চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৭৯৩৮৬ গবাদি পশু কোরবানীর জন্য প্রস্তুত

কামাল হোসেন,শিবগঞ্জ:
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে ৭৯ হাজার ৩৮৬ টি গবাদি পশু। চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রাণি সম্পদ বিভাগের তত্ত্বাবধানে তালিকাভূক্ত খামারীদের পরামর্শ ও প্রশিক্ষণ দিয়ে এসব পশু কোরবানীর জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে। যদিও জেলায় কি পরিমাণ কোরবানীর পশু দরকার তা জানাতে পারেনি প্রাণি সম্পদ বিভাগ।

 
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জে কোরবানীর জন্য যে পরিমাণ গরু-মহিষ, ছাগল বা ভেড়া দরকার হয় তার প্রায় সবই স্থানীয়ভাবে পালিত। তবে ঈদের আগে ভারত থেকে কিছু গরু আসে। যদিও ওইসব গরুর খুব একটা চাহিদা থাকেনা এ জেলায়। স্থানীয়ভাবে পালিত গরু দিয়ে কোরবানী দেন ধর্মপ্রাণ মানুষ। যেহেতু স্থানীয় পশুর চাহিদা বেশি তাই প্রাণি সম্পদ বিভাগ খামারীদের পরামর্শ ও প্রশিক্ষণ দিয়ে কোরবানীর জন্য ৭৯ হাজার ৩৮৬ টি গবাদি পশু প্রস্তুত করেছে।

 
চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রাণি সম্পদ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, সদর উপজেলায় ৩২৭৯ গরু, ১৮৭০০ ছাগল, ২৩১৫ ভেড়া ও মহিষ ১৪টি। শিবগঞ্জ উপজেলায় গরু ৩১৮৯, ছাগল ২০১২৫। গোমস্তাপুরে গরু ১৮৬৫, ছাগল ১১৪৬৮, ভেড়া ১৩৬৮ ও মহিষ ৬টি। নাচোলে রয়েছে গরু ১১৩০, ছাগল ৬২৬০, ভেড়া ৮২৫ ও মহিষ ৪টি। ভোলাহাট উপজেলায় গরু ৬৬৭, ছাগল ৪৯৫৭, ভেড়া ৭৬৬ ও চারটি মহিষ কোরবানীর জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে পশুর হাটে তোলা হবে এসব গরু-মহিষ, ছাগল ও ভেড়া। জেলার চাহিদা মেটাতে পারলে পাঠানো হবে অন্য জেলাতেও।

 
প্রাণি সম্পদ বিভাগ জানিয়েছে, গত এক বছরে খামার মালিক ও গরু-মহিষ পালনকারীদের প্রশিক্ষণ-পরামর্শ দিয়ে এসব পশু হৃষ্টপুষ্ট করা হচ্ছে।

 
এ দিকে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, গ্রামাঞ্চলে কমদামি ও অল্পবয়সী গরু-ছাগলকে দেশি-বিদেশি ট্যাবলেট, পাউডার ও ইনজেকশন জাতীয় ভিটামিন ওষুধ প্রয়োগ করে মোটাতাজা ও ফুলানো হচ্ছে। শিবগঞ্জ উপজেলার মনাকষা, দুর্লভপুর, বিনোদপুর, শাহবাজপুর, সদর উপজেলার রানীহাটি, ইসলামপুর, দেবীনগরসহ বেশ কয়েকটি ইউনিয়নে এক শ্রেণির অসাধু ফড়িয়ারা অল্প সময়ে অধিক মুনাফা লাভের আশায় দেদারসে কমদামি ও অল্প বয়সী গরু-ছাগল বিভিন্ন এলাকা থেকে ক্রয় করে দেশি-বিদেশি ট্যাবলেট, পাউডার ও ইনজেকশন দিয়ে মোটাতাজা করছেন।

 
মোটাতাজাকরণ প্রক্রিয়া থেকে বাদ যাচ্ছেনা গরু-ছাগল পালনকারীরাও। তারাও অল্প সময়ে অধিক মুনাফার জন্য ক্ষতিকর ইনজেকশন, ট্যাবলেট ও পাউডার জাতীয় ভিটামিন ওষুধ প্রয়োগে ঝুঁকছেন। অন্যদিকে এইসব গরু-ছাগলকে ফুলানো ও মোটাতাজা করাতে এক শ্রেণির অসাধু পশু চিকিৎসকদের প্ররোচনায় উপজেলার খামারিরা এলাকার গবাদি পশুর ওষুধ দোকান থেকে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন নাম জানা-অজানা কোম্পানির ইনজেকশন, ট্যাবলেট ও পাউডার জাতীয় ভিটামিন ওষুধ কিনে এনে তা প্রয়োগ করছেন।

 
এ ব্যাপারে চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আবুল কাশেম সিল্কসিটি নিউজকে জানান, জেলার গরু-ছাগল খামারিরা আগের চেয়ে অনেকটা সচেতন হয়েছে। খামারিরা এখন প্রাকৃতিকভাবে ও সঠিক পদ্ধতি প্রয়োগ করে গরু-ছাগল হৃষ্ট-পুষ্ট করছেন। ইতিমধ্যে প্রতিটি ইউনিয়নে খামারি মালিকদের নিয়ে একটি কমিটি রয়েছে। তারা নিজ নিজ এলাকায় বিভিন্ন খামারিদের সঠিক পদ্ধতিতে গরু হৃষ্ট-পুষ্ট করার বিষয়ে ব্যাপক সচেতনতা করছেন। এছাড়া প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাও নিজ নিজ এলাকায় এ বিষয়ে মনিটরিং করছে।

স/শ