তানোরের ঘটক তাছির বিয়ে না করেও দিয়েছেন ৮ হাজার ৪৯টি বিয়ে

নিজস্ব প্রতিবেদক:

রাজশাহীর তানোরে নিজে বিয়ে করতে না পারলেও ২০ বছরে ৮ হাজার ৪৯ জনের বিয়ে দিয়েছেন ঘটক তানোর পৌর সভার ১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর তাছির মন্ডল (৪১)। ২০০২ সাথে প্রথম দিকে সখের বসে বিয়ে দেযার কাজ শুরু করেন তিনি। কিন্তু পরে বিভিন্ন এলাকার লোকজন আমার কাছে তাদের ছেলে-মেয়েদের বিয়ের জন্য পাত্র-পাত্রীর খোঁজে আসতে শুরু করেন। এভাবেই শুরু তাছিরের ঘটক হয়ে উঠার গল্প।

তাছির মন্ডল বলেন, প্রথমে আমার নিজ এলাকার ছেলে-মেয়েদের বিয়ের ঘটকালি করতাম। পরবর্তীতে রাজশাহী, নওগাঁ, চাঁপাইনবাবগন্জসহ বিভিন্ন এলাকার ছেলে মেয়েদের বিয়ে ঘটকালি শুরু করি।  ২০০২ সাল থেকে আজ পর্যন্ত তিনি ঘটকতালি করে ৮ হাজার ৪৯ জনের বিয়ে দিয়েছেন। এর মধ্যে প্রায় সাড়ে ৩০০ বিয়ে টিকেনি। বাকি সবগুলো দম্পতি ভালো আছেন, সুখে সংসার করছেন। এদের অনেকেই এখনো তার সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলছেন এখনো বলেও তিনি জানান।

এই ঘটক বলেন, গত বুধবার ৪ জানুয়ারী তিনি ঘটকলি করে মান্দার ফেরিঘাট জৈনক ব্যক্তির কন্যার সঙ্গে মোহনপুর উপজেলার পাকুড়িয়া এলাকার এক ব্যক্তির পুত্রের বিয়ে দিয়েছেন। এই ঘটকালি করার সুবাদেই এলাকার তার রয়েছে ব্যাপক সুনাম। এলাকার সবাই তাকে ঘটক তাছির নামেই চিনেন। কিন্তু পরবর্তীতে গত ২০১৫ সালে এলাকার ভোটাররা তাকে জোর করে তানোর পৌর সভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে দাঁড় করিয়ে দেন এবং বিপুল ভোটে কাউন্সিলর নির্বাচিত করেন।

২০২১ সালে ভোটাররা আবারো তাকে ভোটে দাঁড় করিয়ে পুনরায় কাউন্সিলর নির্বাচিত করেন। এখনো তিনি পর পর দুইবার কাউন্সিলর রয়েছেন। তবে, বিয়ে দিয়ে তিনি সর্বনিম্ন ১০ হাজার টাকা এবং সর্বোচ্চ ৬০ হাজার টাকা পর্যন্ত পেয়েছেন বলেও জানান তিনি। নিজে বিয়ে করছেন না কেনো এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পাকা বাড়ি করার পর বিয়ে করবেন।

এলাকাবাসী জানান, ঘটক তাছির কাউন্সিলর একজন সাদা মনের মানুষ। ঘটকতালি করার কারণে এলাকার প্রায় প্রতিটি পরিবারের সাথে রয়েছে তার মধুর সম্পর্ক। সে সকলের সাথেই হাসি মুখে কথা বলার পাশাপাশি যেকোনো বিপদে আপদে ডাকলেই ছুটে যান।

তার বিষয়ে তানোর পৌর সভার ১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ঘটক তাছির মন্ডল বলেন, গত ২০ বছরে ৮ হাজার, ৪৯ টি বিয়ে দিয়েছি, বছরে প্রায় ৪০০ টি বিয়ের ঘটকালির মাধ্যমে বিয়ে দিয়েছি। প্রায়দিনই তার ঘটকালির মাধ্যমে বিয়ে সম্পূর্ণ হয়। তিনি বলেন, এমনও দিন গেছে আমার ঘটকালিতে একই দিনে ৫-৬ টা পর্যন্ত বিয়ে হয়েছে।

বিয়ের ঘটকতালি করে বিয়ে দিলে আমাকে তারা খুশি মনে সর্বনিম্ন ১০ হাজার টাকা দেন। অনেকে বেশী দেন। সর্বোচ্চ ৬০ হাজার টাকাও আমি পেয়েছি। যার যেমন সমর্থ্য সে তেমনই টাকা আমাকে খুশি মনে দেন। আমি জোরাজুরি করে কোন টাকা নিই না। পাকা বাড়ি করে এবার নিজে বিয়ে করবেন বলেও জানান তিনি।

তানোর পৌর সভার মেয়র ইমরুল হক বলেন, ঘটক তাছির কাউন্সিলর এলাকার মানুষের কাছে খুবই জনপ্রিয় একজন ঘটক। সে মুলত ঘটক তালি করেই জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন। আমি তার দীর্ঘায়ু ও মঙ্গল কামনা করছি। সে এখনও বিয়ে করেনি।

জি/আর