নিজস্ব প্রতিবেদক, চাঁপাইনবাবগঞ্জ:
স্বর্ণালংকারের লোভে চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের নামোশংকরবাটি ফতেপুর মহল্লায় প্রতিবেশী দুই শিশু ৬ বছর বয়সী মালিহা ও ৭ বছর বয়সী সুমাইয়াকে থুনের চাঞ্চল্যকর মামলায় অপর প্রতিবেশী লাকী খাতুন (২৩) নামে এক নারীকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত। সেই সাথে আদালত তাকে ২ লক্ষ টাকা জরিমানাও করে। এই মামলার অপর আসামী শহরের আঙ্গারিয়া পাড়ার রফিকুল ইসলামের ছেলে স্বর্ণকার মিজানুর রহমান পলাশকে (৩১) চোরাই স্বর্ণ কেনার দায়ে ৩ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড , ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করে আদালত।
নিহত শিশু মালিহা ওই মহল্লার আব্দুল মালেকের মেয়ে ও সুমাইয়া একই মহল্লার মিলন রানার মেয়ে। লাকী ওই মহল্লার ইব্রাহীম আলীর স্ত্রী। রোববার দুপুরে চাঁপাইনবাবগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ শওকত আলী আদালতে আসামীদের উপস্থিতিতে এই দণ্ডাদেশ প্রদান করেন।
মামলার নথি সুত্রে ও সরকারী কৌসুলী আঞ্জুমান আরা বেগম জানান, ২০১৭ সালের ১২ ফেব্রুয়ারী বাড়ির নিকটের ছোট মনি বিদ্যা নিকেতনের প্লে শ্রেণির ছাত্রী মালিহা ও প্রথম শ্রেণির ছাত্রী সুমাইয়া বিদ্যালয় থেকে বাড়ি ফেরার পর খেলতে বের হয়ে বেলা ১১টার দিকে নিখোঁজ হয়। ২দিন পর ১৪ ফেব্রুয়ারী বিকেলে প্রতিবেশী লাকীর বাড়ির একটি ঘরে খাটের নিচে দুটি পৃথক বস্তায় দুই শিশুর লাশ উদ্ধার হয়। এ ঘটনায় ওইদিনই গ্রেপ্তার হন লাকী। এদিকে শিশু দুজন নিখোঁজের পরদিন ১৩ ফেব্রুয়ারী শিশু মালিহার পিতা সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা করেন। মামলাটি পরে হত্যা মামলায় পরিবির্তিত হয়।
গ্রেপ্তারের পর আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দীতে লাকী জানান,শিশু দুজনের গলা ও কানে স্বর্ণালংকারের লোভে তিনি শিশু দুজনকে তার বাড়িতে ফুঁসলিয়ে ডেকে নিয়ে ঘুমের ঔষধ খাইয়ে আটকে রাখেন। তাদের স্বর্ণালংকার কেড়ে পলাশের নামোশংকরবাটি এলাকার স্মৃতি জুয়েলার্সে ২১ হাজার টাকায় বিক্রি করেন। শিশু দুজনকে ছেড়ে দিলে ঘটনাটি তারা প্রকাশ করে দিবে এই ভয়ে ১৪ তারিথ সকালে তিনি শিশু দুজনকে শ্বাসেরোধে হত্যা করে লাশ বস্তায় ভরে খাটের নিচে লুকিয়ে রাখেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সদর থানার তৎকালীন পরিদর্শক (তদন্ত) চৌধুরী জোবায়ের আহম্মেদ ২০১৭ সালের ৩০ এপ্রিল লাকী ও স্বর্ণকার পলাশের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন। ১৬ জনের স্বাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আদালত রোববার মামলার রায় ঘোষণা করেন। আসামী পক্ষে ছিলেন আ্যাড.সাদরুল আমিন।
স/শা