জয়ের আশা জাগিয়ে আবারও ‘আত্মহত্যা’ টাইগারদের!

সিল্কসিটিনিউজ ক্রীড়া ডেস্ক:

বাংলাদেশকে বেশ উজ্জীবিত লাগছিল আজ। জেগেছিল জয়ের আশাও।

কিউইদের দেওয়া ১৯৬ রানের লক্ষ্যটা একটা সময় খুব সহজ মনে হচ্ছিল। তাহলে বলুন, বাংলাদেশের আজকের ব্যাটিং বিপর্যয়ের কারণ কী? উত্তর, সেই বাজে শট খেলতে যাওয়া! ১৯৬ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই যথারীতি ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়লেও সৌম্য-সাব্বিরের ব্যাটে একটা সময় দারুণ এগোচ্ছিল বাংলাদেশ। তবে ভালো খেলতে খেলতে হঠাৎ করেই বাজে শটের প্রতি ঝুঁকে গিয়েছিলেন ব্যাটসম্যানরা। ফলে বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রণে থাকা ম্যাচটি ৪৭ রানে জিতে সিরিজ নিজেদের করে নেয় নিউজিল্যান্ড!মাউন্ট মঙ্গানুইয়ের বে ওভালে আজ টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে টাইগার বোলারদের তোপের মুখে পড়ে স্বাগতিকরা। তবে মুনরোকে আটকানো সম্ভব হয়নি। বিধ্বংসী এই ব্যাটসম্যানের দুর্দান্ত সেঞ্চুরিতে ভর করে বাংলাদেশে কঠিন চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে নিউজিল্যান্ড। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৯৫ রান সংগ্রহ করে স্বাগতিকরা।

লুক রঞ্চিকে ইনিংসের প্রথম বলেই ফিরিয়ে ভালো কিছুর আভাস দিয়েছিলেন অধিনায়ক মাশরাফি। তার বল তুলে মারতে গিয়ে মোসাদ্দেক হোসেনের হাতে ক্যাচ দেন রঞ্চি। এরপর ৪২ রানের জুটি গড়েন কেন উইলিয়ামসন এবং কলিন মুনরো। তবে সাকিব আল হাসানের ঘূর্ণিতে তামিম ইকবালের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান কিউই অধিনায়ক উইলিয়ামসন (১২)। স্কোর বোর্ডে ৪ রান যোগ না হতেই আঘাত হানেন তরুণ তুর্কি মোসাদ্দেক হোসেন। মোসাদ্দেকের বলে সরাসরি বোল্ড হয়ে যান নতুন ব্যাটসম্যান হিসেবে আসা কোরি অ্যান্ডারসন (৪)।

দ্রুত উইকেট পতনের মধ্যেই ঝোড়ো গতিতে ব্যাট চালিয়ে ৫২ বলে ৭ চার এবং ৭ ছক্কায় সেঞ্চুরি তুলে নেন কলিন মুনরো। তার ইনিংসে ভর করেই বিশাল স্কোর গড়ে কিউইরা। সেঞ্চুরি করার পরপরই তিনি রুবেল হোসেনের বলে উইকেট কিপার নুরুল হাসানের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন। দুই বল পরেই গ্র্যান্ডহোমকে (২) ফেরান রুবেল। তবে এর মধ্যেই ৩২ বলে ৪ বাউন্ডারি এবং ১ ওভার বাউন্ডারিতে হাফসেঞ্চুরি তুলেন নেন টম ব্রুস। শেষ পর্যন্ত তিনি ৫৯ রানে অপরাজিত থাকেন। রুবেলের তৃতীয় শিকারে পরিণত হন জেমস নিশাম (৫)। এরপর মিচেল স্যান্টনারকে আউট করাতেও রুবেলের সম্পূর্ণ ক্রেডিট আছে। তবে সেটা ছিল রান আউট। মুস্তাফিজ কোনো উইকেট পাননি। ২ ওভারে ৩২ রান দিয়ে সবচেয়ে খরুচে বোলার মাহমুদ উল্লাহ। অন্যদিকে ৩ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের সফল বোলার রুবেল।

দলীয় ২ রানেই প্রথম উইকেটের পতন ঘটে বাংলাদেশের। স্যান্টনারের বলে ব্রুসের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন ইমরুল কায়েস (০)। এরপর সাব্বির রহমানের সাথে ৩২ রানের জুটি গড়ার পর দুর্ভাগ্যজনক রান আউটের শিকার হন তামিম ইকবাল (১৩)। ক্রিজে এসেই মাত্র ১ রান করে ফিরে যান বিশ্বসেরা অল-রাউন্ডার সাকিব আল হাসান। ৩৬ রানে ৩ উইকেট হারানো দলকে টেনে তোলার দায়িত্ব নেন দুই তরুণ ব্যাটসম্যান সৌম্য সরকার এবং সাব্বির রহমান। কিউই বোলারদের ওপর চড়াও হন দুজনই। অনেকদিন পর ঝলক দেখা গেল সৌম্য সরকারের ব্যাটে। দারুণ ব্যাট চালিয়ে একসময় বড় ইনিংসের স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন। তবে ২৬ বলে ৩ চার এবং ২ ছক্কায় ৩৯ রান করে ট্রেন্ট বোল্টের বলে মুনরোর হাতে ধরা পড়েন তিনি। এরপর হাফসেঞ্চুরি বঞ্চিত হন সাব্বির রহমানও। তার ৩১ বলে ৩ চার ও ৩ ছক্কায় ৪৮ রানের ইনিংসটি শেষ হয় টিম সাউদির বলে বোল্টের হাতে ধরা পড়ে।

দারুণ ব্যাট করতে থাকা এই দুজনের বিদায়ে চাপে পড়ে বাংলাদেশ। চাপ বেড়ে যায় যখন মাত্র ১ রান করে ফিরে যান মোাসাদ্দেক হোসেন। দলের ষষ্ঠ উইকেট পতনের পর উইকেটকিপার নুরুল হাসানকে নিয়ে লড়াই করতে থাকেন মাহমুদ উল্লাহ রিয়াদ। কিন্তু ১৫ বলে ১৯ রান করে টিম সাউদির বলে হতাশাজনক এক শট খেলে গ্র্যান্ডহোমের হাতে ধরা পড়েন তিনি। এরপর শুধু ব্যাটসম্যানদের আসা-যাওয়ার মিছিল। যে কারণে ১৪৮ রানেই শেষ হয় টাইগারদের ইনিংস।

সূত্র: কালের কন্ঠ