তাসকিন-সাকিব বাকিদের ঘাটতিটা পুষিয়ে দিলেন

লিটন দাস এবং মুশফিকুর রহিমের অসাধারণ ব্যাটিংয়ের সঙ্গে বাংলাদেশের এই ম্যাচ জয় এবং সিরিজ জয়ে বোলারদের অবদানও কম নয়। বরং, প্রথম ম্যাচের তুলনায় দ্বিতীয় ম্যাচে বোলারদের নিবেদনকে আরও বেশি মনে হয়েছে। প্রথম ম্যাচের তুলনায় দ্বিতীয় ম্যাচে সাকিব-তাসকিন ছিলেন সবচেয়ে বেশি নিয়ন্ত্রিত, আফগানদের জন্য বিধ্বংসী।

দ্বিতীয় ম্যাচে দলের সেরা ও সফলতম বোলারই তাসকিন। রানও দিয়েছেন অনেক কম। প্রথম ম্যাচে ৫৫ রান দেয়ার পর আজ ১০ ওভারে দিয়েছেন মাত্র ৩১। উইকেটে নিয়েছেন ২টি। ব্যাটারকে অফস্ট্যাম্পের বাইরে বাড়তি জায়গা দেননি তেমন।

সবচেয়ে বড় কথা এ ম্যাচে বাংলাদেশের বোলাররা মোট ওয়াইড করেছেন ৫টি। তবে বাঁ-হাতি মোস্তাফিজুর রহমান আজও তিনটি ওয়াইড করেছেন। এছাড়া দুই অফস্পিনার মেহেদি হাসান মিরাজ ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ করেছেন একটি করে ওয়াইড।

স্পিন ট্রাম্পকার্ড সাকিবের বোলিংটাও ছিল প্রথম দিনের (৯ ওভারে ২/৫০) তুলনায় অনেক বেশি ধারালো এবং টাইট। আজ ১০ ওভারে ৩৮ রানে ২ উইকেট পেয়েছেন ‘চ্যাম্পিয়ন’ সাকিব।

দুই বাঁ-হাতি পেসার শরিফুল (৬ ওভারে ১/৩৫) আর মোস্তাফিজ (৮ ওভারে ১/৫৩) এবং অফস্পিনার মিরাজ (১০ ওভারে ১/৫২) প্রথম দিনের মত এত মিতব্যয়ী আর সমীহ জাগানো বোলিং করতে না পারলেও সবাই উইকেট পেয়েছেন।

আগের ম্যাচে এক ওভার বোলিং করে এক উইকেট পাওয়া অফস্পিনার রিয়াদ এবং এদিন হাত ঘোরানো আফিফও বল করেই উইকেট দখল করেছেন। দ্রুত গতির তাসকিন আর স্পিনার সাকিব- দু’জন মিলে প্রথম ম্যাচের চেয়ে ১৯ রান কম দেয়ায় বাকিদের বলে বেশি রান উঠলেও তা পুষিয়ে গেছে। আর সব বোলার উইকেট পাওয়ায় আফগানরা এদিনও আগের ম্যাচের প্রায় কাছাকাছি, মাত্র ২১৮ রানে অলআউট হয়ে যায়।

প্রথম ম্যাচে আফগান ফাস্ট বোলার ফজল হক ফারুকি প্রথম তিন ওভারে ৯ রানে লিটন, তামিম, মুশফিক এবং ইয়াসির আলী রাব্বিকে আউট করে টাইগারদের পেছনের পায়ে ঠেলে দিয়েছিলেন। ১৮ রানে চার টপ অর্ডার হারানো বাংলাদেশ এরপর ৪৬ রানে ৬ উইকেট খুইয়ে ফেললে অবস্থা অনেক নাজুক হয়ে পড়েছিল। সেটা চোখেও পড়েছে অনেক বেশি। প্রথম ম্যাচে জয়ের চেয়ে সেটাই নিয়েই কথা হয়েছে বেশি।

কিন্তু তামিম ইকবাল বাহিনীর টিম পারফরমেন্সে সেটাই যে একমাত্র ব্যর্থতা ছিল, তা কিন্তু নয়। খালি চোখে বোলিংটা খুব ভাল মনে হলেও বোলারদেরও কিছু ঘাটতি ছিল।

কোনো ‘নো বল’ না করলেও ২৩ ফেব্রুয়ারি জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের বোলাররা ১৩টি ওয়াইড ছুড়েছিলেন। আফগানরা তা কাজে লাগাতে পারলে নির্ঘাত তাদের স্কোর হতো আরও বড়। এর মধ্যে পেসার তাসকিন সর্বাধিক ৬টি ওয়াইড করেছিলেন। বাঁ-হাতি মোস্তাফিজ আর সাকিব তিনটি করে এবং শরিফুল করেছিলেন ১টি ওয়াইড।

শেষ পর্যন্ত দুই তরুণ আফিফ হোসেন ধ্রুব আর মেহেদি হাসান মিরাজের অসামান্য ব্যাটিং দক্ষতায় দল জিতলেও বোলারদের এতগুলো ওয়াইড ছোড়া টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজনের চোখ এড়ায়নি। টিম পারফরমেন্সের চুলচেরা বিশ্লেষণ করতে গিয়ে তিনি ঠিক বোলারদের ওই মাত্রাতিরিক্ত ওয়াইড করার বিষয়টি তুলে ধরেন।

বোলারদের পারফরমেন্সের মূল্যায়ন করতে গিয়ে টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ বলেছিলেন, ‘প্রথম দিন আমরা কিছু অতিরিক্ত ডেলিভারি দিয়েছে। মানে ওয়াইড করেছে। আমি মনে করি বোলাররা দারুণ বল করেছে। সবাই ব্রেক থ্রু দিয়েছে। সাকিব জোড়া উইকেট নিয়েছে। যদিও আমি সাকিবের থেকে আরও বেশি কিছু আশা করি। সাকিব আরও কিছু করবে এ বিশ্বাস আছে আমার।’

মোস্তাফিজ আর শরিফুলের প্রশংসা করে তিনি বলেছিলেন, ‘এক্সিলেন্ট।’ তবে তাসকিনের আরও কিছু কাজ বাকি আছে বলে জানিয়েছিলেন। ‘হি বোল্ড ওয়েল। ফাস্ট স্পেলে আমার মনে হয় একটু বেশি উইকেটের বাইরে বল করেছে। কিছু ওয়াইড হয়েছে। ব্যাটসম্যানকে খেলাতে পারলে আরও ভাল হতো।’

বোঝাই যায় টিম ডিরেক্টরের কথা মন দিয়ে শুনেছেন তাসকিন। আজ দ্বিতীয় ওয়ানডেতে তিনি একটি ওয়াইডও করেননি। শুধু ওয়াইড না করাই নয়, শুক্রবার অনেক বেশি ভাল জায়গায় বল ফেলেছেন এ এক্সপ্রেস বোলার।

 

সূত্রঃ জাগো নিউজ