চিত্রনায়ক সোহেল হত্যা: জামিন পেলেন বোতল চৌধুরী

সিল্কসিটি নিউজ ডেস্ক

২৫ বছর আগে খুন হওয়া চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলায় আসামি আশিষ রায় চৌধুরী ওরফে বোতল চৌধুরীকে জামিন দিয়েছেন আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে এই মামলা ৬ মাসের মধ্যে বিচারিক আদালতকে নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

সোমবার প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে ৫ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে আসামির পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক ও সাঈদ আহমেদ রাজা। সঙ্গে ছিলেন অ্যাডভোকেট পলাশ চন্দ্র রায় ও সেলিম আশরাফ চৌধুরী। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সারওয়ার হোসেন বাপ্পী।

এদিকে নায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলা ৬ মাসে বিচারকাজ শেষ না হওয়ার ব্যাখ্যায় ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক বলেছেন, ২৫ বছর আগের মামলা হওয়ায় প্রসিকিউশন সাক্ষী হাজির করতে পারছেন না। এক্ষেত্রে প্রসিকিশনের ব্যর্থতা রয়েছে।

গত ২৯ অক্টোবর চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলা সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশনার পরও ৬ মাসে বিচারকাজ শেষ না বিচারককে শো’কজ করেন আপিল বিভাগ। ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারককে শো’কজের জবাব দিতে বলা হয়। ওই সময় পর্যন্ত এ মামলার আসামি আশিষ রায় চৌধুরীর জামিন স্থগিত থাকবে বলে আদেশে বলা হয়েছে। প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

এর আগে গত ৬ ফেব্রুয়ারি সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলার বিচার আগামী ৬ মাসের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছিলেন আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে এই সময় পর্যন্ত আসামি আশিষ রায় চৌধুরীর জামিন স্থগিত করেন আদালত। তার আগে সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলায় হাইকোর্ট থেকে জামিন নেন আসামি আশিষ রায় চৌধুরী। পরে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করলে চেম্বার আদালত তা স্থগিত করে আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে পাঠান।

সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলায় আশীষ রায় চৌধুরীকে গত বছরের ৫ এপ্রিল রাতে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। তিনি একাধিক বেসরকারি এয়ারলাইন্সের ঊর্ধ্বতন পদে ছিলেন। সর্বশেষ ছিলেন জিএমজি এয়ারলাইনসের প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা (সিওও)।

১৯৯৮ সালের ১৭ ডিসেম্বর রাজধানীর বনানীর ট্রামস ক্লাবের নিচে গুলি করে হত্যা করা হয় সোহেল চৌধুরীকে। ওই ঘটনায় তার বড় ভাই তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরী গুলশান থানায় মামলা করেন। ১৯৯৯ সালের ৩০ জুলাই ডিবি পুলিশ ৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়। ২০০১ সালের ৩০ অক্টোবর ওই মামলায় অভিযোগ গঠন করা হয়। পরে বিচারের জন্য পাঠানো হয় ২ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে। মামলা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানোর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে আসামি আদনান সিদ্দিকি ২০০৩ সালের ১৯ নভেম্বর হাইকোর্টে রিট করেন।

রিটের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট ২০০৪ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে রুলসহ আদেশ দেন। তবে রুল নিষ্পত্তি করে ২০১৫ সালের ৫ আগস্ট রায় দেন হাইকোর্ট। রায়ে রুলটি খারিজ করে দেয়া হয়। সেইসঙ্গে স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করেন আদালত। এতে মামলার বিচার কার্যক্রম চলতে আইনত আর কোনো বাধা থাকে না। কিন্তু অদৃশ্য কারণে ওই রায়ের কপি আর নিম্ন আদালতে পৌঁছায়নি। যার কারণে শুরু হয়নি বিচার।