ঘোষণা ছাড়া উপজেলার ভোটে যাচ্ছে জামায়াত

সিল্কসিটি নিউজ ডেস্ক

আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। তবে কেন্দ্রীয়ভাবে এই ঘোষণা দেওয়া হবে না। সম্প্রতি জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে সেই সিদ্ধান্তের বিষয়ে জানতে চাইলে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল হালিমবলেন, ‘এটি স্থানীয় দায়িত্বশীলরা দেখবেন। এখানে কেন্দ্রীয় জামায়াত কোনো সিদ্ধান্ত দেবে না।’

চার ধাপে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে এবারের উপজেলা নির্বাচন। তফসিল অনুযায়ী প্রথম ধাপে ১৫২টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত আগামী ৮ মে। তার আগে মনোনয়নপত্র জমা ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত, যাচাই-বাছাই ১৭ এপ্রিল, মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার ২২ এপ্রিল এবং প্রতীক বরাদ্দ ২৩ এপ্রিল। এ ছাড়াও নির্বাচন কমিশনের ঘোষণা অনুযায়ী, দ্বিতীয় ধাপে ভোটগ্রহণ ২৩ মে, তৃতীয় ধাপে ২৯ মে, চতুর্থ ধাপে ৫ জুন।

জামায়াত সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচনে অংশ নিতে ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছেন জামায়াতের প্রার্থীরা। যাদের জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা আছে, শুধু তাদেরকেই প্রার্থী করা হচ্ছে।

জামায়াত নেতারা বলছেন, বিভিন্ন কারাগারে এখনো জামায়াতের বহু নেতাকর্মী আটক রয়েছেন। তাদের আইনি প্রক্রিয়ায় মুক্ত করার ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে। এর মাঝে কেউ উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিতে চায় বা কারও জয়ের সম্ভাবনা থাকে, তা হলে তাদের প্রার্থী করতে স্থানীয় দায়িত্বশীলদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। জামায়াত নেতারা মনে করছেন, নির্বাচনে অংশ নিলে নেতাকর্মীদের মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছানো সহজ হবে।

তবে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে জামায়াতের অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্তকে সন্দেহের চোখে দেখছেন নেতাকর্মীদের একটি অংশ। এই অংশের এক নেতা বলেন, ছেলে ডা. রাফাত সাদিকের পর জঙ্গিসংশ্লিষ্টতার মামলায় জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি)। সত্য-মিথ্যা যাই হোক; একজন রাজনৈতিক নেতার ওপর সরকার কতটা কঠোর হলে এমন মামলায় একটি দলের শীর্ষনেতাকে গ্রেপ্তার করে। সেখান থেকে আবার জামিনে মুক্তও হয়েছেন। এর পরই আবার উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা। এখানে জামায়াতের কারও কারও সন্দেহ দেখা দিয়েছে।

জামায়াতের সিদ্ধান্তে বিএনপির মধ্যেও সন্দেহ তৈরি হয়েছে। গত সোমবার অনুষ্ঠিত স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল সভায় উপজেলা নির্বাচনে বিএনপির কৌশল নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বৈঠকে প্রায় সব সদস্য দলগতভাবে নির্বাচনে না গিয়ে কৌশল গ্রহণ করার পক্ষে মত দেন। নেতারা কেউ কেউ বলেন, যেখানে সুপ্রিমকোর্ট বারের নির্বাচন সুষ্ঠু হয় না, সেখানে এই সরকারের অধীনে অন্য নির্বাচনে যাওয়ার প্রশ্ন আসে না। তবে কেউ নিজ উদ্যোগে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে চাইলে তাকে বাধা দেওয়া উচিত হবে না বলেও জানান তারা।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন নয়। ওরা যতই ক্ষমতা দখল করুক, নড়বড়ে অবস্থায় আছে। এ জন্য ঘুম থেকে উঠেই ওরা বিএনপিকে গালি দেয়। এ নির্বাচনে অংশগ্রহণ দখলদারদের জন্য রিলিফ (স্বস্তি) হয়ে যায়। এ জন্যই তারা মার্কাও (নৌকা প্রতীক) তুলে দিয়েছে।’