেমধ্যে গুটি কয়েক নায়িকা। এমন অভিযোগ নির্মাতাদের মুখে বহুবার শোনা হয়ে গেছে। নায়ক একজন নায়িকা দুজন। একজন পরিচিত চেহারার নায়িকাকে কাস্ট করা হলে অপরজন বেঁকে বসেন, শর্ত জুড়ে দেন, চারটা গানে দুইটায় অবশ্যই তাকে রাখতে হবে, কয়টা দৃশ্যে থাকতে হবে সেসব খুটিনাটি জেনে নেন। তবে একজন নির্মাতা বলছেন উঠতিদের মধ্যে এই প্রবণতা বেশি দেখা যায়, কতিপয় ‘নামের নায়িকা’দের কারণে বাকিদেরও বদনাম হয়।

কিছুদিন আগে শোনা গেল পরের চলচ্চিত্রে অভিনয়ের শর্তে জনৈক নায়িকা একটি আইটেম গানে অংশ নিয়েছেন। গণমাধ্যমে বিরক্ত প্রকাশ করে মন্তব্য দিয়েছেন নির্মাতা। এমনও শোনা গেছে একটি ছবিতে একজন নায়িকাকে চুক্তি করা হয়েছে। আরেক নায়িকাকে যখন চুক্তি করা হলো তখন পূর্বের চুক্তি  হওয়া নায়িকা আর ওই সিনেমায় অভিনয় করবেন না। কেন?  নতুন চুক্তিবদ্ধ নায়িকার জন্য তিনি প্রচ্ছন্ন হয়ে যাবেন অথচ তিনি প্রকটতা প্রকাশ করতেই এই সিনেমায় চুক্তি করেছিলেন।

সবকিছু ঠিক ঠাক থাকলেও অনেক নির্মাতার অভিযোগ নায়িকা শুটিঙের আগেরদিন নানা বাহানা শুরু করেন, এমনকী শিডিউলও ফাঁসিয়ে দেন। এসব বিষয়ে নির্মাতারা বিভিন্ন সময়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে খোলামেলাই কথা বলেন। এমনকী শুটিং সেটের মেকআপ রুমেও নির্মাতারা বিরক্ত হন। শুটিঙের আগেরদিন এটা করতে হবে ওটা করতে হবে।

ইদানীং কতিপয় প্রযোজক দ্বারা পরিচালককের নিকট অনুরোধ করার প্রবণতাও বেড়েছে বলে মনে করেন একজন নির্মাতা। দৃশ্য বাড়িয়ে দিতে হবে, এন্ট্রি টাইম এই সময় না, ওই সময়। কিংবা শুরুতেই দিতে হবে। নায়কের দৃশ্য এতো বেশি রাখা যাবে না। কতিপয় প্রযোজক আবার সেসব অনুরোধ নিয়ে যান নির্মাতাদের। সোমবার নির্মাতা সৈকত নাসির নায়িকাদের এমন আবদার নিয়ে একটি পোস্ট দিয়েছেন সোশ্যাল হ্যান্ডেলে।

সৈকত নাসির লিখেছেন, ‘সম্প্রতি একটি সিনেমার জন্য দেশের নামী দামি কিছু হিরোইনের সাথে মিটিং করেছিলাম, অবাক হয়ে দেখলাম তাদের প্রথম প্রশ্ন সিনেমাতে হিরোইন কয়জন? আমার কয়টা গান? আমার এন্ট্রি কত নাম্বার সিনে? এইসব কোন উত্তর দিতে আমি কখনোই প্রস্তুত থাকি না। মনে প্রশ্ন জাগে পৃথিবীর সিনেমার মাপকাঠিতে আমাদের সিনেমা আসলে কোথায় আছে? এদের দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকতে ইচ্ছে করে, কারণ কয়েকদিন পর এই এলিয়েন গুলারে আমরা পয়সা দিয়ে টিকিট কেটে চিড়িয়া খানা অথবা মিউজিয়ামে দেখবো।

তিনি বলেন, ‘দর্শক দেখতে চায় নতুন কিছু, গল্পের সিনেমা,ঐখানে একটা চরিত্রের এন্ট্রি বা প্রেজেন্টেশন গল্পের মাপকাঠিতে হয়। একটা চরিত্র একজন শিল্পীকে বাঁচিয়ে রাখতে পারে হাজার বছর।’

একজন নামী নির্মাতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলছিলেন, শাবানা ববিতাদের আমলে এসব ছিল না। তাঁরা গল্পে ঢুকে যেতেন। এছাড়া অন্য নায়িকার সঙ্গে প্যারালাল কাজ করতেও তাঁদের কোনো অনীহা ছিল না। এসব ইদানীং শুরু হয়েছে। এমন অনেক নায়িকা রয়েছে যারা পুরো সিনেমার শুটিং করে আসছে অয়থচ জিজ্ঞেস করলে গল্প বলতে পারবে না। তারা ব্যস্ত শুটিং স্পট থেকে ছবি তুলে ফেসবুকে প্রকাশ করতে।

 

সূত্র: কালেরকন্ঠ