জয়পুরহাটে কর্মীদের চাঙ্গা রাখতে আ’লীগ-বিএনপি’র ইফতার দৌড়!

জয়পুরহাট প্রতিনিধি:
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দলীয় নেতা-কর্মীদের চাঙ্গা রাখতে এবং অন্য দল থেকে ভোটাদের টেনে নিজ নিজ দলের গ্রুপ ভূক্ত করতে জয়পুরহাট-২ (কালাই-ক্ষেতলাল-আক্কেলপুর) আসনের প্রধান দুই রাজনৈতিক দল বিভক্ত আওয়ামীলীগ ও বিএনপি’র ‘এ’-গ্রুপ বনাম ‘বি’-গ্রুপে যুক্ত করতে তিনটি উপজেলার ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে প্রতিযোগীতা করে মাস ব্যাপি ইফতার অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে স্ব স্ব দলের বিভক্ত মনোনয়ন প্রত্যাশিদের ভক্ত নেতা-কর্মীরা।

ওই দুই দলের বিভক্ত মনোনয়ন প্রত্যাশিদের ভক্তরা রমজান মাস শুরুর পর থেকে প্রতিদিনই ইফতার অনুষ্ঠানের আয়োজন করছেন। এতে দুইটি দলেরই বিভক্ত মনোনয়ন প্রত্যাশিদের উপজেলার ও পৌরসভার ভক্ত নেতা-কর্মীরা উপস্থিত থাকছেন। এসব অনুষ্ঠানে তারা নিজ নিজ দলের এবং বিভক্ত মনোনয়ন প্রত্যাশিদের পক্ষে দলীয় প্রতিকে ভোটও চাচ্ছেন।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামীলীগ তিনটি উপজেলার ১৫টি ইউনিয়ন ও ৩টি পৌরসভাসহ মোট ১৬২টি ওয়ার্ডে স্ব স্ব উপজেলা ও পৌরসভার নেতাকর্মীদের দায়িত্বে ইফতার অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। যে যার মত করে ইতিমধ্যে দলটির বেশীরভাগ ওয়ার্ডে ইফতার অনুষ্ঠান শেষ করেছে। যে ভাবেই ইউক এ দিক থেকে ক্ষমতাসিন দল এগিয়ে রয়েছে।
বিভক্ত নেতা-কর্মীরা বলছেন, ঈদের আগে সবকটি ওয়ার্ডেই ইফতার অনুষ্ঠান করতে পারবেন তারা। অন্যদিকে আওয়ামীলীগের সাথে পাল্লা দিয়ে বিএনপিও তাদের বিভক্ত মনোনয়ন প্রত্যাশিদের পছন্দের নেতা-কর্মী দ্বারা সবকটি ওয়ার্ডে না পারলেও গুরুত্বপূর্ণ ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পর্যায়ে ইফতার অনুষ্ঠানের চেষ্টা করছেন।

আওয়ামীলীগ ও বিএনপি’র বিভক্ত মনোনয়ন প্রত্যাশিদের নেতা-কর্মীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, রমজান মাসে এর আগে কখনও মাঠপর্যায়ে দলীয়ভাবে ইফতার অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়নি। এবার একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে আসায় দুই দলের একাধিক মনোয়ন প্রত্যাশিরা তাদের ইমেজ ধরে রাখতে এবং দলীয় নেতা-কর্মীদের চাঙ্গা রাখতে চেষ্ঠা করছে। এছাড়া প্রতিযোগীতায় যাতে করে দলীয় মনোনয়ন সহজে পাওয়া যায় সেই চেষ্টাই তারা গ্রামগঞ্জের দলীয় নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের উদ্বুদ্ধ করছেন।

জয়পুরহাট-২ আসনের সাংসদ আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আলমাহমুদ স্বপন মনোনয়ন প্রত্যাশিদের মধ্যে বলতে গেলে ‘এ’ গ্রুপের। তিনি রমজানে ইফতার অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য দলীয় নেতা-কর্মীদের প্রতি নির্দেশনা দিয়েছেন। পাশাপাশি একই দলের ‘বি’ গ্রুপ জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম সোলায়মান আলীও ওই আসনে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশি। তিনিও পছন্দের নেতা-কর্মীদের প্রতি ইফতার অনুষ্ঠান আয়োজন করতে বলেছেন। এসব কারণে বিভক্ত মনোনয়ন প্রত্যাশিদের বিভক্ত নেতাকর্মীরা প্রতিদিনই ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে ইফতারের আয়োজন করেছেন। অনুষ্ঠানে দলীয় লোকজন ছাড়াও অন্য দলের কর্মী-সমর্থক ও ভোটারদের দাওয়াত করা।

একই অবস্থা বিএনপিতেও। জেলা বিএনপি’র (ভারপ্রাপ্ত) সভাপতি ও সাবেক সাংসদ প্রকৌশলী গোলাম মোস্তফা ছাড়াও বেশ কয়েকজন মনোয়ন প্রত্যাশিরা তাদের পছন্দের নেতাকর্মীদের দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ ওয়ার্ড, ইউনিয়ন ও পৌরসভাগুলোতে ইফতারে আয়োজন করছে। অনেক দিন পর এসব অনুষ্ঠানে ইউনিয়ন ও উপজেলা পর্যায়ের বিভক্ত নেতাকর্মীরা উপস্থিত থাকছেন। তারা দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কারামুক্তির দাবিতে ঐক্যবদ্ধ থাকা এবং দলীয় পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে চাওয়ার আহবান জানান।

ইফতার অনুষ্ঠানের বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামীলীগের বর্তমান সাংসদের আস্তাভাজন জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও কালাই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মিনফুজুর রহমান মিলন বলেন, আমরা দলীয় উদ্যেগে এ আসনের তিনটি উপজেলার ১৫টি ইউনিয়ন ও ৩টি পৌরসভা মিলে মোট ১৬২টি ওয়ার্ডেই ইফতার অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। প্রতিটি অনুষ্ঠানেই লোকজনের উপস্থিতি ছিল চখে পড়ার মত। এতে দলীয় নেতাকর্মী ও সমর্থকরা উজ্জীবিত হয়েছে। ইতিমধ্যে বেশী ভাগ ওয়ার্ডেই শেষ হয়েছে।

স/শা