চির নূতনেরে দিল ডাক পঁচিশে বৈশাখ

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক: “হে নূতন, / দেখা দিক আরবার জন্মের প্রথম শুভক্ষণ/ তোমার প্রকাশ হোক কুহেলিকা করি উদঘাটন সূর্যের মতন” — নিজের জন্মদিন পঁচিশে বৈশাখকে এভাবেই নবীনদের ডাক দিয়েছিলেন বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। আজ ২৫ বৈশাখ; কবিগুরুর ১৬৫তম জন্মবার্ষিকী। ১২৬৮ বঙ্গাব্দের (১৮৬১ খ্রিস্টাব্দ) এই দিনটিতে কলকাতার বিখ্যাত জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন তিনি।  ১৯৪১ সালের বাংলা ২২ শ্রাবণ মৃত্যুবরণ করলেও বাঙালির হৃদয়ে; বাংলা সাহিত্যে চির আসন করে নিয়েছেন কবি।

১৯১৩ সালে গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থের জন্য প্রথম বাঙালি হিসেবে নোবেল পুরস্কার অর্জন করেন কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়ায় বাংলা ভাষা ও সাহিত্য।  তাঁর কবিতা, ছোটগল্প, প্রবন্ধ, নাটক, সংগীত, শিশুতোষ রচনা, পত্রসাহিত্য বাংলা সাহিত্যের অমর সংযোজন। বিস্ময়কর প্রতিভার অধিকারী কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিচরণ ছিল বাংলা সাহিত্যের প্রায় সকল শাখায়।  তাঁর লেখা গান আমাদের জাতীয় সংগীত। বাঙালির মহান মুক্তিসংগ্রামে রবীন্দ্রনাথের গান জুগিয়েছে প্রেরণা।

রবীন্দ্রনাথের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাণী দিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি বলেছেন, রবীন্দ্রনাথ মানবতাবাদী ও অসাম্প্রদায়িক চেতনার কবি। জীবনের আনন্দ-বেদনা, আশা-নিরাশা, সংকট-সাফল্যে, উৎসব-পার্বণে রবীন্দ্রনাথ বাঙালির পরম আশ্রয়। পৃথক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলা ও বাঙালির অহংকার। আমাদের মননে বিশ্বকবির ব্যঞ্জনাময় উপস্থিতি শোষণ, বঞ্চনা, সাম্প্রদায়িকতা, সহিংসতা ও অমানবিকতা প্রতিরোধের মাধ্যমে বাঙালির অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রাখবে। ’

বরাবরের মতোই আজ সারা দেশে আনন্দঘন পরিবেশে উদ্যাপিত হবে কবিগুরুর জন্মদিনের উৎসব।   জন্ম বার্ষিকীর মূল অনুষ্ঠান হবে রবীন্দ্র স্মৃতিবিজড়িত নওগাঁর পতিসরে। আমাদের নওগাঁ প্রতিনিধি তন্ময় ভৌমিক জানান, আজ বেলা আড়াইটায় নওগাঁর পতিসরে রবীন্দ্র কাচারি বাড়ির দেবেন্দ্র মঞ্চে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ। সভাপতিত্ব করবেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। এবারের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘মানুষের ধর্ম : রবীন্দ্রনাথ ও সমকালীন প্রাসঙ্গিকতা’। এ বিষয়ে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্মারক বক্তব্য দেবেন অধ্যাপক ড. হায়াত্ মামুদ।

আলোচনার পর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির ব্যবস্থাপনায় ৩০ মিনিটের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এছাড়াও কবিগুরুর স্মৃতিবিজড়িত কুষ্টিয়ার শিলাইদহ, সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর এবং খুলনার দক্ষিণডিহি ও পিঠাভোগসহ ঢাকায় যথাযোগ্য মর্যাদায় তার জন্মবার্ষিকী উদযাপন করা হবে। এ উপলক্ষে রবীন্দ্রমেলা, রবীন্দ্রবিষয়ক আলোচনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করবে স্থানীয় প্রশাসন। সূত্র: কালের কণ্ঠ