ঘুরে দাঁড়াবে বাংলাদেশ

সিল্কসিটিনিউজ ক্রীড়া ডেস্ক:

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ম্যাচে সহজ জয় নাটকীয় হেরে যাওয়ার আলোচনা চলছে সর্বত্র। শেষ ১৭ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ২১ রানের হার কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না টাইগার ভক্তরা। ঘরের মাঠে ইংলিশবধের এমন সুযোগ হাতছাড়া হওয়ায় কোটি টাইগারভক্তের সঙ্গে আক্ষেপে পুড়ছে বাংলাদেশ দলও।

 

আক্ষেপ দূরে সরিয়ে দেশের কোটি ক্রিকেটপ্রেমীকে উচ্ছ্বাসে মাতাতে পারেন ক্রিকেটাররাই সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে জয় তুলে নিয়ে। রোববার (০৯ অক্টোবর) দুপুর আড়াইটায় শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে টাইগারদের সামনে সিরিজ বাঁচানোর ম্যাচ।

বাংলাদেশ দলের ম্যানেজার খালেদ মাহমুদ সুজন মনে করেন সব শেষ হয়ে যায়নি। তার মতে এখনও সিরিজ জেতা সম্ভব, ‘এই সিরিজটা থেকে এখনও অনেক কিছু পাওয়ার আছে। ১-০ তে পিছিয়ে থাকলেও সিরিজটা ২-১ হতে পারে। এই বিশ্বাসটা টিমের সবার মধ্যেই আছে। বাকিটা নির্ভর করবে ম্যাচে আমরা নিজেদের কতটা মেলে ধরতে পারি, কত ভালো করতে পারি। এ ধরনের ম্যাচে চাপ থাকবেই, কারণ তারা খুব (ইংল্যান্ড) প্রফেশনাল দল। ওয়ানডে দল হিসেবে দারুণ ভালো দল। তবে আমরা বিশ্বাস করি সিরিজটা এখনও জিততে পারি।’

 

হার দিয়ে শুরু কিন্তু পরের দুই ম্যাচ জিতে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ ২-১ এ জেতার বহু রেকর্ড আছে বাংলাদেশের। প্রথম ম্যাচে বাকি ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতার মাঝেও ইমরুল-সাকিব মিলে যেভাবে ৩০৯ রান তাড়ায় এগোচ্ছিল তাতে দলের অন্য ব্যাটসম্যানরা উজ্জীবিত হতেই পারেন। দ্বিতীয় ম্যাচে নামার আগে প্রথম ম্যাচের ভালো দিকগুলোই মনে করিয়ে দিলেন খালেদ মাহমুদ।

 

তিনি বলেন, ‘আমরা তো দারুণ একটা ম্যাচ খেলেছি। খেলায় জয়-পরাজয় আছে। শেষ মুহূর্তে আমরা হয়তো চাপটা নিতে পারিনি। গতকালের পর না, প্রথম থেকেই আমাদের বিশ্বাস ছিল ইংল্যান্ডকে হারানোর মতো দল এখন আমরা। গতকালের পর আত্মবিশ্বাস বাড়বে আমাদের। ছোটখাট যে ভুলগুলো ছিল তা থেকে শিক্ষা নিয়ে নতুন উদ্যমে খেলব। নিঃসন্দেহে জয়ের জন্যই খেলবে বাংলাদেশ।’

 

বাংলাদেশকে ঘুরে দাঁড়াতে হলে দায়িত্বটা নিতে হবে ব্যাটসম্যানদেরই। বাংলাদেশের বোলিং আক্রমণ ঠিক আগের মতো শক্তিশালী নেই। এর বড় কারণ কাটার মাস্টার মোস্তাফিজুর রহমানের দলে না থাকা। ইনজুরির কারণে এ বাঁহাতি পেসার খেলতে পারেননি আফগানিস্তান সিরিজেও। স্পিন আক্রমণে নেই সাকিব আল হাসানের যোগ্য সঙ্গী। আরাফাত সানির অভাবটা টের পাচ্ছে বাংলাদেশ। আফগানিস্তান সিরিজে তাইজুল ইসলামকে দিয়ে দ্বিতীয় বাঁহাতি স্পিনারের অভাব পুষিয়ে নিতে চাইলেও হয়নি সেট‍া। টেস্ট দলের নিয়মিত স্পিনার তাইজুল পারেননি আরাফাত সানির বিকল্প হতে।

 

চেষ্টা করা হচ্ছে মোশাররফ হোসেন রুবেলকে দিয়ে। আফগানদের বিপক্ষে সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে ৩ উইকেট নিয়ে আশা জাগালেও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে নিজেই প্রমাণ করেছেন বড় ম্যাচের প্লেয়ার তিনি নন। মাথা খাটিয়ে বোলিং করে সফল কেবল সাকিব আল হাসান ও মাশরাফি বিন মর্তুজা। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের বল হচ্ছে না। পার্টটাইম বোলার হিসেবে কিছুটা ভালো করছেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত।

 

এমন অবস্থায় ম্যাচ জিততে হলে ব্যাটসম্যানদের রাখতে হবে বড় অবদান। বিসিবি সভাপতিও মনে করিয়ে দিলেন একই কথা।

 

পাপন বলেন, ‘ইংল্যান্ডের সাথে খেলতে গেলে ৩০০ রান চেজ করতেই হবে। ইংল্যান্ডের সাথে ৩০০ করতেই হবে আর আমাদের সেই সামর্থ্য আছে।’

 

দ্বিতীয় ওয়ানডের আগে আলোচনায়-মোশাররফ হোসেন রুবেল দলে থাকবেন নাকি তার জায়গায় নাসির হোসেন দলে ফিরবেন? প্রথম ম্যাচে মোশাররফের নির্বিষ বোলিং (৩ ওভারে ২৩ রান দেয়া) ও ফিল্ডিংয়ে দুর্বলতা চোখে লেগেছে সবার। গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচটিতে বেন স্টোকসের সহজ ক্যাচ ছাড়েন মোশাররফ। ব্যাট হাতে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে নেমে ৭ রানে অপরাজিত থাকলেও খেলেন ১৮টি বল।

 

কিন্ত বোর্ড সভাপতির কথায় মোশাররফের জায়গায় নাসিরের অন্তর্ভুক্তির ব্যাপারে শোনা গেল না কোনো আশার বাণী। ‘নাসিরকে আনতে হলে সরাতে হবে মোশাররফ হোসেন রুবেলকে। একজন বাঁহাতি স্পিনার দিয়ে ইংল্যান্ড দলের সাথে খেলা.. ওদের এই শক্তিশালী ব্যাটিং লাইন আপ যেখানে নাকি চারজন ডানহাতি হিটার ব্যাটসম্যান আছে। তো এটা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যায়। মোশাররফ রুবেল কিন্ত এখানে শুধু বোলার হিসেবে আছেন। ওর কাছ থেকে কিন্তু আমরা অন্য কিছু আশা করিনি। গতকাল মোশাররফ কিন্তু ডানহাতি বোলারের বিপক্ষে একটাও বল করেনি। যেটা দলের জন্য ভালো হয় সেটাই করা হবে।’

সূত্র: বাংলা নিউজ