জামিন নিয়ে একযুগ ধরে লাপাত্তা জয়পুরহাটের ১৪ জেএমবি

জয়পুরহাট প্রতিনিধি:
জয়পুরহাটে পুলিশের উপর হামলা ও অস্ত্র লুট মামলায় উচ্চ ও নিম্ন আদালত থেকে জামিন নিয়ে ১ যুগ ধরে পলাতক রয়েছে দেশের বিভিন্ন জেলার শীর্ষ ১৪ জন জামায়াতুল মুজাহিদীন জেএমবি’র জঙ্গী সদস্য।

 

তাদের বিরুদ্ধে আদালত থেকে গ্রেপ্তারী পরোয়ানা জারি হলেও পুলিশ এসব জঙ্গীদের গ্রেপ্তার করে বিচারের সম্মুখীন করতে পারেননি আজও।

 
অভিযোগ রয়েছে, জামিনে গিয়ে সাংগঠনিক কার্যক্রমসহ নাশকতার কাজে জড়িত থাকতে পারেন ওই জঙ্গীরা। আর পলাতক এসব জঙ্গীদের নিয়ে এমনই আতংকে আছেন শান্তি প্রিয় সাধারন মানুষ।

 
জয়পুরহাট জেলার কালাই উপজেলার বেগুনগ্রামে ২০০৩ সালের ১৯ জানুয়ারী দিবাগত রাতে খানকায়ে চিশতিয়া তরিকার ৫ জন পীর ভক্তকে জবাই করে হত্যার মধ্য দিয়ে দেশে প্রথমবার জানান দেয় জেএমবি জঙ্গীদের নাশকতা। তারপর একই বছর ১৪ আগস্ট গভীর রাতে ক্ষেতলাল উপজেলার উত্তর মহেশপুর গ্রামের জেএমবি নেতা মন্তেজার রহমানের বাড়িতে জেএমবি সদস্যদের গোপন বৈঠক চলাকালে পুলিশ বাড়িটি ঘেরাও করলে পুলিশ ও জেএমবি জঙ্গীদের মধ্যে ঘটে ভয়াবহ সংঘর্ষ। এতে জয়পুরহাট সদর থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সহ ৫ পুলিশ সদস্য আহত হন।

 
জেএমবি সদস্যরা পুলিশের তিনটি শর্ট গান, ৪৫ রাউন্ড গুলি ও ওয়াকিটকি লুট করে নিয়ে যায়। ওই রাতেই পুলিশ ২১জনকে গ্রেপ্তার করে এবং এ ব্যাপারে ১৫ আগষ্ট পুলিশ বাদী হয়ে ৩১ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে।

 
এ ছাড়া ২০০৫ সালের ১৭ আগষ্ট সারা দেশের মত জয়পুরহাটেও জঙ্গীদের সিরিজ বোমা হামলা হয়।

 

এসব ঘটনায় অনেকে আটক হলেও মামলার ৬ মাসের মাথায় ১৪ জঙ্গী আদালত থেকে জামিন নিয়ে এখনো পলাতক রয়েছে। আর অপর ছয় জঙ্গী নেতা বর্তমানে জয়পুরহাট জেলা কারাগারে রয়েছেন।

 
এ ব্যাপারে জয়পুরহাট সরকারি কৌশুলি অ্যাডভোকেট নৃপেন্দ্রনাথ মন্ডল সিল্কসিটি নিউজকে বলেন, আসামি পলাতাক থাকলেও তাদের অনুপস্থিতেই বিচার কাজ চলবে। পলাতক জঙ্গিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা না গেলে আইন-শৃঙ্খলার অবনতির আশংকা রয়েছে।

 
জয়পুরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফরিদ হোসেন সিল্কসিটি নিউজকে বলেন, পলাতক জঙ্গিদের তালিকা তৈরি করে জরুরি ভিত্তিতে আইনের আওতায় আনার ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। জেলার গুরুত্বপূর্ণ স্থানে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।

 
সম্প্রতি ১৪ জুলাই জয়পুরহাটে আদালত ভবন, পুলিশ লাইন, ডিবি অফিস, বিজিবি’র ব্যাটেলিয়ান দপ্তর, র‌্যাব ক্যাম্প, ২টি সরকারি ব্যাংক উড়িয়ে দেওয়ার পাশাপাশি জেলা ও দায়রা জজ, হিন্দু পুরোহিত-সেবায়েতসহ উর্দ্ধতন সরকারি কর্মকর্তাদের হত্যার হুমকি দিয়ে ডাকযোগে জেএমবি’র নামে চিঠি দেওয়া হয় জেলা ও দায়রা জজ আদালতে। এ ঘটনায় জয়পুরহাট সদর থানায় একটি সাধারন ডায়েরীও করা হয়।

স/শ