জয়পুরহাটে ডায়রিয়ার প্রকোপ: বেড না পেয়ে মেঝেতেই চিকিৎসা নিচ্ছেন রোগীরা

জয়পুরহাট প্রতিনিধি:
জয়পুরহাটে হঠাৎ করে দেখা দিয়েছে ডায়রিয়ার প্রকোপ। প্রতিদিনই হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে নতুন নতুন রোগী। চিকিৎসকরা বলছেন, অস্বাভাবিক গরমে কারণে এই রোগের প্রকোপ বেড়েই চলছে। তাই কয়েকদিন থেকে এ রোগে রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলছে।

জয়পুরহাট আধুনিক জেলা হাসপাতালে গত ৭ দিনে প্রায় ২ শতাধিক নারী, পুরুষ ও শিশু মিলে ডাইরিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছে। এর মধ্যে অনেক রোগী চিকিৎসা নিয়ে হাসপাতাল ছেড়েছে। আবার নতুন নতুন রোগী চিকিৎসার জন্য ভর্তিও হচ্ছে। তবে যাওয়ার চেয়ে আসার পরিমানই বেশী। কেউ কেউ আবার চিকিৎসা নিচ্ছেন এক সপ্তাহ ধরে।

এছাড়াও উপজেলা হাসপাতাল, বিভিন্ন ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও কনসালটেশন সেন্টারেও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীরা চিকিৎসা নিচ্ছেন। শুধু জেলা হাসপাতালেই প্রতিদিনই চিকিৎসা নিতে আসছে ৪০ থেকে ৪৫ জন রোগী। এদের মধ্যে বেশির ভাগ শিশু ও বয়স্ক রোগী রয়েছে বলে চিকিৎসকরা জানান। হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে রোগীদের জায়গা না হওয়ায় মেঝেতে ও বারান্দায় গাদাগাদি করে শুয়ে-পরে রোগীদের চিকিৎসা সেবা নিতে হচ্ছে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গত এক সপ্তাহ ধরে হঠাৎ করে এ রোগের প্রকোপ বেড়েই চলছে। প্রতিদিন ৪০ থেকে ৪৫ জন রোগী আধুনিক জেলা হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। এদের মধ্যে অধিকাংশই শিশু ও বয়স্ক। শনিবার সকাল থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত আধুনিক জেলা হাসপাতালে ২০ জন শিশু রোগী ডাইরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছে। বৈরী আবহাওয়ার কারণে প্রখোর রোদ, অপরিষ্কার ও অপরিচ্ছন্ন খাবারের কারণে এ রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটেছে। হাসপাতালে ভতির পর ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীরা ৭-৮ দিন চিকিৎসা নেয়ার পর তারা সুস্থ্য হয়ে হাসপাতাল ছাড়ছেন।

হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত আক্কেলপুর উপজেলার মাতাপুর গ্রামের সাদিয়ার অভিভাবক জানান, ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে মেয়েকে নিয়ে গত পাঁচদিন ধরে বেড না পেয়ে মেঝেতেই শুয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তাদের এলাকার অনেক শিশু ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে এ হাসপাতালের মেঝেতে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

সদরের পাচুরচক গ্রামের রফিকুল ইসলাম ও কালাই উপজেলার হাতিয়র গ্রামের আক্কাস আলী বলেন, তারা ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে গত ৭ দিন যাবত হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। অনেক মানুষেরই এই অসুখ হয়েছে।

জয়পুরহাট আধুনিক জেলা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. এফ এম মুছা আলি মনছুর বলেন, অস্বাভাবিক ভ্যাবসা গরম ও রোদের কারণে ডায়রিয়া রোগ বেড়েই চলেছে। গত কয়েক বছরের তুলনায় এবারের মাত্রাটা বেশি। গত এক সপ্তাহে ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত প্রায় ২শ নারী, পুরুষ ও শিশুকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। প্রতিনিয়ত এ রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলছে। তবে চিকিৎসার পাশাপাশি সচেতনতা অবল্বমন করে চলাফেরা করলে এই রোগ কমে যায়।

স/অ