মঙ্গলবার , ৪ এপ্রিল ২০২৩ | ১৩ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরীর খবর
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

তানোরে পুকুর ভরাট, প্রশাসনের ভুমিকা নিয়ে প্রশ্ন?

Paris
এপ্রিল ৪, ২০২৩ ৫:০৬ অপরাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক :

রাজশাহীর তানোরে পরিবেশ দুষণ ও জীববৈচিত্র্য হুমকিতে ফেলে বহিরাগত লাঠিয়াল বাহিনীর পাহারা বসিয়ে চলছে পুকুর ভরাট। উপজেলার চাঁন্দুড়িয়া ইউনিয়নের (ইউপি) হাড়দহ মাঠে নাইস গার্ডেন সংলগ্ন প্রায় ৭০ বিঘা আয়তনের এসব পুরাতন পুকুর ভরাট করা হচ্ছে। প্রায় ৭০ বিঘা আয়তনের পুরোনো কয়েকটি পুকুর ভরাট করা হচ্ছে।

গত কয়েক দিন ধরে রাতে এই ভরাটের কাজ চলছে। সেখানে বিনোদন কেন্দ্র (পার্ক) নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে একটি প্রভাবশালী চক্র। এদিকে পুকুর ভরাটে আঞ্চলিক সড়কে চলাচল নিষিদ্ধ ১০ চাকার ড্রাম ট্রাক ব্যবহার করা হচ্ছে। মাটি ভর্তি এসব ট্রাকের ওজন প্রায় ৪০ টন। অতিরিক্ত ওজনের কারণে প্রায় শত কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত তানোর-বায়া আঞ্চলিক সড়কের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হচ্ছে। কিন্তু রহস্যজনক ভাবে অজ্ঞাত কারণে জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসন  নিরব ভূমিকা পালন করছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বহিরাগত লাঠিয়াল বাহিনীর পাহারা বসিয়ে প্রতিদিন রাত ১০টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত পুকুর ভরাট করা হচ্ছে। গত ২ এপ্রিল রোববার সরেজমিন দেখা গেছে, উপজেলার চাঁন্দুড়িয়া ইউনিয়নের হাড়দহ নাইস গার্ডেন-সংলগ্ন  এসব পুকুর ভরাটের কাজ চলছে। পাশের এলাকা থেকে ডাম্প ট্রাকে মাটি এনে ফেলা হচ্ছে পুকুরে। স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, কয়েক দিন ধরেই রাতে এভাবে ভরাট করা হচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ছোট-বড় ওই পুকুরগুলোর আয়তন ছিল প্রায় ৭০ বিঘা। মাস দুয়েক আগে নাইস গার্ডেনের মালিক হাসান কবিরের কাছ থেকে রাজশাহী মহানগরীর কলেজ শিক্ষক জুয়েল নিজের ও স্ত্রীর নামে পুকুর গুলো কিনে নেন। মাছ চাষের জন্য পুকুর কিনলেও জুয়েল ওই জায়গায় বিনোদন কেন্দ্র গড়ে তুলতে ইতিমধ্যে কর্মযজ্ঞ শুরু করেছেন।

জানা গেছে, প্রাকৃতিক জলাধার সংরক্ষণ আইন, ২০০০ অনুযায়ী, কোনো পুকুর, জলাশয়, খাল ও লেক ভরাট করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। পরিবেশ সংরক্ষণ আইনেও (২০১০ সালে সংশোধিত) যেকোনো ধরনের জলাশয় ভরাট করা নিষিদ্ধ। এ বিষয়ে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) তানোর উপজেলা শাখার সভাপতি মফিজ উদ্দিন বলেন, মুক্ত জলাশয় উদ্ধার করা না গেলে পরিবেশের চরম বিপর্যয় ঘটবে। পুকুর ভরাট না করেও বিনোদন কেন্দ্রটি অন্যত্র করা যেতো। তিনি বলেন, দুঃখজনক হলেও সত্য সব জেনে বুঝেও এবিষয়ে প্রশাসন নিরব।

এসব পুকুর ভরাট কাজে নিয়োজিত ম্যানেজার সেলিম বলেন, মূলত ঝামেলা এড়াতে রাতে পুকুর গুলো ভরাট করা হচ্ছে। ভরাটের আগে জমির শ্রেণি কেমন ছিল, জানতে চাইলে তিনি বলেন, কাগজ-কলমে এটি ধানি জমি। তবে পুকুরে পানি ছিল। পুকুর ভরাটের বিষয়ে জুয়েলের কাছে মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এখন আমি কোচিং সেন্টারে ক্লাসে আছি, এ বিষয়ে আপনার সঙ্গে পরে কথা হবে।

রাজশাহী পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক কবির হোসেন বলেন, ‘জমির শ্রেণি কী, সেটা না দেখে কিছু বলা যাবে না। তবে পুকুর হলে সেটা ভরাটের কোনো সুযোগ নেই। এরকম হয়ে থাকলে সরেজমিন তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও পঙ্কজ চন্দ্র দেবনাথ বলেন, গত বৃহস্পতিবার দুপুরে পুকুর ভরাট করা স্থানে অভিযান চালিয়ে কাউকে পাননি। পরে পাশের চান্দুড়িয়া ইউনিয়নের পৃথক দুটি স্থানে মাটি কাটার যন্ত্র ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে।

এবিষয়ে ভেঁকু দালাল মেসের আলী বলেন, সিস্টেমে কাজ চলছে, এখানে তো বাধা দেবার কিছু নাই, তাদের লোক দেখানো অভিযান করতে হবে তাই করছে। এসব দেখে দেখে আমরা অভ্যস্ত হয়ে গেছি।

সর্বশেষ - রাজশাহীর খবর