টার্কি পালনে ভাগ্য খুলেছে বাগমারার আশরাফুলের

বাগমারা প্রতিনিধি:
২০১৭ সালে সবে উচ্চ মাধ্যমিকের গন্ডি পেরিয়েছে আশরাফুল ইসলাম। শৈশব থেকেই নিজের পায়ে দাঁড়ানোর অদম্য বাসনা তার। পিতার ধান চালের ব্যবসার সুবাধে তারও মনে প্রেরনা জাগে নতুন কোন ব্যবসায় জড়ানোর। তার অনুসন্ধানী মনে ঘুরতে থাকে নানান ব্যবসায়ীক কর্মকাণ্ড। মনের স্বপ্ন বাস্তবে রুপ পায় ২০১৭ সালের নভেম্বর মাসে। আশরাফুল ইউটিওব দেখে সিদ্ধান্ত নেয় টার্কি পাখি পালন করার। এ সময় তার হাতে কোন ক্যাশ নেই। পিতার কাছে টাকা চেয়ে তাকে নিরাস হতে হয়। আশরাফুল সিদ্ধান্ত নেয় তার শখের পালসার মোটরসাইকেলটি বিক্রি করার। মাত্র ১ লক্ষ ৪০ হাজার টাকায় মোটরসাইকেলটি বিক্রি করে ওই মাসেই ইউটিউব দেখে ঠিকানা সংগ্রহ করে জয়পুরহাট থেকে ওই টাকায় চার মাস বয়সী ৪৫ টি টার্কি পাখি সংগ্রহ করেন আশরাফুল। শুরু হয় তার সংগ্রামী জীবন।

নিজের গ্রাম ভবানীগঞ্জ পৌরসভার দর্গাপাড়া মহল্লায় গড়ে তুলেন টার্কির খামার। মাত্র তিন মাসের ব্যবধানে বাচ্চা টার্কিগুলো বড় হয়ে ডিম দেওয়া শুরু করে। আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়না তাকে । এভাবে ডিম থেকে বাচ্চা ফুটিয়ে মাত্র ৩/৪ মাসের ব্যবসাধনে আশরাফুলের খামারে এখন টার্কি পাখির সংখ্যা ১২০ টি । বর্তমানে বাজারে এর মূল্য প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ টাকা। আশরাফুল এসব টার্কি থেকে সংগ্রহকৃত ডিম নিজের ইনকিউবেটর মেশিনে ফুটিয়ে প্রতিটি বাচ্চা সাড়ে তিনশ টাকা দরে বিক্রি করে থাকে। এসব বাচ্চা ও বড় টার্কি বিক্রি থেকে এখন তার মাসিক আয় প্রায় লক্ষাধিক টাকা। প্রতিদিন আশরাফুলের খামার দেখতে ত্রিশ চল্লিশ জন উৎসাহী লোক তার বাড়িতে আসে। তাদের অনেকেই এক দিনের বাচ্চা সংগ্রহ করে নিয়ে যান।

আশাফুলের ইচ্ছা আগামী এক বছরের মধ্যে তার খামার আরো বড় করে সেখানে পাঁচশ টার্কির খামার গড়ে তোলা। তার প্রত্যাশা গ্রামের বেকার যুবকদের টার্কি পালনে উৎসাহী করে তাদের স্বাবলম্বী করে তোলা।

আশরাফুলের মতে, টার্কি পালন অতি সহজ। রোগবালাই তেমন নেই বললেই চলে। এর মৃত্যুহার খুব কম। আর টার্কি সবুজ জাতীয় সব শাকসবজি ও লতা পাতা খেয়ে থাকে। এসব ছাড়াও টার্কির প্রিয় খাবার কচুরীপানা ও কলমী শাক। যা গ্রামের আনাচে কানাচে অতি সহজে পাওয়া যায়।

আশারাফুলের পিতা ইশরাইল হোসেন জানান, শুরুতে ছেলের কর্মকান্ডকে হটকারীতা মনে করে সেখানে উৎসাহী ছিলাম না। এখন দেখছি আমার আয় ইনকামকে সে ছাড়িয়ে যাচ্ছে।

উপজেলা প্রানী সম্পদ কর্মকর্তা ড. আতিবুর রহমান জানান, আশরাফুলের টার্কি খামার স্থাপনের বিষয়ে শুনেছি। তবে সরেজমিন ওই খামার পরিদর্শন করা হয়নি। অচিরেই খামারটি পরিদর্শন করে তাদের যে কোন চিকিৎসা সহ সার্বিক পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করা হবে বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন।

স/অ