চবির ১৭ ছাত্রলীগ কর্মী বহিষ্কারের কার্যকারিতা নেই

সিল্কসিটি নিউজ  ডেস্ক:

সংঘর্ষ, ভাঙচুর, সাংবাদিক হেনস্তাসহ ছয়টি পৃথক ঘটনায় গত ৯ জানুয়ারি ১৭ ছাত্রলীগকর্মীসহ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ১৮ শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার করে বোর্ড অফ রেসিডেন্স, হেলথ অ্যান্ড ডিসিপ্লিনারি কমিটি। তবে বহিষ্কারের ১৮ দিন পেরিয়ে গেলেও সংশ্লিষ্ট বিভাগ কিংবা হলগুলোতে পৌঁছেনি এ সংক্রান্ত কোনো নির্দেশনা। ফলে অবাধে পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন বহিষ্কৃতরা। থাকছেন আবাসিক হলেও।

বহিষ্কৃতদের মধ্যে দুই ছাত্রকে দুই বছর করে, এক ছাত্রীকে দেড় বছর ও বাকি ১৫ ছাত্রকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ইতিহাস ও ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের তিনজন করে এবং বাংলা, ইংরেজি, দর্শন, আইন, সংস্কৃত, উদ্ভিদবিজ্ঞান, ফাইন্যান্স, অর্থনীতি, লোকপ্রশাসন, নৃবিজ্ঞান, সমাজতত্ত্ব বিভাগ ও শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট থেকে একজন করে রয়েছেন।

বহিষ্কৃতদের একজন ছাত্র অধিকার পরিষদকর্মী, ছয়জন শাখা ছাত্রলীগের পদধারী ও বাকিরা ছাত্রলীগকর্মী হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিত।

বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী, বহিষ্কারাদেশ চলাকালে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে বিবেচিত হবেন না। অংশ নিতে পারবেন না ক্লাস-পরীক্ষাসহ অন্যান্য অ্যাকাডেমিক কার্যক্রমে। অবস্থান করতে পারবেন না আবাসিক হল কিংবা ক্যাম্পাসে। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অবহেলা ও নির্বিকার ভূমিকায় ক্যাম্পাস দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন বহিষ্কৃত এসব ছাত্রলীগের কর্মীরা।

গত ১১ জানুয়ারি ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশ নেন বহিষ্কৃত ছাত্রলীগকর্মী মাহমুদুল হাসান ইলিয়াস ও তনয় কান্তি সরকার। একই দিন মৌখিক পরীক্ষা দেন নাহিদুল ইসলাম নামে আরেক বহিষ্কৃত ছাত্রলীগকর্মী।

এছাড়া গত ১৬ ও ২২ জানুয়ারি দুটি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন সংস্কৃত বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক অনিক দাস। এদের সবাইকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করেছে কর্তৃপক্ষ।

এর আগে বহিষ্কারের তথ্য প্রকাশের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের লুকোচুরি করতে দেখা যায়। ৯ জানুয়ারি বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত হলেও প্রায় দুদিন পর প্রকাশ করা হয় বহিষ্কৃতদের নাম। এছাড়া কয়েকজন ছাত্রলীগকর্মীকে সতর্ক করার সিদ্ধান্ত হলেও তাদের নাম প্রকাশে নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করছে কর্তৃপক্ষ।

ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষা কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. বশির আহাম্মদ যুগান্তরকে বলেন, পরীক্ষা কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে বহিষ্কার সংক্রান্ত কোনো নোটিশ আমি পাইনি।

একই কথা জানান সংস্কৃত বিভাগের সভাপতি রাজপতি দাশ, বাংলা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. তাসলিমা বেগম, উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. হারুন-উর-রশীদ, আলাওল হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. ফরিদুল আলম ও সোহরাওয়ার্দী হলের প্রভোস্ট ড. শিপক কৃষ্ণ দেব নাথ।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব রেসিডেন্স হেলথ অ্যান্ড ডিসিপ্লিনারি কমিটির সদস্য সচিব ও প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভূঁইয়া যুগান্তরকে বলেন, বিভিন্ন ব্যস্ততার কারণে চিঠি পাঠাতে পারিনি। শিগগির পাঠানো হবে। বহিষ্কারাদেশ চিঠি পাওয়ার পর থেকে কার্যকর হবে নাকি সভার দিন থেকে- তা ডিসিপ্লিনারি কমিটির সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে নিশ্চিত হতে হবে।

সূত্র: যুগান্তর