চট্টগ্রামের ৪ উপজেলায় নামছে ১০ প্লাটুন বিজিবি

হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফীর জানাজা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে চট্টগ্রামের ৪ উপজেলায় ১০ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের ৭ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে হাটহাজারী, পটিয়া, রাঙ্গুনিয়া এবং ফটিকছড়িতে শনিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বিজিবি সদস্যরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় দায়িত্ব পালন করবেন।

চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ড. বদিউল আলম বাংলানিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, শফী হুজুরের জানাজা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে শনিবার সকাল থেকে চট্টগ্রামে ১০ প্লাটুন বিজিবি মোতায়নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

‘এর মধ্যে জানাজার স্থান হাটহাজারীতে ৪ প্লাটুন, পটিয়ায় ২ প্লাটুন, রাঙ্গুনিয়ায় ২ প্লাটুন এবং ফটিকছড়িতে ২ প্লাটুন বিজিবি সদস্য মোতায়ন থাকবে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের নেতৃত্বে বিজিবি সদস্যরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সহায়তা করবে। ’

এদিকে জেলা প্রশাসনের জেএম শাখা থেকে বিজিবি সদস্যদের আইনানুগ নির্দেশনা প্রদান করার জন্য ৭ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

এর মধ্যে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শরীফ উল্লাহ, আবদুস সামাদ শিকদার, মামনুন আহমেদ অনীক এবং মো. উমর ফারুক হাটহাজারী উপজেলায় দায়িত্ব পালন করবেন।
এ ছাড়া নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. ফখরুল ইসলাম রাঙ্গুনিয়ায়, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইনামুল হাছান পটিয়ায় এবং নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট গালিব চৌধুরী ফটিকছড়িতে দায়িত্ব পালন করবেন।

হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রুহুল আমিন বাংলানিউজকে জানান, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ র্যা বের পাশাপাশি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের নেতৃত্বে বিজিবি সদস্যরা শনিবার থেকে মাঠে থাকবেন।

তিনি বলেন, আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। সাধারণ মানুষের জান-মালের নিরাপত্তায় সব ধরণের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে রাজধানীর আসগর আলী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফী।

বার্ধক্যজনিত কারণে অনেক দিন ধরে নানা শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন আল্লামা শাহ আহমদ শফী। গত কয়েক বছরে তিনি বেশ কয়েকবার দেশ ও দেশের বাইরের হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।

হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফীর জানাজা শনিবার বাদ জোহর হাটহাজারী দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম মাদ্রাসায় অনুষ্ঠিত হবে।

আল্লামা শাহ আহমদ শফীর জন্ম চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার পাখিয়ারটিলা গ্রামে। তিনি দুই ছেলে ও তিন মেয়ের জনক।

রাঙ্গুনিয়ার সরফভাটা মাদ্রাসায় শিক্ষাজীবন শুরু হয় আল্লামা শফীর। এরপর পটিয়ার আল জামিয়াতুল আরাবিয়া মাদ্রাসায় (পটিয়া জিরি মাদ্রাসা) পড়াশোনা করেন তিনি।

পরে হাটহাজারীর দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম মাদ্রাসা এবং ভারতের দারুল উলুম দেওবন্দ মাদ্রাসায় পড়াশোনা করেন।

১৯৮৬ সালে হাটহাজারী দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম মাদ্রাসার মহাপরিচালক (মুহতামিম) হিসেবে দায়িত্ব নেন আল্লামা শাহ আহমদ শফী। বৃহস্পতিবার একদল শিক্ষার্থীর আন্দোলনের মুখে পদত্যাগের আগ পর্যন্ত টানা ৩৪ বছর ধরে তিনি এই দায়িত্ব পালন করেন।

দেশের কওমি মাদ্রাসাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে পুরনো এবং বড় মাদ্রাসা হিসেবে পরিচিত হাটহাজারী দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম মাদ্রাসা। এই মাদ্রাসার মহাপরিচালক হিসেবে কওমি মাদ্রাসাগুলোর নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলেন আল্লামা শাহ আহমদ শফী।- বাংলানিউজ