চাচীর শ্লীলতাহানির চেষ্টা! আক্রোশে খুন, হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ধার

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ঝাড়গ্রামের তপসিয়ায় অভিজিৎ এক যুবক খুনের ঘটনার রহস্যভেদ করতে গিয়ে জট খুললেন তদন্তকারীরা। খুনের ঘটনার জের ধরেই উঠে এসেছে গা শিওরে ওঠার মত ঘটনা। আর এর রেশ ধরেই অভিজিৎ খুনের জন্য তার বড় চাচা ও ছোট চাচীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

পুলিশ বলছে,  মঙ্গলবার তদন্তকারীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রথমে দেখেন, বাড়ির চাবিটি যথাযথ স্থানেই রয়েছে। সেখানেই প্রথম প্রশ্ন ওঠে। পরিবারের সদস্যদের দাবি অনুযায়ী, সাইকেল চুরির ঘটনা দেখে ফেলায় অভিজিৎকে খুন করা হয়েছে। সেক্ষেত্রে চোর চাবি নিয়ে গেট খুললে কি এতটাই যত্ন করে স্বস্থানে রেখে যাবে? যে সাইকেল চুরি হয়েছে, তার টায়ার পাংচার ছিল। কিভাবে চোর সেই সাইকেল নিয়ে পালাবে?

দ্বিতীয় প্রশ্ন – থ্রি ডি ক্যামেরার ইউভি স্ক্যানারে তদন্তকারীরা বুঝতে পারেন, বাড়িতে সবজি কাটার ছুরিতে রক্ত লেগে রয়েছে। তা যথেষ্ট সন্দেহজনক বলে মনে হয়। এরপর তদন্তকারীরা বারবার জানতে চান যে বাড়ির কে কখন অভিজিৎকে শেষবার দেখেছিল। তাতে একেকজনের একেকরকম কথায় আরো জটিলতা তৈরি হয়।

পরিবারের সদস্যরা আরও জানান যে চোর বাড়ির পিছনের গেট দিয়ে এসেছিল। তার উপর ভিত্তি করে তদন্ত এগোতে গিয়ে পুলিশ দেখতে পায়, পিছনের গেটের দিকে আগাছায় ভরা। অথচ যে রাস্তা পিছনের গেট থেকে পুকুরের দিকে গিয়েছে, সেখানে আগাছা পরিষ্কার করা। কেন গেটের সামনের দিক বাদ দিয়ে দূরের আগাছা পরিষ্কার করা হল? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে পুকুরে ডুবুরি নামিয়ে তল্লাশি চালানো হয়। কিছু পাওয়া যায় না। তবে পরেরদিন পাড়ার কয়েকজন যুবক পুকুরে গোসল করতে নেমে শক্ত কোনও জিনিসের অস্তিত্ব টের পান। তারাই পুলিশকে জানান। পুলিশ ফের ডুবুরি নামিয়ে দেখতে পায়, দুটি সাইকেল রয়েছে পুকুরে। অর্থাৎ সেগুলো চুরি যায়নি এবং চুরির গল্প বানানো। সাইকেল উদ্ধার হওয়ার পর অভিজিতের ছোট চাচি প্রিয়াঙ্কা রজকের ভাবমূর্তি পাল্টে যায়। এর জের ধরেই শনিবার প্রিয়াঙ্কাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

প্রিয়াঙ্কা রজককে জেরা করার পর তদন্তকারীরা জানতে পারেন, মানসিকভাবে কিছুটা ভারসাম্যহীন অভিজিতের চরিত্র ভাল ছিল না। বারবার প্রায় সমবয়সি কাকিমা প্রিয়াঙ্কার শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে সে। পরিবার এবং প্রতিবেশীরা একাধিকবার শাসন করে তাকে। তবু স্বভাব পরিবর্তন হয়নি। প্রিয়াঙ্কা ও তার বড় ভাসুর চন্দন রজকের সঙ্গে পরামর্শ করে ঠিক করে যে অভিজিৎকে সরিয়ে ফেলতে হবে। সেইমতো পরিকল্পনামাফিক সোমবার গভীর রাতে তাকে খুন করা হয়। এরপর অভিজিতের বড় কাকা চন্দন রজককেও গ্রেপ্তার করে। পরিবারের আর কেউ জড়িত কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

 

সূত্রঃ কালের কণ্ঠ