দিনদুপুরে গৃহবধূকে গলা কেটে খুন

প্রকাশ্য দিনের বেলা ঈশ্বরদী পৌরশহরে মুক্তি খাতুন রিতা (২৭) নামের এক গৃহবধূকে গলা কেটে খুন করা হয়েছে। এ সময় রিতার শাশুড়ি নিলিমা খাতুন বেনুকেও (৫৫) গলা টিপে ও শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা করা হয়। সে সময় তিনি চিৎকার করলে হত্যাকারীরা পালিয়ে যায়।

বৃহস্পতিবার দুপুরে ঈশ্বরদী পৌরসভার মশুড়িয়া পাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করেছে ঈশ্বরদী থানা পুলিশ।

রিতা ওই এলাকার বায়োজিদ সারোয়ারের স্ত্রী।

পাবনা পুলিশ সুপার মো মহিবুল ইসলাম খান, ঈশ্বরদী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফিরোজ কবীর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

হত্যাকারীরা সংখ্যায় ৫ জন ছিল বল শাশুড়ি নিলিমা খাতুন বেনু উপস্থিত পুলিশ ও সাংবাদিকদের জানান।

ঈশ্বরদী থানার ওসি আসাদুজ্জামান জানান, অনেক বিষয় নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে, কী কারণে রিতাকে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, সিআইডির বিশেষ টিম এসে আলামত সংগ্রহ করার পর লাশ ময়নাতদন্ত করা হবে বলে জানান তিনি। রিতার শাশুড়ির কাছ থেকে পাওয়া কিছু নামের তালিকা ধরেও তদন্ত করা হচ্ছে।

প্রত্যক্ষদর্শী নিহত গৃহবধূ রিতার শাশুড়ি নিলিমা খাতুন বেনু জানান, তার ছেলে বায়োজিদ সারোয়ার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে চাকরি করেন। সেই সুবাদে বায়োজিদ সারোয়ার বেশকিছু মানুষকে রূপপুর প্রকল্পে চাকরিও দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার সময় ৫ জন যুবক চাকরির জন্য তার বাড়িতে আসে। বায়োজিদ সেই সময় বাজারে থাকায় ড্রইংরুমে বসিয়ে তাদের আপ্যায়ন করেন পুত্রবধূ মুক্তি খাতুন রিতা।

সে সময় তিনি তার ঘরে কোরআন পড়ছিলেন। হঠাৎ হত্যাকারীরা তার ঘরে ঢুকে গলা টিপে ও শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা করে। সে সময় তিনি চিৎকার শুরু করলে হত্যাকারীরা পালিয়ে যায়। পরে তিনি পুত্রবধূর ঘরে গিয়ে তার গলাকাটা লাশ পড়ে থাকতে দেখেন।

হত্যাকারীদের মধ্যে একজনকে চিনতে পেরেছেন নিলিমা খাতুন বেনু। তার নাম সাব্বির হাসান, বাড়ি নাটোর জেলার বড়াইগ্রাম উপজেলার জোনাইল চরগোবিন্দপুর গ্রামে। বাকিদের মুখে মাস্ক থাকায় তিনি চিনতে পারেননি বলে জানান।

নিহত গৃহবধূ রিতার স্বামী বায়োজিদ সারোয়ার জানান, তিনি রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের বাংলা পাওয়ার কোম্পানিতে চাকরি করেন। রূপপুর প্রকল্পে চাকরির জন্য তার নানির বাড়ির এলাকা থেকে কিছু মানুষ বাড়িতে আসবে তাই বাজারে গিয়েছিলেন বাজার করতে। এসে দেখেন তার স্ত্রী মুক্তি খাতুন রিতাকে গলা কেটে হত্যা করে পালিয়ে গেছে তারা। তিনি কাউকে দেখেননি। তবে তার মায়ের কাছ থেকে সব শুনেছেন।

এলাকাবাসী জানান, বায়োজিদ সারোয়ার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে চাকরির কারণে টাকার বিনিময়ে অনেক মানুষকে চাকরি দিয়েছেন। হয়তো চাকরির জন্য টাকা-পয়সা লেনদেনের বিষয়ে এ হত্যাকাণ্ড ঘটতে পারে।

সূত্র:যুগান্তর