ঢাকায় ভাতের মধ্যে একটি চুল পেয়ে শিশু গৃহকর্মী হত্যার পর লাশ গুমের চেষ্টা করলো ডিজে

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

১০বছর বয়সী শিশু সাথী দুইমাস হল কাজ করতো ঢাকার দক্ষিণখানে কাজল রেখা নামে এক নারীর বাসায়।

কাজল রেখা পেশায় ডিস্ক জকি বা ডিজে। সাথীর বাড়ি ময়মনসিংহের ত্রিশালে।

দক্ষিণখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তপন চন্দ্র সাহা বিবিসি বাংলাকে বলেন, একেবারেই তুচ্ছ কারণে সাথীকে হত্যা করা হয়েছে।

এর আগেও বিভিন্ন সময় কাজল রেখা সাথীকে মারধর করতো।

গত ২৩শে মে সাথী ভাত রান্না করে। পরে ভাতের মধ্যে একটা চুল দেখতে পায় কাজল রেখা।

এরপর কাজল রেখা সাথীকে প্রথমে কাঠের খুন্তি এবং স্টিল দিয়ে মেরে শরীরের বিভিন্ন স্থানে ক্ষত করে দেয়।

ওসি তপন চন্দ্র সাহা বলছিলেন সাথীকে হত্যার পূর্নাঙ্গ বর্ণনা কাজল রেখা তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীতে দিয়েছেন।

সাথীর মূল আঘাত লাগে মাথায়, যখন কাজল রেখা তার চুল ধরে দেয়ালের সাথে ধাক্কা মেরে মাথা ফাটিয়ে ফেলে।

এরপর তাকে গলায় পা দিয়ে চেপে ধরে হত্যা করে।

‘লাশ গুম করার চেষ্টা’

মরদেহ লুকানোর জন্য প্রথমে একটা সিলভারের হাড়ির মধ্যে লুকিয়ে তারউপর কাপড়চোপড় দিয়ে ঢেকে একটা ঢাকনা দিয়ে রাখে কাজল রেখা।

সারারাত এভাবেই রাখার পর সকালে তার বাসা থেকে খানিকটা দূরে তার মা এবং মামাকে গিয়ে ঘটনাটি জানায়।

পরে সে তার নানীর সাথে গিয়ে একটা ল্যাগেজ কিনে আনে সাথীর মরদেহ গুম করার জন্য।

পুলিশের এই কর্মকর্তা বলছিলেন তার মা, নানী এবং মামা শরিফুল এই মরদেহ গুম করার কাজে তাকে সহায়তা করে।

পুলিশের হাতে আটক যেভাবে

২৪শে মে সকাল এগারোটার দিকে লাশভরা ব্যাগটি নিয়ে একটি রিক্সায় উঠেন তার মামা শরিফুল। পেছনে আরেকটি রিক্সায় ছিলেন কাজল রেখা।

পুলিশ জানায়, তাদের উদ্দেশ্য ছিল আব্দুল্লাহপুর-শ্যামলী বাস কাউন্টারে কোন একটা গাড়ীতে টিকেট কেটে সেই বাসের লকারে লাশসহ লাগেজটি রেখে পালিয়ে যাওয়া।

কিন্তু পথের মধ্যে কোটবাড়ী রেলগেটে একটা পুলিশের তল্লাশি চৌকিতে তারা মামা ধরা পরেন। এসময় পুলিশ তাকে আটক করেন।

পিছন থেকে কাজল রেখা দেখতে পেয়ে পালিয়ে যায়।

পরে গত ২৬ তারিখে পুলিশ কাজল রেখা এবং তার মাকে গ্রেফতার করলে তারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেন।

এদিকে এ ঘটনায় সাথীর বাবা বাদী হয়ে মামলা করেছে।

সাথীর বাবা রহমত আলীর সাথে যোগাযোগ করার একাধিক বার চেষ্টা করলে সম্ভব হয়নি।

কাজল রেখার মামা শরিফুল এখন পুলিশের রিমান্ডে রয়েছে। অন্যদিকে সে আর এবং তার মা এখন জেল হাজতে রয়েছে।