ডাক্তারের ঘোষণা করা গর্ভের মৃত সন্তান অ্যাম্বুলেন্সে জীবিত প্রসব!

গর্ভের সন্তান মৃত বলে ঘোষণা দেন চিকিৎসক। এর পর স্বাভাবিকভাবেই জীবিত সন্তান প্রসব করেছেন প্রসূতি। এমন ঘটনা ঘটেছে চরফ্যাশন পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের হাসপাতাল রোডে।

রোববার বিকাল সাড়ে ৫টায় অ্যাম্বুলেন্সে এ সন্তান জন্ম দেন নুরাবাদ ইউনিয়নের বাসিন্দা মো. শরিফের স্ত্রী ফাতেমা বেগম (২৩)।

ভুক্তভোগী ফাতেমা বেগম ও তার পরিবার অভিযোগ করে বলেন, শনিবার সকালে প্রসূতির প্রসব ব্যথা হলে স্থানীয় ধাত্রী নাজমা বেগম প্রাথমিকভাবে নরমাল প্রসবের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। পরে ওই নারীর রক্তক্ষরণ হলে রাতে উপজেলার একটি বেসরকারি ক্লিনিকে নেয়া হলে কর্মরত ডা. মরিয়ম আক্তার সোনিয়াকে দেখালে তিনি আল্ট্রাসনোগ্রাম করেন। আল্ট্রা রিপোর্ট দেখে প্রেসক্রিপশনে গর্ভের ভিতরে সন্তান মৃত উল্লেখ করে ওই রোগীকে বরিশাল হাসপাতালে প্রেরণ করেন। তবে আল্ট্রাসনোগ্রাম রিপোর্টে চিকিৎসক সই করেননি।

এদিকে বরিশাল না গিয়ে রোববার দুপুর সাড়ে ১২টায় রোগীকে চরফ্যাশন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায় তার পরিবার। জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক নুর মোহাম্মদ তালুকদার আগের রিপোর্ট দেখে রোগীর প্রেসক্রিপশনে আইইউডি উল্লেখ করে হাসপাতালে ভর্তির অনুমতি দেন।

রোগীর এক স্বজন জানান, চরফ্যাশন হাসপাতালে ভর্তির পরে প্রসূতি বিভাগের দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক হাসপাতালে রোগীর অপারেশন করা সম্ভব না বলে রোগীকে বরিশাল নিয়ে যাওয়ার জন্য পরামর্শ দেন। সন্ধ্যায় স্থানীয়দের কাছ থেকে টাকা পয়সা ধার-দেনা করে অসহায় ওই রোগীকে অ্যাম্বুলেন্সে নিয়ে বরিশালের পথে রওয়ানা হয় স্বজনরা। এদিকে হাসপাতাল সড়কেই প্রসূতি জীবিত নবজাতক পুত্র সন্তান প্রসব করেন। এ সময় একটি বেসরকারি হাসপাতালে ওই রোগীকে ভর্তি করে তার পরিবার।

এ বিষয়ে ডা. মরিয়ম আক্তার সোনিয়া সঠিক তথ্য গোপনের উদ্দেশ্যে সংবাদকর্মীদের কাছে নানানভাবে তথ্য উপস্থাপন করে।

এছাড়াও আইইউডির অপব্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, আল্ট্রায় গর্ভের শিশুর হার্টবিট না থাকায় আইইউডি উল্লেখ করে দ্বিতীয়বার দেখার জন্য বরিশাল রেফার্ড করা হয়েছে।

চরফ্যাশন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শোভন কুমার বসাক বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন বলে জানিয়েছেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমিন বলেন, বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হবে।